নয়া কণ্ঠ অনলাইন ডেস্ক
আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপজয়ী গোলরক্ষক এমি মার্টিনেজ বাংলাদেশে আসার ইচ্ছা প্রকাশ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বলেছিলেন, সমর্থককদের সঙ্গে দেখা করতে মুখিয়ে আছেন তিনি। অতঃপর সোমবার (৩ জুলাই) ঢাকায় পা রাখেন কাতার বিশ্বকাপের সেরা গোলরক্ষক। সমর্থকদের সঙ্গে দেখা করতে আসলেন আর্জেন্টাইন এই তারকা।
ভোরে টার্কিশ এয়ারলাইন্সের বিমান থেকে শাহজালাল বিমানবন্দরে পা রাখেন এমি মার্টিনেজ। সেই কাকডাকা ভোরেই বিমানবন্দরে সংবাদকর্মী থেকে শুরু করে সমর্থকরা ভিড় করতে থাকেন। আকাশি-সাদা জার্সির বিশ্বকাপ জয়ী আর্জেন্টাইন বীরকে এক পলক দেখার জন্য। কিন্তু বিমানবন্দরে অপেক্ষা না করে সোজা চলে যান গুলশানের পাঁচ তারকা হোটেলে। হোটেল থেকে ফের চলে যান উত্তর বাড্ডার নেক্সট ভেঞ্চারের অফিসে। গোটা রাস্তায় তাকে বহন করা গাড়িকে পাহারা দিয়েছে সশস্ত্র নিরাপত্তাবাহিনী। তাকে দেখতে রাস্তায় নেমে আসা মানুষ ফিরেছে কালো কাচে ঢাকা গাড়ি দেখার সুখ নিয়ে
১১ ঘণ্টার সফরে এসে মার্টিনেজ পৃষ্ঠপোষক প্রতিষ্ঠানের ইভেন্টে অংশ নেন। সেখানে তাকে বরণ করে নিতে প্রতিষ্ঠানটির কর্তাব্যক্তিরা তো ছিলেনই, ছিলেন সংসদ সদস্য ও জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা। আরও ছিলেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। আর্জেন্টিনা ফুটবল দলের সমর্থক মাশরাফীর সঙ্গে ছিলেন তার সন্তানরাও। মার্টিনেজকে কাছে থেকে দেখার গুটিকতক সৌভাগ্যবানের মধ্যে তারাও অন্যতম।
এরপর দুপুরে মার্টিনেজ যান গণভবনে । সেখানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন তিনি। সেই সঙ্গে তাকে উপহার দেন অটোগ্রাফসহ আর্জেন্টিনার জার্সি।
তবে গোটা সফরে কোথাও তারা নেই যাদের সঙ্গে দেখা করতে মুখিয়ে ছিলেন আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপজয়ী গোলরক্ষক। যে সমর্থকরা বিশ্বকাপের সময় গলা ফাটিয়ে আর্জেন্টিনাকে সমর্থন দিয়ে রীতিমতো তোলপাড় তুলে দিয়েছিলেন, তাদের সৌভাগ্য হয়নি প্রিয় তারকাকে দেখার। দেশের ক্রীড়া সাংবাদিকদেরও সুযোগ হয়নি তার সাক্ষাৎকার নেওয়ার। মার্টিনেজের ধারেকাছে ঘেঁষার-ই যে সুযোগ ছিল না তাদের জন্য!
কাতার বিশ্বকাপে আলোড়ন তুলেছিল বাংলাদেশি আর্জেন্টাইন সমর্থকরা। মাঠে গিয়ে খেলা দেখার সুযোগ না পেলেও বাংলাদেশের ভবনে ভবনে উড়েছিল আর্জেন্টিনার পতাকা। অলিতে-গলিতে আর্জেন্টিনার খেলা দেখে গলা ফাটিয়েছেন সমর্থকরা। লিওনেল মেসি ও আর্জেন্টিনার জন্য বাংলাদেশি সমর্থকদের ভালোবাসা-উন্মাদনা এমন পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছিল যে, সে খবর পৌঁছে যায় সুদূর আর্জেন্টিনাতেও। দেশটির সংবাদমাধ্যমে ফলাও করে সে খবর প্রচার করা হয়। এমনকি খেলার সূত্র ধরে বাংলাদেশ ও আর্জেন্টিনার মধ্যে তৈরি হয় দারুণ বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক। বিশ্বকাপ জিতে আর্জেন্টিনার কোচ লিওনেল স্ক্যালোনি পর্যন্ত বাংলাদেশী আর্জেন্টিনা সমর্থকদের ধন্যবাদ জানিয়েছিলেন। বিশ্বকাপে দল সমর্থনের সূত্র ধরে কয়েক যুগ আগে বন্ধ হয়ে যাওয়া দূতাবাস নতুন করে চালু করার মতো অবিশ্বাস্য ঘটনাও ঘটে সে সময়! অথচ সেই সমর্থকরাই পেলেন না প্রিয় তারকার সাক্ষাৎ।
শুধু কী সমর্থক, বাংলাদেশের ফুটবল অঙ্গনের কাউকেই দেখা গেল না মার্টিনেজের আশেপাশে। জাতীয় দল সাফ খেলতে ভারতে থাকায় স্বাভাবিকভাবেই তারা ছিলেন না। কিন্তু ফেডারেশন কিংবা সাবেক ফুটবলার, উঠতি ফুটবলাররা, যারা বিশ্বকাপজয়ী তারকাকে দেখে অনুপ্রাণিত হতে পারতেন, তাদের জন্য সুযোগই থাকল না এক পলক দেখার।
বাংলাদেশের আর্জেন্টিনা সমর্থকদের আফসোস তাতে আরও বেড়ে যাওয়াই স্বাভাবিক!