রাজশাহীতে আন্তর্জাতিক গুম প্রতিরোধ দিবসে মানববন্ধন-র্যালি
রাজশাহী ব্যুরো ঃ আন্তর্জাতিক গুম প্রতিরোধ দিবস উপলক্ষে রাজশাহীতে আয়োজিত মানববন্ধন কর্মসূচিতে বক্তারা বলেছেন, কথিত আয়নাঘর বা বন্দিশালার সঙ্গে জড়িতদের এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীদের মানবতাবিরোধী অপরাধ আইনে বিচার করতে হবে। মানবাধিকার লংঘনকারীদের কোন প্রকার দায় মুক্তি দেয়া যাবে না। তারা গুমের শিকার ব্যক্তিদের তাদের পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানান। শুক্রবার (৩০ আগস্ট) সকাল ১১ তার সময় রাজশাহী নগরীর সাহেববাজার জিরো পয়েণ্টে মানবাধিকার সংগঠন অধিকার ও মায়ের ডাকের যৌথ উদ্যোগে অনুষ্ঠিত এ মানববন্ধনে বক্তারা এসব কথা বলেন।
এতে বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট কথাশিল্পী, লেখক, সাংবাদিক ও রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি ডাঃ নাজিব ওয়াদুদ, রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ও মহানগর প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মুহা: আব্দুল আউয়াল, স্টুডেন্ট রাইটস অ্যাসেসিয়েশনের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক ও বৈষ্যম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সাংবদিক রাশেদ রাজন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টুডেন্ট রাইটস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও বৈষ্যম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক মেহেদী সজিব, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টুডেন্ট রাইটস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ও বৈষ্যম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ফাহিম রেজা, রাজশাহী জজ কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোটেক নিজাম উদ্দিন, মানবাধিকার কর্মী হাবিবুল্লাহ মোহাম্মদ কাউছারী, গুমের শিকার হয়ে ফিরে আসা শাইরুল ইসলাম, গুমের শিকার মুরসালিনের ছেলে সাগর, গুমের শিকার আব্দুল কুদ্দসের বোন পারভিন নেছা, সাংবাদিক আবু হেনা মোস্তফা জামান, মানবাধিকার কর্মী আনোয়ার হোসেন ফিরোজ। অধিকারের রাজশাহীর সমন্বয়ক সাংবাদিক মঈন উদ্দিনের পরিচালনায় মানববন্ধনে অধিকারের বিবৃতি পাঠ করেন গুমের শিকার আব্দুল কুদ্দুসের ছোট মেয়ে জেমি। মানববন্ধন শেষে নগরীর সাহেববাজারে র্যালি বের করা হয়। রাজশাহী মহানগর প্রেসক্লাবের সাংগঠনিক সম্পাদক ইফতেখার আলম বিশাল , দফতর ও প্রশিক্ষণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান লিটনসহ পেশাজীবী নেতৃবৃন্দ ও মানবাধিকার কর্মীরা এতে অংশ নেন।
মানববন্ধনে অধিকার ও মায়ের ডাকের ঘোষণাপত্রে জানানো হয়, ২০০৬ সালের ২০ ডিসেম্বর গুম হওয়া থেকে সমস্ত ব্যক্তির সুরক্ষার জন্য আন্তর্জাতিক সনদ জাতিসঙ্ঘের সাধারণ পরিষদে গৃহীত হয়। গুম মৌলিক মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন কর্তৃত্ববাদী সরকার গুম করাকে রাষ্ট্রীয় নিপীড়নের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছে। দীর্ঘ সময় ধরে তাদের ক্ষমতাকে কুক্ষিগত ও দীর্ঘায়িত করার জন্য বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী ও ভিন্নমতালম্বী ব্যক্তিদের গুম করেছে। ২০০৯ সাল থেকে দেশে গুম হওয়ার ঘটনা ব্যাপকভাবে শুরু হয়।
অধিকারের তথ্য অনুযায়ী- ২০০৯ থেকে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত ৭০৯ জন ব্যক্তি গুমের শিকার হয়েছেন। এর মধ্যে কর্তৃত্ববাদী সরকার কর্তৃক আয়না ঘরে গুম হয়ে থাকা ব্যারিস্টার আরমান, সাবেক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল আজমী এবং ৫ বছর গুমের শিকার ইউপিডিএফ নেতা মাইকেল চাকমা মুক্তি পেয়েছেন। এ কারণে অন্যান্য গুম হওয়া স্বজনদের মধ্যে আশা জাগিয়েছে যে, তাদের স্বজনরাও ফিরে আসবে।