মানিকগঞ্জ হরিরামপুরে পদ্মা নদীর ইজাড়ার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরেও, থেমে নেই অবৈধ বালি উত্তোলন।
মানিকগঞ্জ প্রতিনিধিঃ
মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার পদ্মা নদীর লেছড়াগঞ্জ বালুমহালের নির্ধারিত সীমানার বাইরে গিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। ইজারার শর্ত অনুযায়ী নির্ধারিত সীমানার বাইরে বালু উত্তোলন নিষিদ্ধ।ইজারার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরেও থেমে নেই অবৈধ ভাবে বালি উত্তোলন।
অবৈধভাবে বালু উত্তোলন রোধে নৌপরিবহন উপদেষ্টা ও জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত আবেদনও দিয়েছেন এলাকাবাসী।এতে হরিরামপুর উপজেলার চরাঞ্চলের নদী তীরবর্তী বাড়ি-ঘর, ফসলি জমি বিলীন হয়ে যাচ্ছে। ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে,স্কুল,মসজিদ, মাদ্রাসা ও হাট-বাজারসহ বিভিন্ন স্থাপনা। অভিযোগ রয়েছে, বেশিরভাগ এলাকার স্থানীয় প্রভাবশালী মহলের যোগসাজশে এসব বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। ফলে স্থানীয় বাসিন্দারা ক্ষতিগ্রস্ত ও অতিষ্ট হলেও মুখ খোলার সাহস পাচ্ছেন না।
শর্ত লঙ্ঘন করে দুইদিকে যথাক্রমে ৪ কিলোমিটার ও ৮ কিলোমিটার দূর থেকে ১০-১১টি ড্রেজার দিয়ে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত অবৈধভাবে তোলা হচ্ছে বালু। অনিয়ন্ত্রিতভাবে বালু উত্তোলনের ফলে নদীতীরবর্তী ফসলি জমির ক্ষতিসহ কয়েকটি গ্রাম হুমকির মুখে পড়েছে। কয়েকমাস ধরে অবৈধ এই বালু উত্তোলন চললেও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি প্রশাসন।
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, হরিরামপুরে দ্বিতীয়বারের মতো বালুমহাল ইজারা দেয়া হয়েছে। গত ৩ এপ্রিল বাংলা ১৪৩১ সালের জন্য লেছড়াগঞ্জ বালুমহাল ইজারার বিজ্ঞপ্তি দেয় জেলা প্রশাসন। সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে ইজারা পেয়েছে এশিয়ান বিল্ডার্স, যার কর্ণধার জেলা আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক আবিদ হাসান বিপ্লব। লেছড়াগঞ্জ মৌজার দিয়ারা জরিপ ১ নম্বর খতিয়ানের ৩০০১ দাগের ৩২.৪৭ একর জমি ইজারাভূক্ত। গত ১ জুন বালুমহালের নির্ধারিত সীমানা বুঝিয়ে দিয়ে কাগজপত্র হস্তান্তর করে উপজেলা প্রশাসন। এরপর থেকেই চলছে বালু উত্তোলন।
একদিকে বালি উত্তোলন করার কারণে নদীর বাঁধ ভেঙ্গে যাচ্ছে, অন্যদিকে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে জিও ব্যাগ দিয়ে বাদ নির্মাণ করা হচ্ছে। আসলে দেশটা কোথায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে আপনাদের কাছে প্রশ্ন রইল।
এছাড়া, ধুলশুড়া ইউনিয়নের আউলিয়ানগর এলাকায় পদ্মা নদীতে ৫/৬ টি ড্রেজার,লোড ড্রেজার দিয়ে বালু তোলা হচ্ছে, সেটিও বালুমহালের নির্ধারিত সীমানা থেকে প্রায় ৪ কিলোমিটার দূরে। এছাড়া, আন্ধারমানিক ঘাটের অদূরে চরের পাশে থেকে প্রায় ১০টি ড্রেজার দিয়ে বালু তোলা হচ্ছে। সেগুলোও বালুমহালের নির্ধারিত সীমানার বাইরে।
৩ এপ্রিল বাংলা ১৪৩১ সালের একটি ইজারা দেওয়া হয়েছিল,যাহার মেয়াদ শেষ হয়েছে। ১৪৩২ এর নতুন ইজারা এখন পর্যন্ত দেওয়া হয়নি। পূর্বের টেন্ডারের পেপারগুলো সবাইকে দেখিয়ে অবৈধভাবে উত্তোলন করে যাচ্ছে রাত দিন বালিচক্র মহলটি। একদিকে সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে অন্যদিকে সাধারণ মানুষের ঘরবাড়ি ভেঙ্গে যাচ্ছে। অতি দ্রুত প্রশাসনের কাছে জোর দাবি করেছে স্থানীয় জনগন, এদেরকে আইনের আওতায় আনা হোক।
মানিকগঞ্জ জেলা প্রশাসক (ডিসি)মহাদয়, মুঠোফোনে বলেন, হরিরামপুর উপজেলায় বালি মহলের একটি টেন্ডার দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এই টেন্ডারের মেয়াদ শেষ।তাদের নির্দিষ্ট সীমানা উল্লেখ্য করে দেওয়া হয়েছিল। এখন নতুন করে টেন্ডার না হওয়া পর্যন্ত যারা বালি উত্তোলন করবে এটা সম্পূর্ণ অবৈধ বলে গণ্য হবে।আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে ।