সবজি বাগানে ছাগল যাওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে বাধা দেওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে রাগে-ক্ষোভে নিমিষেই প্রায় দেড় শতাধিক পেঁপে গাছ কেটে ফেলেছেন ছাগল মালিক শাহিদা বেগম। শুধু তাই নয়, পেঁপে বাগানে সহযোগী ফসল ৬০-৭০টি কলাগাছ উঠিয়ে ফেলছেন ওই নারী। এতে প্রায় লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন কৃষি উদ্যোক্তা সাগর আকন্দ (২৭) নামে এক যুবক।
শনিবার সকালে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলা পৌর শহরের পশ্চিম ভূঞাপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। সাগর লাল মিয়া আকন্দের ছেলে এবং অভিযুক্ত প্রতিবেশী ওই নারী শাহিদা বেগম ইটল তরফদারের স্ত্রী। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী সাগর আকন্দের মৌখিক অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে কেটে ফেলা পেঁপে বাগান সরেজমিন পরিদর্শন করেছেন ভূঞাপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. লিটন মিয়া।
এ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষি উদ্যোক্তা সাগর আকন্দ বলেন, প্রতিবেশী ওই নারীর ছাগল প্রায়ই সবজি বাগানে প্রবেশ করত এবং বিভিন্ন গাছের চারা খেয়ে ফেলত। এ নিয়ে তাকে একাধিকবার জানানো হয় কিন্তু সে ক্ষিপ্ত হয়ে সবজি বাগানের পাশেই ছাগল চড়াতো। শনিবার সকালে ছাগল বাগানে প্রবেশ করে এবং বেশ কয়েকটি পেঁপে, কলাগাছ ও বেগুন গাছ নষ্ট করে ফেলে।
তিনি বলেন, ছাগল বাগান থেকে ধরে এনে খোয়াড়ে দেওয়ার কথা বলামাত্রই ওই নারী ক্ষিপ্ত হয়ে আমার চোখের সামনেই পেঁপে ও কলাগাছগুলো কেটে ফেলে এবং বাধা দিতে গেলে আমাকে দা দিয়ে কোপাতে আসে, আমি ভয়ে সরে যাই। পরে আমার ডাক-চিৎকারে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে আসলে তিনি পালিয়ে যান।
সাগরের বাবা লাল মিয়া আকন্দ জানান, আমার ছেলে নারায়ণগঞ্জের একটি জাহাজ কোম্পানিতে চাকরি করত। করোনাকালে তার চাকরি চলে যায়। পরে বাড়িতে এসে দীর্ঘদিন বেকার ছিল। পরবর্তীতে স্থানীয় মহিলা জনসংস্থা সবজি ব্যাংক থেকে ৬০ হাজার টাকা ওর মা সাজেদা খাতুনের নামে ঋণ নিয়ে ২৫ শতাংশ জমি লিজ নিয়ে সবজি বাগান করে। গাছগুলো কেটে ফেলায় ছেলেটি মানসিক ভেঙে পড়েছে। আমি যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে সুষ্ঠু বিচার চাই।
স্থানীয়রা জানান, কৃষি উদ্যোক্তা ছেলেটির বাবা অটোভ্যানচালক। দরিদ্র পরিবার। করোনাকালে চাকরি হারিয়ে বাড়িতে বেকার হয়ে বসেছিল। ইউটিউবে পেঁপে চাষে অনেকের সাফল্য দেখে অন্যের ২৫ শতাংশ জমি প্রতি বছর ৫ হাজার টাকায় লিজ নিয়ে শাহী জাতের পেঁপে ও স্থানীয় জাতের কলাসহ বিভিন্ন সবজি চাষাবাদ শুরু করেন।
এ ব্যাপারে ভূঞাপুর থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ফরিদুল ইসলাম বলেন, মৌখিকভাবে জানানোর পর ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। বিষয়টির তদন্ত প্রক্রিয়াধীন।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ ড. হুমায়ূন কবির জানান, বিষয়টি শুনেছি। সরেজমিন গিয়ে প্রশাসনের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।