মোক্তার হোসেন কয়রা খুলনা প্রতিনিধিঃ
সুন্দরবন সংলগ্ন উপকুলীয় জনপদের দুর্গম, অবহেলিত, দরিদ্র ও ঘনবসতিপূর্ণ একটি এলাকার নাম মহারাজপুর। কয়রা সদর থেকে ২ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই গ্রামটি। কৃষি,পশু ও মৎস্য চাষে গ্রামীন অর্থনীতিতে অনেক অবদান রাখে গ্রামটি। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দুরত্ব অনেক বেশি থাকায় এলাকার কোমলমতি ছাত্র -ছাত্রীদের শিক্ষার প্রতি অনগ্রসর ।এই অবস্থায় এখানে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রয়োজন মনে করিয়া দাতা সদস্য মোঃ জামাল উদ্দিন তার নিজস্ব পৈতৃক জমিতে এলাকার সুধীজনের উদ্যোগে প্রাথমিক ভাবে নুরানী শিক্ষা দিয়ে শুরু করেন একটি দ্বীনি মাদ্রাসার শিক্ষাক্রম।শিক্ষার মান উন্নয়নে গতিশীল করতে এলাকাবাসীর সদ ইচ্ছায় ইবতেদায়ী শিক্ষার প্রতি আগ্রহশীল হওয়ায়, প্রতিষ্ঠানটি মহারাজপুর গাজী ইবতেদায়ী মাদ্রাসায় উত্তীর্ণ করা হয়। বর্তমান তথ্যসূত্র বলছে, মাদ্রাসাটি বাংলাদেশ মাদ্রাসা বোর্ডের অনুমোদন পেলে এবং সরকারি পর্যায়ে সকল শিক্ষার্থীরা উপবৃত্তি ও শিক্ষক কর্মচারী ভাতা ভুক্তের আওতায় অন্তর্ভূক্ত হতে পারলে অজ পাড়া গাঁয়ের এই প্রতিষ্ঠানটি দ্বীনি শিক্ষার ক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রাখতে পারে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন,অত্র এলাকার সুধী মহল।
উল্লেখ্য ২০২৩ সালে কয়রা উপজেলার সর্ব দক্ষিণে মহারাজপুর ইউনিয়নের, মহারাজপুর গ্রামের জমিদাতা জামাল উদ্দিনের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় এই ইবতেদায়ী মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠিত হয়। বর্তমানে এ মাদ্রাসায় প্রায় ৬০ জন শিক্ষার্থী ও স্বেচ্ছা শ্রম দিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করছেন ৭ জন অভিজ্ঞ শিক্ষকমন্ডলী। বর্তমান সরকারের আমলে শিক্ষা খাতে ব্যাপক উন্নয়নের ছোঁয়া থাকায় তদ্রূপ ভাবে অবহেলিত গ্রামের এই ইবতেদায়ী মাদ্রাসাটি সমসাময়িকভাবে সকল সুযোগ সুবিধা পাওয়ার জন্য মাননীয় শিক্ষা উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন এলাকাবাসী ও সুধীমহল ।
সরেজমিনে দেখা যায় দ্বীনি শিক্ষার প্রসার লাভ করার লক্ষ্যে অক্লান্ত পরিশ্রম করে স্বেচ্ছা শ্রম দিয়ে শিক্ষার্থীদের ক্লাস নিচ্ছেন মাদ্রাসার শিক্ষকরা। তবে তাদের আশার সঞ্চার সরকারি স্বীকৃতি, অনুমোদন নিয়ে। ইবতেদায়ী মাদ্রাসাটি অনুমোদন পেলে অবহেলিত এই এলাকার কোমলমতি শিক্ষার্থীদের শিক্ষার আলো ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে সুশিক্ষিত, ও সুনাগরিক হিসেবে গড়ে উঠবে বলে এমনটি আশা করছেন এলাকার সুধীমহল।
অত্র মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক বলেন, বর্তমান সরকার ইবতেদায়ী মাদ্রাসার গুরুত্বের কথা ভেবে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সম মর্যাদায় উন্নীত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। আমরা দীর্ঘ সময় অত্র মাদ্রাসায় বিনা বেতনে কাজ করে যাচ্ছি। মাদ্রাসাটির অনুমোদন ,বেতন ভাতা ও শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি চালু করতে যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানান তিনি।বিশিষ্ট ব্যক্তি জমিদাতা জামাল উদ্দিন বলেন, স্বেচ্ছা শ্রম দিয়ে যে অভিজ্ঞ শিক্ষকমন্ডলী পাঠদান কার্যক্রম পরিচালনা করছেন তাদের মধ্যে প্রধান শিক্ষক শামীম হোসেন, সহকারী মৌলভী মরিয়ম সুলতানা মিম, জুনিয়র শিক্ষক সরোয়ার উদ্দিন হালিমা খাতুন, ইবি ক্বারী নাজমুস সাকিব, নুরানী ক্বারী লতিফুর রহমান ও অফিস সহায়ক আমির হোসেন।
ইউপি সদস্য মাসুম বিল্লাহ বলেন, ইবতেদায়ী মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকে অবহেলিত। শিক্ষকেরা স্বেচ্ছা শ্রম দিয়ে গোলপাতা ছাউনির মাটির ভবনে খোলা আকাশের নিচে পাঠদান কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন। সরকার মহোদয়ের কাছে, মাদ্রাসাটির অনুমোদন, বেতন ভাতা ও শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেন।