সুজন খন্দকার স্টাফ রিপোর্টার ঃ সৌদি আরব প্রবাসী মোঃ মজনু স্বপরিবারে বসবাস করেন রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ইউনিয়নের শাহাদাৎ মেম্বার পাড়া গ্রামে। এই প্রবাসী দীর্ঘ ৩০ বছর যাবত রেমিট্যান্স যোদ্ধা হিসেবে দেশের ও নিজের পরিবারের জন্য কাজ করে আর্থিক স্বচ্ছতা এনেছেন। কিন্তু গত ৩ বছর যাবত তিনি সৌদি আরবে যেতে পারছেন না, কারণ তিনি বাংলাদেশে এসে আটকা পড়েছেন, কোন প্রকার ভিসা জটিলতার কারণে নয়। বরং তিনি বিদেশ যেতে পারছেন না, কারণ তার বসতভিটা,
ঘর-বাড়ী,জমি-জমা সহ সমস্ত স্থাপনা সরকারের দৌলতদিয়া টু পাটুরিয়া নদীবন্দর শাসন ও উন্নয়ন প্রকল্পের আওতাধীন ভুমি অধিগ্রহণের মধ্যে পড়েছে। কিন্তু দীর্ঘ ৩ বছর ধরে এই নদীবন্দর শাসন ও উন্নয়ন প্রকল্পের সাথে জরিত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ভুমি অধিগ্রহণের ক্ষতিপুরনের টাকা দেওয়ার কথা বলে শুধু আশ্বাস দিয়ে যাচ্ছেন সাধারণ মানুষকে।
এখানে- প্রবাসী মজনু একা বিপদে পড়েছেন,
বিষয়টা এমন নয়, এই নদীবন্দর শাসন ও উন্নয়ন প্রকল্পের জমি অধিগ্রহণের আওতাধীন ভুক্তভোগী প্রায় ৭০০টি পরিবারের ৩ হাজার মানুষ আজ দুর্বিষহ জীবন যাপন করছেন।
সুত্র বলছে, ১৩ শত ৭২ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০২১ সাল হতে দৌলতদিয়া টু পাটুরিয়া নদীবন্দর শাসন ও উন্নয়ন প্রকল্পটি কাজ করার উদ্যোগ নেয় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এজন্য এর আওতাধীন প্রায় ৭০০টি পরিবারে জায়গা-জমি ঘরবাড়ী,গাছপালা কাটা ও বিক্রি করা সহ সব ধরেনর পরিবর্তনের উপর নিষেধাজ্ঞা জারী করে বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ। সেইসাথে নোটিশের মাধ্যমে হুশিয়ারী দেওয়া হয়, যদি কেউ তার জমিসহ স্থাপনার কোন প্রকার পরিবর্তন করেন তাহলে ক্ষতিপুরনের টাকা দেওয়া হবে না, বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষের এমন দ্বায়সাড়া নোটিশের কারণে অত্র নদীবন্দর শাসন ও উন্নয়ন প্রকল্পের আওতাধীন পরিবারগুলো তাদের ঘরবাড়ী সহ স্থাপনার কোন পরিবর্তন করতে পারছেন না।
এতে মহা বিপদে পড়েছে কোন কোন পরিবার। কারণ বাড়ীঘর ও গাছপালা গুলোর কোন পরিবর্তন না করতে পাড়ায় তিন বছরের মধ্যে জঙ্গলে রুপ ধারণ করেছে। এতে এই বাড়ী-ঘর ও স্থাপনার কোন সংযোজন-বিয়োজন বা মেরামত না করতে পারার কারণে কোন পরিবারের সদস্যরা আত্মীয়তা করতে আসছেন না এই গ্রামে। এতে বেশকিছু পরিবার তাদের বিয়ের উপযুক্ত মেয়েকে নিয়ে পড়েছে মহা বিপদে।
ভুক্তভোগী পরিবারগুলো মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে দাবী করেন, যেকোন মুল্যে খুব শীগ্রই এই প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়ন করা হোক। তা না’হলে মানববন্ধন সহ রাজপথে নামবেন তারা। কারণ দীর্ঘদিন অপেক্ষার পর সাধারণ মানুষের পিঠ এখন দেওয়ালে ঠেকে গিয়েছে।
এবিষয়ে দৌলতদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল রহমান মন্ডল জানান,বারবার নদীবন্দর শাসনের নামে এমন গড়িমুসি দৌলতদিয়াবাসী আর মেনে নিতে পারছে না। এবার একটা পরিত্রাণ দরকার।
এতে অবশ্য কোন প্রকার মাথা ব্যাথা নেই এই প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা “তারেক হোসাইনের” তিনি অবশ্য দিব্যি ভুক্তভোগী পরিবারগুলোকে নিয়মিত আশ্বাসের ঝুলি দিয়ে বেড়াচ্ছে। কিন্তু বাস্তবায়নের কোন মুরদ নাই।
আর গোয়ালন্দ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা জ্যোতি বিকাশ চন্দ্র বলেন,দীর্ঘদিন যাবত নদীবন্দর শাসনের নামে গড়িমসির কারণে সাধারণ মানুষের কষ্টের যেন সীমা নেই। সরকারের উচিত এই প্রকল্পটি খুব তারাতাড়ি বাস্তবায়ন করা।