ইমদাদুল হক রানাঃ
রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দী উপজেলার ঐতিহ্যবাহী বহরপুর রেলওয়ে ফুটবল মাঠ সোমবার, ৯ জুন, পরিণত হয়েছিল এক অনন্য মিলনমেলায়। ঈদ-উত্তর প্রীতির আবহে আয়োজিত হলো এক স্মরণীয় প্রীতি ফুটবল ম্যাচ, যেখানে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন দুই ইউনিয়নের ৪০ ঊর্ধ্ব সাবেক ফুটবলাররা — বহরপুর ইউনিয়ন ফুটবল একাদশ বনাম ইসলামপুর ইউনিয়ন ফুটবল একাদশ।
আয়োজনে ছিলো বিএনবিএস ক্লাব, দীর্ঘদিন ধরেই এ অঞ্চলের ক্রীড়া ও সংস্কৃতি টিকিয়ে রাখতে নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। তাঁদের প্রচেষ্টায় ফুটবলপ্রেমীরা ফিরে পেলেন তাদের সেই পুরনো স্মৃতি জড়ানো দিনগুলোর রোমাঞ্চ।
এক সময়ের মাঠ কাঁপানো তারকা খেলোয়াড়, যারা জীবন – জীবিকার কারনে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত, আবারও বলের জাদুতে মাতিয়ে তুললেন দর্শক-প্লাবিত মাঠ। বয়স তাদের গায়ে বাড়লেও, পায়ের ছন্দে ছিল না কোনো ক্লান্তি। গতি, পাস, ড্রিবল, শট—সব কিছুতেই ফুটে উঠছিল অভিজ্ঞতার দীপ্তি।
মাঠজুড়ে ছিল উত্তেজনার ঢেউ, আর গ্যালারিতে ছিল বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস। “খেলাধুলা শুধু তারুণ্যের সম্পদ নয়, এটি চিরন্তন এক চেতনা”—এই বাণী যেন জাগ্রত হলো প্রতিটি দর্শকের মনে, বহরপুর রেলওয়ে ফুটবল মাঠ রূপ নিয়েছিল এক উৎসবমুখর মিলনস্থলে। এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, বিশিষ্ট সমাজসেবক, সাংবাদিকবৃন্দসহ হাজারো সাধারণ মানুষ উপভোগ করেন এই ব্যতিক্রমী আয়োজন। করতালির শব্দ আর গোল গোল ধ্বনিতে বারবার মুখরিত হচ্ছিল চারপাশ।
বিএনবিএস ক্লাব-এর অন্যতম লক্ষ্য ছিল—ফুটবলকে শুধু প্রতিযোগিতার ভেতর সীমাবদ্ধ না রেখে, এটিকে এক বন্ধনের মাধ্যম হিসেবে উপস্থাপন করা; যেখানে স্মৃতিচারণ, ভ্রাতৃত্ববোধ, এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য অনুপ্রেরণা তৈরি হবে। সাবেক তারকাদের মাঠে ফিরে আসা যেন তরুণ ফুটবলপ্রেমীদের সামনে এক জীবন্ত উদাহরণ হয়ে উঠল।
ম্যাচ শেষে ৩-০ গোলে বিজয়ী হয় বহরপুর ইউনিয়ন একাদশ। তবে হার-জিত এই দিনের মূল বিষয় নয়—মূল বিষয় ছিল ভালোবাসা, স্মৃতি আর ঐক্যের বিজয়।
এই অসাধারণ আয়োজন তৈরি করল এক নতুন অধ্যায়—যেখানে বয়স নয়, মনের বয়স হয়ে উঠল খেলার প্রধান চালিকা শক্তি।