বালিয়াকান্দিতে ছোট ভাইয়ের বিরুদ্ধে পিতার সম্পত্তি লিখে নেওয়ার অভিযোগ
স্টাফ রিপোর্টার মাহমুদুল হাসান হিটু
রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দি উপজেলার সোনাইকুড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও ছোট ভাই মোঃ মেহেরুজ্জামানের বিরুদ্ধে বৃদ্ধ পিতার নামীয় ২ একর ৬৪ শতাংশ জমি হেবা দলিলের মাধ্যমে নিজের নামে লিখে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
জানাগেছে, নারুয়া ইউনিয়নের দেলুয়া গ্রামের হাজী হেরমত মোল্লা (৮৫) বার্ধক্যজনিত কারনে বিছানাশায়ী হওয়ার কারনে ছোট ছেলে মোঃ মেহেরুজ্জামান মোল্লা তার দেলুয়া ( ধাওয়ারঘাট) এলাকার নিজ বাড়িতে উন্নতর চিকিৎসার কথা বলে নিয়ে যান। বড় ভাই মোঃ জলিল মোল্লা জানান, আমার পিতা হাজী হেরমত মোল্লাকে ভালো চিকিৎসা দেওয়ার কথা বলে তার কাছে নিয়ে যাওয়ার জন্য বল্লে আমরা তাতে কোন আপত্তি করি নাই, কিন্তু আমার সরলতার সুযোগ নিয়ে মোঃ মেহেরুজ্জামান জংগল ইউনিয়নের অলংকার পুর গ্রামের মৃত গোপাল বিশ্বাসের পুত্র দলিল লেখক তমিজ উদ্দিনের সাথে যোগাযোগ করে গত ১৬/৬/২০১০ ইং তারিখে বালিয়াকান্দি উপজেলার তৎকালীন সাবরেজিস্টার বিজয় কৃষ্ণ বসুকে সরকারী নিয়ম অনুসরণ করে আমার ছোট ভাই মেহেরুজ্জামানের বাড়ীতে নিয়ে এসে আমার অনুপস্থিতিতে পিতার নামীয় সম্পত্তি ২ একর ৬৪ শতাংশ নিজ নামে হেবা দলীল সম্পাদন করেন। বড় ভাই জলিল মোল্লা আরও জানান, আমার পিতা হাজী ছিলেন, আমিও হাজী আর ছোট ভাই তিনি একজন একটা সরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক।
তাকে আমি অনেক বিশ্বাস করতাম, আমার সরলতার সুযোগ নিয়ে সে এই ধরনের জগন্য কাজ করবে সেটা আমার বোধ গম্য নয়। তিনি আরও জানান, আমার পিতা দেলুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নামে সাড়ে আট শতাংশ জমি দান করেছিলেন, সে জমিটাও আমার ভাই মেহেরুজ্জামান নিজের নামে মিউটেশন করে নিয়েছেন। বড় ভাই জলিল মোল্লা অভিযোগ করে বলেন গত ২৭/১২/২০২৬ ইং তারিখে বিকালে আমরা ৪০ নং দেলুয়া মৌজাস্থ ৩৬৩, ৩৬৪ নং দাগের ৩০ শতাংশ জমিতে চাষাবাদের জন্য যাই, ঠিক সেই সময়ে আমার ছোট ভাই মেহেরুজ্জামান ও তার সন্তানেরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে বাধা প্রদান করে এবং বলে তোমরা কার জমি চাষ করছো। তখন আমি বলি আমার পিতার সম্পত্তি চাষ করছি। সেই মুহুর্তে তারা বলে এই জমি আমার নামে লিখে দিয়েছে বাবা, তোমরা এখান থেকে যাও বলার সাথে সাথে তার দুই ছেলে হেলাল এবং বিল্লাল আমাদের উপর আক্রমণ চালিয়ে জখম করে। আমরা বাড়িতে চলে আসলে আমার ভাই মেহেরুজ্জামান বাদী হয়ে বালিয়াকান্দি থানায় আমাদের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দায়ের করে। সে মামলা এখনো রাজবাড়ীর আদালতে চলমান রয়েছে বলে জানান।
তিনি মামলাটি সুষ্ঠ তদন্তের মাধ্যমে সমাধানেরও দাবী জানান। উক্ত বিষয়ে তার ছোট ভাই সোনাইকুড়ি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ মেহেরুজ্জামানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আমি আমার বাবার জমি লিখে নেয়নি, আমার বাবা আমার উপর খুশী হয়ে ৮৮ শতাংশ জমি হেবা দলিলের মাধ্যমে লিখে দিয়েছেন। কোথায় হেবা দলিল সম্পাদন করা হয়েছে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন বাবা খুব অসুস্থ ছিলো তাই দলিল লেখকের মাধ্যমে সাবরেজিস্টার সাহেবকে আমার বাড়িতে নিয়ে এসেছিলাম, এতে তো দোষের কিছু নাই। দেলুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নামে দান করা সাড়ে আট শতাংশ জমির বিষয়ে তিনি বলেন, উক্ত জমি আমার নামে ফিরিয়ে নেওয়ার প্রশ্নই আসে না। তাহলে উক্ত জমি গেলো কোথায়? প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন জমি টা পাশ্ববর্তী মসজিদ এবং কবর স্থানের নামে দেওয়া হয়েছে। ৫ পাখি অর্থ্যাৎ ১ একর ১০ শতাংশ জমি আপনার নামে লিখে দিলে আদালতের বিচারাধীন মামলা প্রত্যাহার করবেন বলে আপনী ঘোষনা দিয়েছেন, এর সত্যতা কতটুকু প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন কথাটি সত্য তবে ৫ পাখি নয়, আমি বলেছি ৩ পাখির কথা।