নিউজ ডেস্ক – ফের শুরু হচ্ছে প্রবাসীদের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) দেওয়ার কার্যক্রম। দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে ভূমিকা রাখা এসব রেমিট্যান্সযোদ্ধা বিভিন্নভাবে অবহেলিত। তাদের হয়রানি কমাতে বিদেশে গিয়েই জাতীয় পরিচয়পত্র দিচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। কিন্তু বিশ্বের বিভিন্ন দেশে থাকা প্রবাসীদের বিশাল একটি অংশের পাসপোর্টই নেই। রয়েছে আরও কিছু কাগজপত্রের জটিলতা। এসব কারণে অনেকের দেশের নাগরিকত্ব প্রমাণের এ দলিল পাওয়া হয়ে উঠছে কঠিন।
জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন (এনআইডি) অনুবিভাগ সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, প্রবাসীদের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে প্রবাসেই তাদের জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়ার উদ্যোগ নিলেও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমতি না পাওয়ায় কাজটি শুরু করতে বিলম্ব হয়েছে। এরই মধ্যে সংযুক্ত আরব আমিরাতে অবস্থানরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের এনআইডি দেওয়ার উদ্দেশ্যে নির্বাচন কমিশনের দুটি টেকনিক্যাল টিম সেখানে গেছে। ১২ সদস্যের এ টিমের নেতৃত্ব দিচ্ছেন আইডেন্টিফিকেশন সিস্টেম ফর এনহ্যান্সিং অ্যাকসেস টু সার্ভিসেস (আইডিইএ) দ্বিতীয় পর্যায় প্রকল্পের পরিচালক আইটি স্কোয়াড্রন লিডার সাদ ওয়ায়েজ তানভীর। প্রবাসীদের এনআইডি দেওয়ার কার্যক্রম বাস্তবায়নে উদ্যোগ নেওয়া হলেও রয়েছে অনেক শঙ্কা। এক্ষেত্রে প্রধান বাধা হবে পাসপোর্ট। অনেক প্রবাসীর মেয়াদ সম্বলিত পাসপোর্ট নেই। ফলে তাদের বাংলাদেশি হিসেবে চিহ্নিত করা কঠিন। একই সঙ্গে রোহিঙ্গাদের ভোটার তালিকায় ঢুকে যাওয়ার আশঙ্কা থাকবে।
মুঠোফোনে ইতালি থেকে একজন বলেন, ‘জীবিকার তাগিদে প্রবাসে এসেছি দুই বছর হলো। যে দালালের মাধ্যমে এখানে এসেছি পাসপোর্ট তিনি রেখে দিয়েছেন। পাসপোর্ট রাখলে দেশে পাঠিয়ে দিতে পারেন। সে কারণে পাসপোর্ট রেখে দিয়েছেন। দেশ থেকে আসার আগ পর্যন্ত এনআইডিও করতে পারিনি। এখন বাংলাদেশি হিসেবে পরিচয় দেওয়ার মতো কোনো প্রমাণ আমার কাছে নেই। এখানে বসবাসরত বাংলাদেশিদের ৮০ শতাংশেরই একই অবস্থা।’
প্রবাসীদের এনআইডি দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে শুনে কিছুটা খুশি হয়েছিলাম। কিন্তু সেখানে আবেদনের জন্য পাসপোর্টের যে বাধ্যবাধকতা দেওয়া হয়েছে তাতে আমার এনআইডি পাওয়ার সুযোগ থাকবে না। শুধু আমি কেন, এখানে অবস্থানরত পাসপোর্ট না থাকা কারোরই এনআইডি পাওয়ার সুযোগ থাকবে না। তার মানে আমাদের পরিচয়হীনই থাকতে হবে।’
ইসির তথ্য অনুযায়ী, ভোটারযোগ্য প্রবাসী বাংলাদেশিদের জাতীয় পরিচয় নিবন্ধনের জন্য অনলাইনে পূরণ করা অবেদনপত্র, মেয়াদ সম্বলিত বাংলাদেশি পাসপোর্ট, অনলাইন জন্মনিবন্ধন সনদ, সদ্য তোলা পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি নিবন্ধন কেন্দ্রে অবশ্যই জমা দিতে হবে। এছাড়া প্রযোজ্যক্ষেত্রে শিক্ষা সনদ, বাবা-মায়ের এনআইডি, নিকাহনামা, স্বামী/স্ত্রীর এনআইডি, ড্রাইভিং লাইসেন্স/টিন সার্টিফিকেট, নাগরিকত্ব সনদ, ইউটিলিটি বিলের কপি নিবন্ধনকেন্দ্রে জমা দিতে না পারলেও আবেদনকারীর পক্ষে বাংলাদেশে অবস্থানরত প্রতিনিধি তদন্তকারী কর্মকর্তা অথবা রেজিস্ট্রেশন অফিসারের কাছে জমা দিতে পারবেন।