নরসিংদীতে হাঁড়িধোয়া নদীর অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের নির্দেশ
মাহবুব খান,নরসিংদী: নরসিংদী শহর ঘেঁষে বয়ে চলা হাঁড়িধোয়া নদীর জায়গা দখল করে ছয় ব্যক্তির গড়ে তোলা স্থাপনা, অবকাঠামো উচ্ছেদ করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
একই সঙ্গে নদী দূষণকারী পাঁচ শিল্পপ্রতিষ্ঠানের দূষণ বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতেও নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। নরসিংদীর জেলা প্রশাসকসহ (ডিসি) সংশ্লিষ্ট বিবাদীদের আগামী ৩০ দিনের মধ্যে এই নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে।
হাঁড়িধোয়া নদীর দখল-দূষণ সংক্রান্ত বিষয়ে জেলা প্রশাসকের দেওয়া প্রতিবেদন উপস্থাপন করার পর হাইকোর্টের বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক-আল জলিলের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ রোববার (৫ নভেম্বর) এই আদেশ দেন।
প্রতিবেদনটি আদালতে উপস্থাপন করে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কাজী মাঈনুল হাসান। আর রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।
পরে রিটকারী পক্ষের আইনজীবী সাংবাদিকদের বলেন, ৩০ দিনের মধ্যে অবৈধ দখল উচ্ছেদ ও দূষণ বন্ধ করতে নরসিংদীর জেলা প্রশাসকসহ বিবাদীদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আর দখল ও দূষণকারীদের বিরুদ্ধে পরিবেশ সংরক্ষণ আইন অনুসারে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। আগামী ৬ ডিসেম্বর পরবর্তী আদেশের তারিখ রেখে এ সময়ের মধ্যে বিবাদীদের প্রতিবেদন দিতে বলেছেন আদালত।
হাঁড়িধোয়া নদীর দখল-দূষণ নিয়ে বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত খবর-প্রতিবেদন যুক্ত করে দখল-দূষণ বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে জনস্বার্থে রিট আবেদন করা হয়।
মানবাধিকার ও পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) পক্ষে রিট আবেদনটি করেন আইনজীবী মো. সারওয়ার আহাদ। প্রাথমিক শুনানির পর গত ১৬ মে রুলসহ আদেশ দেন হাইকোর্ট।
সিএস/আরএস রেকর্ড অনুসারে নরসিংদী সদর উপজেলার চিনিশপুর ইউনিয়নের অংশে হাঁড়িধোয়া নদীর সীমানা নির্ধারণের পাশাপাশি নদী দূষণ-দখলকারীদের তালিকা তৈরি করতে জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দেওয়া হয়।
দুই মাসের মধ্যে তালিকা তৈরি করে তা আদালতে দাখিল করতে বলেন আদালত। অবৈধ দখল উচ্ছেদ ও দূষণ বন্ধে বিবাদীদের নিষ্ক্রীয়তা কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, জানতে চাওয়া হয় রুলে।
সেই সঙ্গে সিএস/আরএস রেকর্ড অনুসারে নদীর সীমানা নির্ধারণ করতে এবং নদীর জায়গা থেকে অবৈধ দখল, স্থাপনা বা অবকাঠামো উচ্ছেদ করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, রুলে তাও জানতে চাওয়া হয়।
এ আদেশের পর নদীর সীমানা নির্ধারণ ও দখল-দূষণকারীদের তালিকা করতে নরসিংদীর জেলা প্রশাসক একটি কমিটি গঠন করে দেন। ওই কমিটি নদীর সীমানা নির্ধারণ করার পাশাপাশি দখল ও দূষণকারী ব্যক্তি প্রতিষ্ঠানের তালিকা তৈরি করে।
প্রতিবেদনে নরসিংদী সদর উপজেলার চিনিশপুর ইউনিয়নের মুনসেফচর ও ঘোড়াদিয়া মৌজায় নদীর জায়গা দখলকারী ছয় ব্যক্তি ও দূষণকারী পাঁচ শিল্পপ্রতিষ্ঠানের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এ প্রতিবেদন উপস্থাপনের পর আদেশ দেন উচ্চ আদালত।