রাজবাড়ী গোয়ালন্দে ১০ মাসের একটি প্রকল্পের কাজ ৪বছরেও সম্পন্ন হয়নি
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে ১০ মাসের একটি প্রকল্পের কাজ চার বছরেও সম্পন্ন হয়নি। ৬০ মিটার দৈর্ঘ্যরে সেতু নির্মাণের এ প্রকল্পের প্রায় অর্ধেক কাজ এখনো বাকি; হয়নি সংযোগ সড়কও। এ অবস্থায় কাজ বন্ধ রেখে লাপাত্তা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। অন্যদিকে অনেক মানুষ ঝুঁকি নিয়ে বাঁশ-কাঠের কাঠামোতে দাঁড়িয়ে থাকা সেতু ব্যবহারে বাধ্য হচ্ছেন। উপজেলা প্রকৌশলীর দপ্তর বলছে, তারা নতুন করে ঠিকাদার নিয়োগের চেষ্টায় আছে।
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উজানচরের শাহজউদ্দিন মাতব্বর পাড়া ও ফরিদপুর সদরের গোপালপুরের আনন্দ বাজার এলাকার গুরুত্বপূর্ণ স্থান মান্নানগাছির খেয়াঘাট। এ ঘাট দিয়ে প্রতিদিন দুই জেলার হাজার হাজার মানুষ পারাপার হয়। এখানে ব্রিজের অভাবে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ ও ফরিদপুর সদর উপজেলার অন্তত ১৫ থেকে ২০ গ্রামের হাজার হাজার মানুষকে পাঁচ থেকে সাত কিলোমিটার পথ ঘুরে যেতে হচ্ছে। জরুরি প্রয়োজনে অনেকে ঝুঁকি নিয়ে মই বেয়ে নির্মাণাধীন ব্রিজ পার হচ্ছেন। কিন্তু ভারী মালামাল কিংবা রোগী নিয়ে দীর্ঘপথ পাড়ি দিতে বেগ পেতে হচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, উজানচরের মানুষের জেলা বা উপজেলা শহরের চেয়ে ফরিদপুরের হাট-বাজার ও হাসপাতালই কাছে হয়। ফলে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তি পোহাচ্ছেন উজানচরের বাসিন্দারা।
২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে ১০ মাস মেয়াদি প্রকল্পের আওতায় পদ্মার এ শাখার নদীর ওপর ৬০ মিটার দৈর্ঘ্যরে ব্রিজ নির্মাণের কাজ শুরু হয়। কিন্তু এখনো বাকি রয়েছে প্রায় অর্ধেক কাজ। একাধিকবার মেয়াদ বাড়িয়েও কাজে গতি আনা যায়নি; শেষমেশ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বরিশালের ‘মেসার্স রুপালী কন্সট্রাকশন-মাম জেভি’ লাপাত্তা হয়ে যায়। তবে কাজ করছিল একটি সাব ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। প্রকল্পে বরাদ্দকৃত অর্থের পরিমাণ দুই কোটি ৮৪ লাখ টাকা।গোয়ালন্দ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. মোস্তফা মুন্সি বলেন, ব্রিজটির কাজ দ্রুত শেষ করতে একাধিকবার এলজিইডি জেলা ও উপজেলা প্রকৌশলীর সঙ্গে তিনি আলোচনা করেছেন। কিন্তু ঠিকাদার কাজ শেষ না করেই চলে গেছে।গোয়ালন্দ উপজেলা প্রকৌশলী মো. বজলুর রহমান খান বলেন, মান্নানগাছির ব্রিজটি নির্মাণের জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে একাধিকবার তাগাদা দিয়ে প্রায় ৭০ শতাংশ কাজ করানো গেছে। বাকি কাজ না করায় ঠিকাদারকে একাধিকবার চিঠি দেওয়া হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষও অবগত। কাজটি বাতিলের জন্য নির্বাহী প্রকৌশলী প্রকল্প পরিচালক বরাবর সুপারিশ করা হয়েছে। কাজটি বাতিল হলে নতুন করে টেন্ডার আহ্বান ও ঠিকাদার নিয়োগ করে পুনরায় কাজ শুরু হবে। তিনি দাবি করেন, ওই ঠিকাদার যতটুকু কাজ করেছে, ততটুকুর অর্থই দেওয়া হয়েছে।