সুজন খন্দকার, মজিবুর জুয়েল, গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী)
প্রয়োজনে চাঁদা তুলে হলেও মেয়েদের বাইরে বিয়ে দেব।কোনভাবেই যৌনপেশায় আনব না।এমন অঙ্গীকার করেছেন যৌনজীবিরা।
শুক্রবার বিকেলে দেশের সর্ববৃহৎ দৌলতদিয়া যৌনপল্লীতে গোয়ালন্দ ঘাট থানা পুলিশের আয়োজনে সচেতনতামূলক সভায় তারা এ অঙ্গীকার করেন।
তবে অঙ্গীকার করলেও তারা কঠিন বাস্তবতায় এ ওয়াদা রাখতে পারবেন না অনেকেই অভিমত ব্যক্ত করেন।
সভায় সভাপতিত্ব করেন থানার ওসি স্বপন কুমার মজুমদার।
সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্হিত ছিলেন রাজবাড়ীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ ইফতেখারুজ্জামান।
ওসি স্বপন কুমার মজুমদার তার বক্তব্যে বলেন, এই যৌনপল্লীকে ঘিরে একটি নারী পাচারকারী চক্র সক্রিয় আছে। আমরা ইতিপূর্বে এমন বেশ কিছু নারী ও কিশোরীকে উদ্ধার করে তাদের অভিভাবকদের কাছে হস্তান্তর করেছি। জড়িতদের আইনের আওতায় এনে বিচারের মুখোমুখি করেছি। কিন্তু দূর্ভাগ্যজনকভাবে পল্লীর অনেক মা তাদের মেয়ে একটু বড় হয়ে উঠলেই তাকে যৌন পেশায় নিয়ে আসতে পায়তারা শুরু করেন। এমনকি সেফ হোম থেকে নানা পায়তারা করে এনেও পল্লীতে নাম লিখিয়ে দিচ্ছেন। এভাবে তারা অনেক কিশোরী মেয়ের জীবনকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। পরবর্তীতে এ সকল মেয়েরা মাদকাসক্ত হয়ে এবং স্হানীয় মাস্তানদের সাথে সম্পর্কে জড়িয়ে নিজেদেরকে ধ্বংসের শেষ পর্যায়ে নিয়ে যাচ্ছে। ওই সকল মেয়েদের উপার্জিত অর্থ হাতিয়ে নিয়ে যায় তাদের প্রেমিক বা বাবুরুপী বাটপাররা।
আমরা এমনটা আর কোনভাবেই সহ্য করব না। ১৮ বছরের নিচে কোন মেয়েকে কেউ এ পেশায় আনলে তাকে বা তাদেরকে সরাসরি আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে। এ সময় তিনি যৌনজীবিদের মাদক থেকে দূরে থেকে সঞ্চয়ী হওয়ার পরামর্শ দেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ১৮ বছরের নিচে কোন ভাবেই যৌন পেশায় আনা যাবে না।এমনটা কেউ করলে আমরা তাদেরকে আইনের আওতায় এনে শাস্তির ব্যাবস্হা করব। এ ধরনের মেয়েদের বিকল্প পেশায় প্রতিষ্ঠিত করার জন্য বিভিন্ন সরকারী ও বেসরকারী সংস্থা রয়েছে।আপনারা চাইলে তারা সহযোগীতা করতে প্রস্তুত রয়েছে।
এ সময় তিনি সন্তানদের অন্ধকার জীবন থেকে রক্ষার জন্য সরকারী-বেসরকারী সুযোগ কাজে লাগিয়ে লেখাপড়া শেখানোর জন্য যৌনকর্মী মায়েদের পরামর্শ দেন।
সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্হিত ছিলেন অসহায় নারী ঐক্য কল্যান সমিতির সভানেত্রী ঝুমুর বেগম, মুক্তি মহিলার প্রোগ্রাম ডিরেক্টর আতাউর রহমান মন্জু, পায়াকট বাংলাদেশ এর ম্যানেজার মজিবর রহমান জুয়েল, গনস্বাস্হ্য কেন্দ্রের ম্যানেজার জুলফিকার আলী, সুখপাখি সংস্হার সভানেত্রী ফরিদা পারভিনসহ কয়েকশ যৌনজীবি ও বাড়ীওয়ালী।