1. sheikhrobirobi008@gmail.com : dailynayakontho :
  2. admin@dailynayakontho.com : unikbd :
মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারী ২০২৫, ১২:২৯ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
গোয়ালন্দে মাধ্যমিক স্কুল বিতর্ক প্রতিযোগিতায় ফাইনালে উন্নীত দৌলতদিয়া মডেল হাইস্কুল।। দৈনিক নয়া কণ্ঠ গোয়ালন্দ দৌলতদিয়ায় ফেরি থেকে পদ্মা নদীতে লাফ দিয়ে অজ্ঞাত এক নারী নিখোঁজ।। দৈনিক নয়া কণ্ঠ গোয়ালন্দে জাতীয় গোল্ডকাপ ফুটবলে চ‍্যাম্পিয়ন গোয়ালন্দ পৌরসভা অনুর্ধ্ব-১৭ দল।। দৈনিক নয়া কণ্ঠ নেত্রকোনা গত এক বছরে ২৩২টি অস্বাভাবিক মৃত্যু।। দৈনিক নয়া কণ্ঠ ভোলায় ইসলামী আন্দোলনের আয়োজনে বিশিষ্টজনের শীর্ষক গোল টেবিল বৈঠক।। দৈনিক নয়া কণ্ঠ রাজবাড়ী-কুষ্টিয়া রুটে বাস চলাচল শুরু ৪১ ঘন্টা পর।। দৈনিক নয়া কণ্ঠ ভোলার চরফ্যাশনে শিশুকে ঘুমে রেখে আত্মহত্যা করলো- নুসরাত।। দৈনিক নয়া কণ্ঠ রাবিতে কোরআন পোড়ানোর প্রতিবাদে গণ-কোরআন তিলাওয়াত কর্মসূচি।। দৈনিক নয়া কণ্ঠ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বাদশ সমাবর্তন ১৭ ফেব্রুয়ারি।। দৈনিক নয়া কণ্ঠ খুলনার পাইকগাছায় মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে আহত ৩ নিহত ২।। দৈনিক নয়া কণ্ঠ

ইসলামে স্থাপত্য শিল্প

  • প্রকাশিতঃ রবিবার, ২১ আগস্ট, ২০২২
  • ১১৮ বার পঠিত

স্থাপত্য শিল্প সম্পর্কে ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি ইতিবাচক। ইসলাম মুসলিমদের স্থাপত্য শিল্প নির্মাণের অনুমোদন দেয়। তাতে শৈল্পিক ভাবনার প্রতিফলন ঘটানোর অনুমোদনও দেয়। বাড়িঘর এবং অট্টালিকা কারুকার্যময় করার অনুমতিও দেয়। তবে তা সবই হতে হবে অহংকার প্রকাশ না করার ও বিলাসিতা প্রকাশ না করার শর্তে এবং অপব্যয় ব্যতিরেকে।

আল কুরআন এবং মহানবির হাদিসে এর প্রতি বারবার ইঙ্গিত করা হয়েছে। আল-কুরআনে ‘হুসুন’ বা কিল্লা, সায়াসি বা দুর্গ, বুরুজ বা উচ্চ অট্টালিকা ও দুর্গ, কুসুর বা অট্টালিকা, গুরুফ বা কক্ষ, জুদুর বা দেয়াল, র্সাহ বা প্রাসাদ, কুরা মুহাস্সানা বা ‘সুরক্ষিত জনপদ’ ইত্যাদি শব্দ ব্যবহার হয়েছে।

যেমন এক আয়াতে আল্লাহতায়ালা বলেন, তোমরা যেখানেই থাক না কেন মৃত্যু তোমাদের নাগাল পাবে, যদিও তোমরা সুদৃঢ় দুর্গে অবস্থান কর। অর্থাৎ তোমরা সৃদুঢ় উচ্চ দুর্গে অবস্থান করলেও তোমাদের মৃত্যু অবশ্যই আসবে। তোমরা মৃত্যু থেকে কিছুতেই রেহাই পাবে না, পালাতে পারবে না। এ আয়াত থেকে প্রমাণ হয়, সুদৃঢ় উচ্চ দুর্গ ও অট্টালিকা নির্মাণ করা ও তাতে বসবাস করা বৈধ।

আল্লাহতায়ালা অপর এক আয়াতে বলেন, তাকে বলা হলো, ‘প্রাসাদটিতে প্রবেশ কর’। অতঃপর যখন সে তা দেখল, সে তাকে এক গভীর জলাশয় মনে করল এবং তার পায়ের নলাদ্বয় অনাবৃত করল। সুলাইমান বললেন, ‘এটি আসলে স্বচ্ছ কাচ-নির্মিত প্রাসাদ। এ আয়াতটিও প্রমাণ করে যে, অতি উচ্চমানের শিল্পসম্মত সুরম্য বাড়ি ও প্রাসাদ নির্মাণ করা বৈধ।

কারণ সুলাইমান (আ.) একটি স্বচ্ছ কাচের উচ্চমানের শিল্পসম্মত প্রাসাদ নির্মাণ করে তার তলদেশ দিয়ে পানি প্রবাহিত করেন। তা এমন সুকৌশলে নির্মাণ করেন যে, যারা এর সম্পর্কে অবগত নয়, তারা মনে করে, তা পানি। অথচ পানি এবং পথচারীর মধ্যে স্বচ্ছ কাচের আবরণ রয়েছে। ফলে তার পায়ে পানি লাগার কোনো সম্ভাবনা নেই।

এ থেকে বোঝা যায় যে, সুলাইমান (আ.) নির্মিত এ প্রাসাদটিতে অতি উচ্চমানের শিল্প নৈপুণ্যের সমাবেশ ঘটেছিল এবং এ জাতীয় শিল্পমানের প্রাসাদ তৈরি করা এবং প্রাসাদকে কারুকার্যময় করা, তাতে বসবাস করা ইসলামে বৈধ।

আল্লাহতায়ালা আরও বলেন, আর স্মরণ কর, যখন আদ জাতির পর তিনি তোমাদেরকে স্থলাভিষিক্ত করলেন এবং তোমাদেরকে জমিনে আবাস দিলেন। তোমরা তার সমতল ভূমিতে প্রাসাদ নির্মাণ করছ এবং পাহাড় কেটে বাড়ি বানাচ্ছ। সুতরাং তোমরা আল্লাহর নিয়ামতগুলোকে স্মরণ কর এবং জমিনে ফাসাদকারীরূপে ঘুরে বেড়িয় না।

উপর্যুক্ত আয়াতে ‘তোমরা তার সমতল ভূমিতে প্রাসাদ নির্মাণ করছ এবং পাহাড় কেটে বাড়ি বানাচ্ছ’ এ কথা বলার পর ‘সুতরাং তোমরা আল্লাহর নিয়ামতগুলোকে স্মরণ কর’ এ কথা বলা থেকে বোঝা যায়, প্রাসাদ আল্লাহতায়ালার একটি বড় নিয়ামত। প্রাসাদ তৈরি করা বৈধ না হলে তাকে আল্লাহর নিয়ামত হিসাবে উল্লেখ করা হতো না।

অনুরূপভাবে রাসূলুল্লাহ (সা.) ও তাঁর হাদিসে মুমিনদের এমন একটি অট্টালিকার সঙ্গে তুলনা করেছেন, যার একটি অংশ অপর অংশকে শক্তিশালী করে। তিনি বলেন, নিশ্চয় এক মুমিন অপর মুমিনের জন্য অট্টালিকা স্বরূপ; যার এক অংশ অপর অংশকে শক্তিশালী করে।

রাসূলুল্লাহ (সা.) তিনিসহ সব নবি-রাসূলকে একটি সুউচ্চ ও সুন্দর অট্টালিকার সঙ্গে তুলনা করে বলেন, তারা বলল, এ প্রাসাদের নির্মাণ কৌশল কতই না চমৎকার হতো, যদি তাতে এ ইটটি বসানো হতো! অট্টালিকা নির্মাণ বৈধ না হলে রাসূলুল্লাহ (সা.) কখনো নবি-রাসূলদের এবং মুসলিমদের অবৈধ ও হারাম একটি জিনিসের সঙ্গে তুলনা করতেন বলে মনে হয় না।

অতএব, উচ্চ অট্টালিকা নির্মাণ ও তা কারুকার্যময় করা এবং তার সৌন্দর্য দেখে আনন্দ উপভোগ করা ইসলামের দৃষ্টিতে অবৈধ নয়; বৈধ। বরং তা কাঙ্ক্ষিত বিষয়ে পরিণত হয়, যদি অহংকার প্রকাশ বা নিজেকে বড়লোক বলে জাহির না করে নির্মাণ করা হয়।

এ কারণেই রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর কোনো কোনো সাহাবিও বিনা দ্বিধায় অট্টালিকা ও প্রাসাদ নির্মাণ করেছিলেন। সা’দ ইবন আবু ওয়াক্কাস (রা.) বসরায় একটি অট্টালিকা তৈরি করেছিলেন। তিনি বসরার গভর্নর ছিলেন। তিনি এ অট্টালিকা নির্মাণের পর বলেন, এ অট্টালিকা তো লোকদেরকে আমার কাছ থেকে দূরে সরিয়ে দিয়েছে! এ সংবাদ ওমর (রা.) শোনার পর তিনি মুহাম্মদ ইবন মাসলামাকে বসরায় পাঠান এবং তাকে আদেশ দেন, যেন তিনি বসরায় পৌঁছে বাড়িটিতে আগুন লাগিয়ে দেন।

তখন তিনি বসরা গিয়ে বাড়িটি আগুন লাগিয়ে দিয়ে পুড়িয়ে ফেলেন। আল্লামা ইবন তাইমিয়ার মতে, ওমর (রা.)-এ কাজটি করেছিলেন অট্টালিকা তৈরি ইসলামে নিষিদ্ধ বলে নয়, বরং তিনি তা করেছিলেন একজন গভর্নর জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছেন বলেই। কারণ তিনি চাননি তার কোনো গভর্নর জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে জনগণের দুঃখ-দুর্দশা না দেখে দায়িত্ব পালন করুক।

সাহাবিদের পর তাবেয়ী, তাবে-তাবেয়ী ও আইম্মায়ে মুজতাহিদিনের যুগে এবং তার পরবর্তী যুগেও মুসলিমরা পৃথিবীর সর্বত্র নির্দ্বিধায় অট্টালিকা ও প্রাসাদ নির্মাণ করেছেন। দুর্গ গড়ে তুলেছেন।

আমি মনে করি, কেবল নিজের পরিবার-পরিজন নিয়ে বসবাসের জন্য বহুতল অট্টালিকা ও প্রাসাদ নির্মাণ করা মাকরুহ থেকে মুক্ত নয়। তবে ব্যবসার মাধ্যম হিসাবে ভাড়া দিয়ে অর্থ রোজগার করার জন্য অট্টালিকা ও প্রাসাদ নির্মাণ করা মাকরুহ নয়। বরং তা সাওয়াবের কাজও হতে পারে, যদি মানুষের আবাসন সমস্যার সমাধান কল্পে তা তৈরি করা হয়। বিশেষত তা যদি বড় বড় শহরগুলোতে তৈরি করা হয়।

কারণ বর্তমান যুগে আমাদের এ ঢাকা শহরের মতো শহরে বহুতল ভবন নির্মাণ করা না হলে; আরও দু-চার দশটি ঢাকা শহরের মতো শহরের প্রয়োজন হবে। তখন দেখা দেবে তীব্র ভূমি সংকট। ইসলাম এমন কোনো সিদ্ধান্ত দেয় না, যা মানুষের সমস্যা বাড়ায়। ইসলাম এসেছে মানুষের সমস্যা সমাধানের জন্য, সমস্যা বাড়ানোর জন্য নয়। এ কারণেই ফকিহরা বলেছেন, ‘যেখানেই মানব কল্যাণ সেখানেই ইসলাম’।

স্থাপত্য শিল্প তৈরি করার সময় তাতে উন্নত নির্মাণ শিল্প কৌশল ব্যবহার করে, মজবুতভাবে, শান্তিতে বসবাস করতে পারার মতো করে এবং ইবাদত-বন্দেগি, বিশেষত সালাত আদায়ের পরিবেশ তৈরি করে তা নির্মাণ করতে হবে। আরও খেয়াল রাখতে হবে, যাতে যেখানে দ্বীনের বিধান রক্ষা সহজতর হয়। আরও মনে রাখতে হবে, মানুষ এ পৃথিবীতে চিরস্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য আসেনি, তাকে তার রবের কাছে অবশ্যই একদিন আবার ফিরে যেতে হবে।

অতএব, স্থাপত্য শিল্প নির্মাণকালে এ কথা মনে রেখেই তা তৈরি করতে হবে। তাতে বাড়াবাড়ি ও বিলাসিতা যাতে না হয়, তার দিকে খেয়াল রাখতে হবে। তবেই স্থাপত্য শিল্প ইসলামসম্মত হবে। বাংলাদেশ যেহেতু একটি মুসলিম দেশ। এ দেশের ৯০ শতাংশ মানুষ মুসলিম। তাই এ দেশের স্থাপত্য শিল্প অবশ্যই ইসলামি স্থাপত্য শিল্প-নীতিমালা অনুসরণ করে নির্মাণ করা বাঞ্ছনীয়।

এ দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের ধর্মীয় মূল্যবোধ ও চেতনার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয় এমন স্থাপত্য কর্ম শিল্প বা সংস্কৃতির নামে তৈরি করা এবং তার পৃষ্ঠপোষকতা প্রদান কখনোই কাম্য হতে পারে না। এ পরিপ্রেক্ষিতে দেশের স্থাপত্য শিল্প নির্মাণের ক্ষেত্রে দেশের অধিকাংশ ধর্মীয় জনগোষ্ঠীর মূল্যবোধকে ধারণ করে এমন একটি আইন প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করা সময়ের দাবি। উল্লেখ্য, এ দেশ মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠের দেশ হলেও অমুসলিম জনগোষ্ঠীর শিল্প, সংস্কৃতি ও মূল্যবোধ চর্চাকে বাধাগ্রস্ত করে না, বরং প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করে। যা বিশ্বধর্ম ইসলামের উদারতার বহিঃপ্রকাশ। আল্লাহ আমাদের সবাইকে ইসলামি নির্দেশনা মতো স্থাপত্য শিল্প তৈরি করার তাওফিক দিন।

শেয়ারঃ

এই জাতীয় অন্যান্য সংবাদ
  1. ২০২৩ © সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed By UNIK BD