জেলা প্রতিনিধি, ভোলা:
ভোলার লালমোহন পশ্চিম চর উমেদ ইউনিয়নে ২ নং ওয়ার্ডে বিচ্ছিন্ন চর-কচুয়া খালি চর থেকে ফাহিম (২৫) নামের একজনের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে লালমোহন থানা পুলিশের একটি টিম। গত ৮ জুন (রবিবার) সকাল ১০ ঘটিকার সময়।
ছেলে হারানো ব্যথা নিয়ে বাবা মোঃ রুহুল আমিন হেজু গণমাধ্যমকে বলেন, স্যার বিয়ে করানোর পর থেকেই স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে আলাদা থাকতো ফাহিম। ঈদের দিন (শনিবার) সকালে আমি তাদের দাওয়াত দেই। এরপর তারা এসে দুপুরের খাবার খায়। তবে বিকেলের দিকে কাউকে কিছু না বলেই ফাহিমের স্ত্রী আঙ্কুরা তার বাবার বাড়িতে চলে যান। এরপর ফাহিম তার বন্ধুদের সঙ্গে ক্যারাম খেলছিল। সন্ধ্যার দিকে তার স্ত্রী আঙ্কুরা তাকে লোক পাঠিয়ে ডাকলে সে তার স্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে গালিগালাজ করেন। এ সময় তার পাশে থাকা ভায়রা এসব শুনতে পেয়ে বাড়িতে গিয়ে শশুরসহ অন্যান্য আত্মীয়দের জানান। এরপর রাতে আমার ছেলে ফাহিমকে ফোনে কল করে ডেকে নেন তার শশুর আব্দুল খালেক।
এই তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ফাহিমের শশুর বাড়ির লোকজন ফাহিমকে মারধর করেন। এতে ফাহিম মারা গেলে একপর্যায়ে ফাহিম আত্মহত্যা করেছে বলে চালানোর জন্য ফাহিমের বাড়িটিয়া বাসায় নিয়ে গলায় দড়ি পেঁচিয়ে ঝুলিয়ে রাখেন ফাহিমের শশুর বাড়ির লোকজন। তবে ভোরে ফাহিমের মা রহিমা বিবি তাকে খুঁজতে এলে ফাহিমের ঘরের দরজা বন্ধ থাকায়। ঘরের জানালা দিয়ে উঁকি মেরে দেখতে পান ফাহিম গলায় দরি পেঁচানো অবস্থ এক পা চকিতে আরেক পা মাটিতে ঝুলালো। এরপর রহিমা বিবির ডাক চিৎকারে ভাড়ি হয়ে উঠে এলাকার নিরব পরিবেশ খবর পেয়ে ছুটে আসে আশেপাশের লোকজন।
খবর দেওয়া হয় লালমোহন থানার পুলিশকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন থানার (এসআই) প্রসেনজিৎ। তবে ফাহিমের মৃত্যু আত্মহত্যা নাকি হত্যা সে সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে মুঠোফোনে প্রতিবেদকে বলেন, ফাহিম নিজেই গলাশ ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। কিন্তু ফাহিম এর মৃতদেহ ইঙ্গিত দিচ্ছে ভিন্ন কিছুর। যা এসআই প্রসেনজিৎ এর কথার সঙ্গে কোনো যুক্তিক মিল নেই। ধারণা করা হচ্ছে প্রসেনজিৎ সত্যিটা যেনেও এড়িয়ে যাচ্ছে।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, ফাহিমকে ঈদের দিন বাসায় দাওয়াত দিয়ে নিয়ে বেধড়ক মারধর করে হত্যা করা হয় ওই রাতেই। পড়ে ফাহিম এর বাড়িটিয়া বাসায় ফাহিমকে গড়ের আরার সঙ্গে তার মরদেহ ঝুলিয়ে রেখেই আত্মাগোপনে চলে যান ফাহিমের শশুরবাড়ির লোকজন।
ফাহিমের হত্যার অভিযোগকারী শ্বশুর আব্দুল খালেক সহ পরিবারের লোকজন আত্মগোপনে থাকায় তাদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে আব্দুল খালেক এর মেয়ে আঙ্কুরা চেহারার তেমন কোনো স্বামী হারানো বেদনা ফুটে ওঠেনি বরং সে এক মনে দিন পাড় করতেছে।
এ বিষয়ে লালমোহন থানার ওসি (তদন্ত) মোঃ মাসুদ হাওলাদার গণমাধ্যমকে জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশের একটি টিম পাঠানো হয়েছে। এরপর তারা ওই যুবকের মরদেহ উদ্ধার করে থানায় আনেন। ময়নাতদন্তের জন্য ওই যুবকের মরদেহ ভোলা সদর ২৫০শয্যা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।