রাজশাহী মহানগরীর কাচা বাজারগুলোর মনিটরিং ব্যাবস্থা না থাকায় কাচা বাজারে সবজির দাম বৃদ্ধি
রাজশাহী ব্যুরো অফিস ঃরাজশাহী মহানগরীর কাচা বাজারের মধ্যে বৃহত্তম বাজার সাহেব বাজার কাচা বাজারে সবজির দাম ঊর্ধ্বমুখী চলছে । সবজির প্রয়োজনীয় চাহিদা অনুপাতে অপ্রতুল। কিন্তু বাজারের বর্তমান চিত্র ভিন্ন। এই সময়ে সবজির যে দাম থাকার কথা,তার চেয়ে তুলনামূলক বেশি বলে অভিযোগ ক্রেতাদের। এছাড়া নিয়মিত বাজার মনিটরিং না থাকা এবং প্রতিটি দোকানে দাম নির্ধারণ করে তালিকা না দেওয়ায় ইচ্ছামত দাম হাকিয়ে নিচ্ছে এখানকার খুচরা দোকানীরা। ফলে প্রায় সব সবজিই মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে।
তবে এবার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে আদা. পেঁয়াজ ও রসুনও। তাই স্বস্তিতে নেই নিম্ন মধ্যবিত্ত ও দরিদ্র শ্রেণীর মানুষজন। এদিকে সাহেব বাজার কাচা বাজার, নওদাপাড়া বাজার, শালবাগান বাজার, বউ বাজার , সাগরপারা বাজার, হরোগ্রম বাজারে তাহেরপুর বাগমারা,দুর্গাপুর ও পুঠিয়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে সবজির আমদানি হয়। তবে সরবরাহ বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে পাল্লা দিয়ে দাম বাড়ছে সবজির। চলতি এক সপ্তাহ না যেতে সবজির দাম কেজিতে বেড়ে চলেছে। এবং এ রকম চলতে থাকলে কাঁচা বাজারের দাম বাড়তেই থাকবে বলে অভিযোগ করেছেন ক্রেতারা। সাহেব বাজার কাচা বাজার ও শালবাগান বাজার ঘুরে দেখা যায়, এক সপ্তাহের ব্যবধানে সবজিসহ বাকি পণ্যের দাম ঊর্ধ্বমুখী। কাচা মরিচ ১০০ টাকার জায়গায় বর্তমানে ১৬০/১৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। একাধিক ক্রেতারা জানান সব ধরনের তরকারী রান্নাতে মরিচ, পিয়াজের প্রয়োজন হয় , সে কারণে মরিচ, পিয়াজ ছাড়া তরকারির স্বাদ হয়না। এখন বাধ্য হয়ে তরকারীতে মরিচ দেয়া হচ্ছে কিন্তু পরিমাণে অনেক কম। সেই সাথে সবজি বাজারে উঠলেও দাম নাগালের বাহিরে। নিম্ম আয়ের,লোকজন জানান, তরি – তরকারী কিনতে এসে বেকায়দায় পড়তে হচ্ছে। এত দাম হলে কিভাবে চলা যায়। বেশি দাম হবার কারনে সব কিছু অর্ধেক করে কেনা হচ্ছে। বাজারে দেশী পিয়াজ প্রতি কেজি ৭০ থেকে ৮০ টাকা,কচু ৮০ টাকা , করলা ৮০ টাকা, সশা ৭০টাকা,আদা ২৪০ টাকা,কাচা মরিচ ১৬০’ থেকে ১৮০ টাকা , বেগুন ৭০ টাকা থেকে ৮০ টাকা কেজি দরে বাজারে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়াও পুরাতন আলু কেজিতে ৫০ টাকা থেকে ৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
এসব নিত্যপণ্য সবজির বাজার কেউ নিয়ন্ত্রন করেন না। কিন্তু এরা ইচ্ছেমত দাম নির্ধারণ করেন। বাজারে আসা একাধিক ক্রেতা জানান সরকারী মুল্যের চেয়ে খাজনা আদায় হয় কয়েকগুন বেশি। আর এসবের জের টেনে সাধারন নিম্ম আয়ের মানুষের পকেট কাটা হচ্ছে বেপরোয়া ভাবে। মাঝে মধ্যে ভোক্তা অধিকার ও জেলা প্রশাসন থেকে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে বাজার মনিটরিং করা হলেও তারা চলে যাওয়ার পর আগের মতোই ব্যাবসা চালু হয় । তাছাড়া বাজারের পাইকারি ব্যাবসায়ীরা সকাল ১০ তার মধ্যে তাদের মালামাল খুচরা ব্যাবসায়ীদের কাছে বিক্রি শেষ করে দেই । আর মোবাইল করি সাধারনত সকাল ১০ টার পরেই হয় । যার জন্য বাজার নিয়ন্ত্রণ সঠিকভাবে হয় না বলে ক্রেতা সাধারন জানান ।
ক্রেতারা বলছে খুচরা ব্যবসায়ীরা সবজি বিক্রিতে অতি মুনাফা করছেন। মোকামে দাম কম হলেও তারা দাম বেশি নিচ্ছেন। প্রশাসন বাজার পর্যবেক্ষণ করে অতি মুনাফা – খোরদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিলে সবজির দাম কিছুটা আয়ত্বের মধ্যে আসবে বলে মনে করছেন সচেতন মহল। তবে নিয়মিত বাজার মনিটরিং না থাকা এবং প্রতিটি দোকানে দাম নির্ধারণ করে তালিকা ঝুলানো না থাকার কারণে এই অনিয়ম হচ্ছে বলে দাবি একাধিক ক্রেতার।
উল্লেখ্য ,১৯৬৪ সালের অ্যাগ্রিকালচারাল প্রডিউস মার্কেটস্ রেগুলেশন অ্যাক্ট ও ১৯৮৫ সালের সংশোধিত বাজার নিয়ন্ত্রণ আইনের ১৬ (১) ও ১৬ (২) ধারামতে কৃষিজাত ও ভোগ্যপণ্যের ক্রয়মূল্য, বিক্রয়মূল্য ও মজুদ পরিস্থিতির তদারকির ক্ষমতা রয়েছে কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের বাজার কর্মকর্তাদের। কিন্তু বাস্তবে কোথাও আইনটির প্রয়োগ হতে দেখা যায় না। তাছাড়া ১৯৫৩ সালের মজুদবিরোধী আইন ও অত্যাবশ্যকীয় পণ্য নিয়ন্ত্রণ আইনেরও প্রয়োগ নেই। সেজন্যে ক্রমাগতভাবে নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়ছে বাজার গুলো।