ছাইদুল ইসলাম, ধামইরহাট প্রতিনিধি নওগাঁঃ
প্রতি বছরের ন্যায় পালিত হলো এবারের ঈদুল আযহা। মনের পশুত্বকে কুরবানির মাধ্যমে মানষ পুত পবিত্র হওয়ার চেষ্টা করেন।শ্রেণী ভেদে মানুষ পশু কুরবানী করেন। ঈদুল আযহার ঈদের সঙ্গে জড়িয়ে থাকে জবাইকৃত পশুর চামড়া ব্যবসা।
৭জুন শনিবার ঈদের দিন দুপুর থেকে ধামইরহাটের বিভিন্ন এলাকা থেকে চামড়া সংগ্রহ শুরু করেন মৌসুমি ব্যবসায়ীরা। প্রতিবারের মতো এবারও মৌসুমি ব্যবসায়ীরা রীতিমতো হাট বসায় ধামইরহাট উপজেলার আমাইতাড়া বাজারে । নওগাঁর বিভিন্ন ব্যবসায়ী চামড়া কিনতে আসে এই বাজারে। বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে কেনা বেচা।
চামড়া বিক্রেতারা বলছেন, এবার চাহিদা মতো চামড়ার দাম পাচ্ছি না। গরুর চামড়া মানভেদে ৩৫০-৬ ৫০ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে ছাগলের চামড়া কিনতে কোন লোকই পাচ্ছি না।ভাড়া দিয়ে চামড়া নিয়ে এসে বিপাকে পড়েন অনেকে।
শনিবার সন্ধ্যায় আমাইতাড়া বাজারে গিয়ে দেখা যায়, বিভিন্ন এলাকার হতে ভ্যানে চামড়া এনে জড়ো করছে অনেক মৌসুমি ব্যবসায়ীরা। চাহিদা মতো দাম না পাওয়া বিক্রি করছেন না তারা।
২০টি চামড়া বেচতে আসা জগন্নাথ বলেন, একেকটি বড় গরুর চামড়া কিনে এনেছি ৬৫০-৭০০ টাকা দিয়ে। আর তারা বলছে গড়ে ৭০০ টাকা। তাহলে কীভাবে বিক্রি করব। আমারতো সারদিনের পরিশ্রম, গাড়ি ভাড়াত থাকলো।
অপরদিকে মাহালীপাড়ার শ্রীমান রবীদাশ বলেন আমি ২০-৩০টি খাঁশি-বকরির চামড়া কিনেছি কিন্তু এখন বিক্রি হচ্ছে না।
এলাকার হাটনগর থেকে চামড়া ক্রয় করেন মৌসুমি ব্যবসায়ী নিতাই চন্দ্র । তিনি বলেন, বিকেল পর্যন্ত ৬০টির বেশি চামড়া কিনেছেন। প্রতিটি চামড়া গড়ে ৭০০ টাকা পড়েছে। ঐ চামড়া গতবার তো ৯০০–১০০০ টাকা দিয়েছিল। এবার চরম ক্ষতিতে পড়বো আমরা। আমি মৌসুমি লোন নিয়ে চামড়া গুলো কিনে ছিলাম।
কথা হয় ব্যবসায়ী চঞ্চল রবিদাস এর সঙ্গে। তিনি বলেন এবার আমরা এপর্যন্ত প্রায় ২০০০পিস গরুর চামড়া গড়ে ৬৫০-৭৫০ ক্রয় করেছি। এটা আমাদের পারিবারিক ব্যবসা।প্রায় ১৫০ বছর আমাদের এই চামড়া ব্যবসার বয়স,।আমার দাদার বাবা,তার পর দাদু এরপর আমার বাবা করতেন এই ব্যবসার এখন আমি হাল ধরেছি। আমার বাবা জগন্নাথ রবিদার, গ্রাম -ভাতগ্রাম।আমরা এই চামড়া প্রসেসিং করে সরাসরি ট্যানারীতে বিক্রি করি। এই ব্যবসায় প্রায় ৬০-৭০জন শ্রমিক লাগে। বর্তমানে কম দামে শ্রমিক পাওয়া যায় না। এছাড়া লবণ এর দাম অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পেয়েছে। যার ফলে পারিবারিক ব্যবসা টিকিয়ে রাখা মুশকিল হয়ে যাচ্ছে। সরকার যথাযথ পদক্ষেপ না নিলে আমরা লোকশানে পড়বো। সরকার যতাযত নজর না দিলে অনেকে এই পেশা বদলে অন্য পেশায় যেতে বাধ্য হবেন বলে তিনি বলেন।
তিনি আরো বলেন আড়তদার চামড়া সংগ্রহ করে লবণ মিশিয়ে তা সংরক্ষণ করেন। পরে লবণ মেশানো চামড়া যায় ঢাকার ট্যানারিতে। ট্যানারি ব্যবসায়ীরা এবার ঢাকায় লবণযুক্ত প্রতি বর্গফুট গরুর চামড়া ৬০ থেকে ৬৫ টাকায় কিনবেন, আর ঢাকার বাইরে লবণযুক্ত প্রতি বর্গফুট গরুর চামড়ার কিনবেন ৫৫ টাকা ৬০ টাকা। আমরা যারা ঢাকার বাহিরে ব্যবসা করছি তাদের চামড়া প্রায় ৮-১০দিন পরে ঢাকায় ঢুকতে দিবে যার ফলে আমদের ব্যয় বেশি হয়ে, ফলে লাভের চেয়ে লসের চিন্তাই বেশি হচ্ছে।