মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পোশাক নিয়ে ফের অস্বস্থি, নিজ সুরক্ষার জন্য ব্যবস্থা নাই ।
__________রাজশাহী ব্যুরো
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকাণ্ড নিয়ে মাঝে মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও বিভিন্ন অনলাইন চ্যানেলে খবর প্রকাশিত হয়ে থাকে । প্রতিনিয়ত দেখা যায় , মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের বিভাগীয় কার্যালয়ের উপ – পরিচালক জিল্লুর রহমানের নেতৃত্বে পাবনা, সিরাজগঞ্জ জেলার বিভিন্ন জায়গায় গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে রেইডিং টিমের মাধ্যমে রাত দিন অভিযান পরিচালনা করে অবৈধ মাদকদ্রব্য ( গাজা, হিরোইন, ট্যাপেন্টাডল ট্যাবলেট, ও বিভিন্ন নেশা জাতীয় দ্রব্য ) উদ্ধার করা হয় । কর্মকর্তা কর্মচারীদের আত্মরক্ষার জন্য কোনো অস্ত্রের ব্যবস্থা নেই, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ / বিভাগের পক্ষ থেকে সেলফ ডিফেন্সের জন্য অভিযান পরিচালনাকারীদের জন্য কোনো অস্ত্র এখন পর্যন্ত দেওয়া হয় নাই । এতে করে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জীবন হুমকির মুখে থাকে,থাকবে অভিযান স্থানে গিয়ে।
অস্ত্র সংরক্ষণের উপযুক্ত স্থান না থাকায় কর্তৃপক্ষ আত্ম রক্ষার সরঞ্জামদি প্রদান করছেনা বলে জানা যায় । তারপরেও কর্মকর্তাগণ বিষয়টি আমলে নিয়ে বাজেট গ্রহণ করলেও বাস্তবায়িত হয় নাই । অপারেশনের মুহূর্তে মাদক কারবারি দ্বারা খারাপ পরিস্থিতির শিকার হতে হয় বলে আমরা প্রায়শই শুনে থাকি । মাদক ব্যবসায়ীদের ধরতে নিজেদের সামান্যতম সুরক্ষা ব্যবস্থা না থাকাই মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা / কর্মচারীদের জীবন বাজি রেখে কাজ করতে হয় অথচ তাদের ঝুঁকি ভাতার কোন ব্যবস্থা নেই। এটা সত্যিই খুব দুঃখজনক। পোশাক তৈরির সিদ্ধান্ত গৃহীত হলেও পোশাকের রং নিয়ে ফের অস্বস্থিতে পরতে হয়েছে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরকে । বাংলাদেশ পুলিশের পোশাকের সাথে তাদের পোশাকের মিল থাকাই আপত্তি উঠে । পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বিষয়টি নিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ে অভিযোগ আনলে পুনরায় পোশাকের রং পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় বলে জানা যায় । তবে নির্বাচনের আগে বিষয়টি সমাধান হবে না বলে মনে করা হচ্ছে । পোশাক তৈরির আগে পোশাক বিধি না করে পোশাক প্রস্তুত করাতে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর অনেকটা অস্বস্থিতে পরেছে ।
মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা কর্মচারীরা এখন টার্কিশ ব্লু রঙের সেলুলার কাপড়ের বুক খোলা ফুল ও হাফহাতা শার্ট , ডিপ নেভি ব্লু রঙের প্যান্ট এবং অধিদপ্তরের লোগো সম্বলিত টুপি পরছেন । নারী কর্মকর্তা কর্মচারীরা পরছেন টার্কিশ ব্লু রঙের বুশ শার্ট ও ডিপ নেভি ব্লু রঙের প্যান্ট ।
জানা গেছে, সিপাহী থেকে মহাপরিচালক পর্যন্ত কর্মকর্তাদের বছরে দুই সেট হাফ হাতা ও দুই সেট ফুল হাতা শার্ট দেওয়া হয় । এছাড়া রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে অংশ গ্রহণের জন্য দেওয়া হয় আলাদা পোশাক ।
মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, ২০১৪ সাল থেকে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সিপাহী থেকে পরিদর্শক পদমর্যাদার কর্মকর্তা কর্মচারীরা খাকি রঙের পোশাক পরিধান করতেন । ওই ধরনের পোশাক নিয়ে অসন্তোষ থাকাই আপত্তি উত্থাপিত হয় , এবং সে কারণেই পোশাক পরিবর্তনের দাবী উঠে । ২০২১ সালের ২৩ সে মে এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে অধিদপ্তরের কর্মকর্তা কর্মচারীদের জন্য টার্কিশ ব্লু রঙের পোশাক নির্ধারণ করা হয় । নতুন পোশাক ব্যাবহার শুরু হয় ২০২২ সালের ১ লা সেপ্টেম্বর থেকে । মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কায্যক্রম আগের তুলনায় অনেকাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে । নতুন উদ্যমে কাজের ভিতরে আবার পরিবর্তন হচ্ছে পোশাক । পুলিশের আপত্তির কারণে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পোশাকের রং পরিবর্তন করা হচ্ছে । মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, পোশাক পরিবর্তনের আগে পোশাক বিধিমালা পরিবর্তন করতে হবে । মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের জন্য বর্তমান পোশাক ও সামগ্রী বিধিমালা ২০২১ এ কর্মকর্তা কর্মচারীদের পোশাকের রং নির্ধারণ করা আছে । কিন্তু পুলিশের আপত্তির কারণে বিধি তৈরির আগেই পোশাকের রং পরিবর্তন করা হচ্ছে । অভিজ্ঞ মহল মনে করেন ,মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা কর্মচারীদের কাজের মান বৃদ্ধি করার লক্ষে তাদের পোশাকের পাশাপাশি তাদের আত্মরক্ষার জন্য অস্ত্র সরবরাহ করা জরুরি প্রয়োজন ।