রংপুরে চোরাই মালামাল উদ্ধারসহ চোর গ্ৰেফতার
রংপুর ব্যুরো অফিস:
গত জুলাই ২০২৩ ইং থেকে রংপুর মহানগর এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিশেষ অভিযানের মাধ্যমে এলাকার চিহ্নিত শীর্ষ সন্ত্রাসী, মাদক, জুয়া, সংঘবন্ধ চুরি ও কিশোর অপরাধসহ সকল ধরণের অপরাধীদের আইনের আওতায় আনার জন্য বিশেষ অভিযান শুরু করেছে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ।চলমান এই বিশেষ অভিযানের ধারাবাহিকতায় গত ১৪/০৯/২০২৩খ্রি. তারিখ সকাল অনুমান ০৬:০০ ঘটিকায় কোতয়ালী থানাধীন ব্র্যাক ইন্সটিটিউট অব স্কিল ডেভেপমেন্ট সেন্টার হতে (ক) নগদ অর্থ ৫,০০০/- টাকা, (খ) সিপিইউ (ডেল ব্র্যান্ড)-২১ টি, (গ) মনিটর (এইচপি ব্র্যান্ড)-২৪ টি, (ঘ) প্রিন্টার(ইফসন ব্রান্ড)-০১ টি, (ঙ) পেনড্রাইভ-০২ টি, (চ) নোকিয়া বাটন মোবাইল-০১ টি, (ছ) স্ক্যানার (ক্যানন ব্র্যান্ড)-০১ টি চুরি হলে সেন্টার লিড পদে কর্মরত জনাব মোঃ মেহেদী হাসান (৩০) বাদী হয়ে কোতয়ালী থানায় চুরি সংক্রান্তে একটি এজাহার দায়ের করলে কোতয়ালী থানায় নিয়মিত মামলা রুজু হয় (যাহার মামলা নং-২৮, জিআর নং-৪৫৬, তারিখ-১৫/০৯/২০২৩খ্রি., ধারা৪৫৭/৩৮০ পেনাল কোড)। পরবর্তীতে এসআই(নিরস্ত্র) গনেশ চন্দ্র রায় মামলাটির তদন্তকারী কর্মর্তা হিসাবে মামলার তদন্ত কার্যক্রম শুরু করেন।
গত ১২/১০/২০২৩ তারিখ তদন্তকারী কর্মকর্তা গোপন সংবাদের মাধ্যমে উক্ত চুরির মামলার চোরাইকৃত মালামাল সমূহ উদ্ধারের লক্ষ্যে অফিসার ইনচার্জ কোতোয়ালি থানার নেতৃত্বে এসআই মজনু মিয়া, এসআই গনেশ চন্দ্র রায়, এসআই মোবারকসহ ১০ সদস্যের একটি অভিযানদল বদরগঞ্জ থানাধীন বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে কিন্তু সেই এলাকায় মালামালের সন্ধান না পাওয়ায় পরবর্তীতে আরপিএমপি হারাগাছ থানাধীন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে মামলার সাথে জড়িত আসামী (পূর্বের গ্রেফতারকৃত শিশু আলিফ এর পিতা) মো: সেলিম আহম্মেদ(৪৫) কে গ্রেফতার সহ চুরি যাওয়া (ক) সিপিইউ(ডেল ব্রান্ড)-২১ টি, (খ) মনিটর(এইচপি ব্রান্ড)-২১ টি, (গ) প্রিন্টার-০৪ টি, (ঘ) স্ক্যানার (ক্যানন ব্র্যান্ড)-০১ টি উদ্ধার করে পুলিশ।
গ্ৰেফতারকৃত আইনের সহিত সংঘাতে জড়িত শিশু হাসিবুল হাসান আলিফ (১৫) পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, সে ব্র্যাক স্কিল ডেভেলপমেন্ট সেন্টার (চারতলা মোড় মৎস অফিসের পাশে অবস্থিত) এর সাবেক প্রশিক্ষনার্থী। ট্রেনিং সেন্টারে প্রশিক্ষণ শেষ হবার পরেও শিশু আলিফ প্রায় সেখানে যাতায়াত করত এবং তাদের স্টাফ এর সাথে সু-সম্পর্ক গড়ে তোলে। যাতায়াতের এক পর্যায়ে আলিফ সু-কৌশলে সবার অগোচরে ট্রেনিং সেন্টার এর কেচি গেট ও ভেতর গেটের তালার চাবি পরিবর্তন করে নেয় এবং ঘটনার দিন গত ১৩/০৯/২৩ তারিখ রাত ১২:০৫ ঘটিকায় শিশু আলিফ সবার অগোচরে তার কাছে থাকা চাবি দিয়ে কেচি গেটের তালা খুলে ভেতরে প্রবেশ করে।
প্রথমে দুই তলায় থাকা বিদ্যুৎ এর লাইন বন্ধ করে দেয়। বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হবার পর শিশু আলিফ তিন তলার অফিসে গিয়ে তার কাছে থাকা চাবি দিয়ে তালা খুলে ভেতরে প্রবেশ করে অফিসের সিসিটিভির লাইন বন্ধ করে দেয়।
তারপর নিচে নেমে পুনরায় বিদ্যুৎ এর লাইন চালু করে সে তিন তলার অফিসে প্রবেশ করে এবং ভেতর দিক দিয়ে দরজা বন্ধ করে দেয়। রাত প্রায় ১২:৩০ ঘটিকা হতে ভোর ৫ টা পর্যন্ত সে কম্পিউটার এর লাইন খুলে অফিসে থাকা কাপড়ের পর্দা দিয়ে সেগুলো প্যাকেট জাত করে। সেখান থেকে বের হয়ে এসে শাপলায় এসে একটি অজ্ঞাত অটো এবং একটি প্যাডেল চালিত রিক্সা ভাড়া করে নিয়ে অফিসের নিচে যায়। পরে সে প্যাকেট করা মালামাল গুলো নিয়ে নিচে নেমে কেচি গেটের তালা বন্ধ করে মালামাল সমূহ নিয়ে ভোরবেলায় বদরগঞ্জ এলাকায় চলে যায় এবং চোরাইকৃত মালামাল সমূহ তার ভাড়া করা এক রুমে রেখে রংপুরে চলে আসে। পরবর্তীতে সে সুকৌশলে চোরাইকৃত মালামাল সমূহ হারাগাছ থানাধীন কাচুগ্রাম কাজীটারী এলাকায় স্থানান্তর করে।
অভিযান দল চোরাই মালামাল সমূহ সেখান থেকে উদ্ধার করে। গ্রেফতারকৃত আসামী ও চোরাই মালামাল এর বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন আছে।