তানোরে বাগানের মটর থেকে অবৈধ সেচ বাণিজ্যে।
মোঃ আজিজুর রহমান, তানোর প্রতিনিধি
রাজশাহীর তানোরে সেচ নীতিমালা লঙ্ঘন করে অবৈধ মটর থেকে বিএমডিএর গভীর নলকুপ ও অনুমোদিত সেচ মটরের কমান্ড এরিয়ায় জোরপুর্বক সেচ দেয়া হচ্ছে।এ ঘটনায় গত ২০২৪ সালের ২০ জুন বৃহস্পতিবার ফারুক হোসেন ও আজাহার আলী বাদি হয়ে পল্লী বিদ্যুত তানোর জোনের ডিজিএম-এর কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। উপজেলার কলমা ইউনিয়নের (ইউপি) অমৃতপুর মৌজায় ন্যাক্কারজনক এই ঘটনা ঘটেছে।
অভিযোগের প্রেক্ষিতে পল্লী বিদ্যুৎ ওই অবৈধ মটরের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। এমতাবস্থায় মটর মালিক শাফিউল ইসলাম ৩০০ টাকার নন জুডিশিয়াল স্ট্যম্পে অঙ্গীকারনামা দিয়েছেন, তিনি আর কখানো কোনো অবস্থাতেই কোনো ফসলি জমিতে সেচ দিবেন না। বড় অঙ্কের ঘুষের বিনিময়ে
এমন অঙ্গীকারনামা দিয়ে ফের সংযোগ নিয়েছেন। কিন্ত্ত অঙ্গীকার ভঙ্গ করে ফের গভীর নলকুপ ও অনুমোদিত মটরের কমান্ড এরিয়ায় সেচ দিচ্ছে।
এঘটনায় বিবাদমান দু’পক্ষের মাঝে টানটান উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। বাগান সেচ মটর থেকে অবৈধ সেচ বাণিজ্যে বন্ধে, ওই মটরের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা না হলে। যে কোনো সময় খুন-জখম বা রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটতে পারে বলে গ্রামবাসী শঙ্কিত হয়ে পড়েছে।
স্থানীয়রা জানান, উপজেলার কলমা ইউনিয়নের (ইউপি) আজিজপুর গ্রামের মৃত শামসুল আলমের পুত্র ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ময়নার ঘনিষ্ঠ সহচর শাফিউল ইসলাম আজিজপুর মৌজায় বাগানে সেচ দেবার জন্য মটর স্থাপন করে বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়েছেন। যাহার মিটার নম্বর ২৩২৫৭৬৭৪।
শাফিউল ইসলাম আজিজপুর মৌজার বাগান সেচ মটর থেকে অমৃতপুর মৌজার গভীর নলকুপ ও অনুমোদিত সেচ মটরের কমান্ড এরিয়ায় সেচ দিচ্ছেন এবং নীতিমালা লঙ্ঘন ও জোরপূর্বক আন্ডারগ্রাউন্ড ড্রেন নির্মাণ করেছেন। যা সেচ নীতিমালা পরিপন্থী ও দন্ডনীয় অপরাধ। আওয়ামী মদদপুষ্ট
শাফিউল ইসলাম রাতারাতি খোলস পাল্টে জামায়াত মতাদর্শী হয়ে নিজের ইচ্ছেমতো সেচ চার্জ আদায় করছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কৃষক জানান, ড্রেন মেরামত, ভোল্টেজ বাড়ানো নানা অজুহাতে কৃষকদের জিম্মি করে অতিরিক্ত টাকা আদায় করা হচ্ছে।এছাড়াও চোরাপথে নিম্নমাণের সার কীটনাশক এনে উচ্চ দামে বিক্রি করছে। তবে কেউ কোনো প্রতিবাদ করতে পারছেন না। কেউ প্রতিবাদ করলেই তাকে আওয়ামী ট্যাগ দিয়ে মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দেয়া হচ্ছে।
এদিকে ফারুক হোসেন ও আজাহার আলী অভিযোগ করে বলেন, তাদের অনুমোদিত সেচ মটরের স্কীমে শাফিউল জোরপুর্বক সেচ দিচ্ছে ও আন্ডারগ্রাউন্ড ড্রেন নির্মাণ করেছেন। তাকে নিষেধ করতে গেলে সে নানাভাবে ভয়ভীতি ও হুমকি দিয়ে ড্রেন নির্মাণ করেছেন। অথচ সেচ নীতিমালা অনুয়ায়ী বাগান সেচের মটর থেকে কৃষি জমিতে সেচ দেয়া হলে সেই মটরের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার কথা।
এবিষয়ে জানতে চাইলে শাফিউল ইসলাম এসব অভিযোগ অস্বীকার করে গণমাধ্যমকে বলেন,কৃষকদের ফসল বাঁচাতে তিনি সেচ দিচ্ছেন। তিনি বলেন,কৃষকেরা ইউএনও অফিসে গিয়ে পানি সেচের অনুমতি নিয়ে এসেছেন। এব্যাপারে বিএমডিএ তানোর জোনের সহকারী প্রকৌশলী জামিনুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, অনুমোদিত এক মটরের কমান্ড এরিয়ায় অন্য মটর থেকে সেচ দেয়ার কোনো সুযোগ নাই। এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) খায়রুল ইসলামকে মুঠোফোনে পাওয়া যায় নাই ।বলেন, বিষয়টি তার জানা নাই।
এব্যাপারে রাজশাহী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি তানোর (ডিজিএম) রফিকুল ইসলাম বলেন,তিনি নতুন এসেছেন,এ বিষয়ে বিস্তারিত খোঁজখবর নিয়ে দেখা হবে। তিনি বলেন, অভিযোগের সত্যতা পেলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হবে।