1. sheikhrobirobi008@gmail.com : dailynayakontho :
  2. nayakontho@gmail.com : nayakontho :
  3. admin@dailynayakontho.com : unikbd :
মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫, ০৭:২৯ পূর্বাহ্ন

ইউসুফ ( আঃ) কে বিক্রি অতপর তার ভাইদের সত্যবাদী হওয়ার চেষ্টা – নয়া কণ্ঠ

  • প্রকাশিতঃ রবিবার, ২৩ জুলাই, ২০২৩
  • ১০৩ বার পঠিত

নয়া কণ্ঠ ইসলামী ডেস্ক

মাহমুদুল হাসান

১২:১৭ قَالُوۡا یٰۤاَبَانَاۤ اِنَّا ذَهَبۡنَا نَسۡتَبِقُ وَ تَرَکۡنَا یُوۡسُفَ عِنۡدَ مَتَاعِنَا فَاَکَلَهُ الذِّئۡبُ ۚ وَ مَاۤ اَنۡتَ بِمُؤۡمِنٍ لَّنَا وَ لَوۡ کُنَّا صٰدِقِیۡنَ ﴿۱۷﴾(১৭) তারা বলল, ‘হে আমাদের পিতা! আমরা দৌড়-প্রতিযোগিতা করছিলাম এবং ইউসুফকে আমাদের মালপত্রের নিকট রেখে গিয়েছিলাম, অতঃপর নেকড়ে বাঘ তাকে খেয়ে ফেলেছে; কিন্তু আপনি তো আমাদেরকে বিশ্বাস করবেন না; যদিও আমরা সত্যবাদী।’ [1]

[1] অর্থাৎ, যদিও আমরা আপনার নিকট বিশ্বস্ত ও সত্যবাদী হতাম, তবুও আপনি ইউসুফ সম্পর্কে আমাদের কথা সত্য বলে বিশ্বাস করতেন না। এখন তো এমনিতেই আমাদের ব্যক্তিত্ব সন্দিগ্ধ ব্যক্তিদের মত, এখন আপনি আমাদের কথা আর কিভাবে বিশ্বাস করবেন?১৮ وَ جَآءُوۡ عَلٰی قَمِیۡصِهٖ بِدَمٍ کَذِبٍ ؕ قَالَ بَلۡ سَوَّلَتۡ لَکُمۡ اَنۡفُسُکُمۡ اَمۡرًا ؕ فَصَبۡرٌ جَمِیۡلٌ ؕ وَ اللّٰهُ الۡمُسۡتَعَانُ عَلٰی مَا تَصِفُوۡنَ ﴿۱۸﴾১৮. আর তারা তার জামায় মিথ্যা রক্ত লেপন করে এনেছিল। তিনি বললেন, না, বরং তোমাদের মন তোমাদের জন্য একটি কাহিনী সাজিয়ে দিয়েছে। কাজেই উত্তম ধৈর্যই আমি গ্রহণ করব। আর তোমরা যা বর্ণনা করছ সে বিষয়ে একমাত্র আল্লাহ্ই আমার সাহায্যস্থল।(১)

(১) অর্থাৎ ইউসুফ আলাইহিস সালাম-এর ভ্রাতারা তার জামায় কৃত্রিম রক্ত লাগিয়ে এনেছিল, যাতে পিতার মনে বিশ্বাস জন্মাতে পারে যে, বাঘই তাকে খেয়ে ফেলেছে। কিন্তু ইয়াকুব আলাইহিস সালাম ঠিকই বুঝলেন যে, ইউসুফকে বাঘে খায়নি; বরং তোমাদেরই মন একটি বিষয় খাড়া করেছে। এখন আমার জন্য উত্তম এই যে, ধৈর্য্যধারণ করি এবং তোমরা যা বল, তাতে আল্লাহর সাহায্য প্রার্থনা করি।

১২:১৯ وَ جَآءَتۡ سَیَّارَۃٌ فَاَرۡسَلُوۡا وَارِدَهُمۡ فَاَدۡلٰی دَلۡوَهٗ ؕ قَالَ یٰبُشۡرٰی هٰذَا غُلٰمٌ ؕ وَ اَسَرُّوۡهُ بِضَاعَۃً ؕ وَ اللّٰهُ عَلِیۡمٌۢ بِمَا یَعۡمَلُوۡنَ ﴿۱۹﴾و جاءت سیارۃ فارسلوا واردهم فادلی دلوهٗ قال یبشری هذا غلم و اسروه بضاعۃ و الله علیمۢ بما یعملون ﴿۱۹﴾
১৯. আর এক যাত্রীদল আসল, অতঃপর তারা তাদের পানি সংগ্রাহককে পাঠালে সে তার পানির বালতি নামিয়ে দিল। সে বলে উঠল, কী সুখবর! এ যে এক কিশোর!(১) এবং তারা তাকে পণ্যরূপে লুকিয়ে রাখল।(২) আর তারা যা করছিল সে বিষয়ে আল্লাহ সবিশেষ অবগত।(৩)এ মুখমণ্ডলের ভবিষ্যত মাহাত্ম্য থেকে দৃষ্টি ফিরিয়ে নিলেও উপস্থিত ক্ষেত্রেও অনুপম সৌন্দর্য ও গুণগত উৎকর্ষের নিদর্শনাবলী তার মাহত্ম্যের কম পরিচায়ক ছিল না। সম্পূর্ণ অপ্রত্যাশিতভাবে কুপের তলদেশ থেকে ভেসে উঠা এই অল্পবয়স্ক, অপরূপ ও বুদ্ধিদীপ্ত বালককে দেখে লোকটি সোল্লাসে চীৎকার করে উঠলঃ (يَا بُشْرَىٰ هَٰذَا غُلَامٌ) -আরে, আনন্দের কথা- এ তো বড় চমৎকার এক কিশোর বের হয়ে এসেছে। ইউসুফ আলাইহিস সালাম দেখতে খুব সুন্দর ছিলেন। এক হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ ‘আমি ইউসুফ আলাইহিস সালাম-এর সাথে সাক্ষাতের পর দেখলাম যে, আল্লাহ তা’আলা সমগ্র বিশ্বের রূপ-সৌন্দর্যের অর্ধেক তাকে দান করেছেন। [মুসলিমঃ ১৬২]

(২) অর্থাৎ তারা তাকে একটি পণ্যদ্রব্য মনে করে গোপন করে ফেলল। উদ্দেশ্য এই যে, শুরুতে এ কিশোরকে দেখে অবাক বিস্ময়ে চীৎকার করে উঠল; কিন্তু চিন্তা-ভাবনা করে স্থির করল যে, এটা জানাজানি না হওয়া উচিত এবং গোপন করে ফেলা দরকার, যাতে একে বিক্রি করে প্রচুর অর্থ লাভ করা যায়। সমগ্র কাফেলার মধ্যে এ বিষয় জানাজানি হয়ে গেলে সবাই এতে অংশীদার হয়ে যাবে। এরূপ অর্থও হতে পারে যে, ইউসুফ আলাইহিস সালাম-এর ভ্রাতারা বাস্তব ঘটনা গোপন করে তাকে পণ্যদ্রব্য করে নিল। এমতাবস্থায় আয়াতের অর্থ এই হবে যে, ইউসুফ ভ্রাতারা নিজেরাই ইউসুফকে পণ্যদ্রব্য স্থির করে বিক্রি করে দিল। [তাবারী; কুরতুবী]

১২:২০ وَ شَرَوۡهُ بِثَمَنٍۭ بَخۡسٍ دَرَاهِمَ مَعۡدُوۡدَۃٍ ۚ وَ کَانُوۡا فِیۡهِ مِنَ الزَّاهِدِیۡنَ ﴿۲۰﴾২০. আর তারা তাকে বিক্রি করল স্বল্প মূল্যে, মাত্র কয়েক দিরহামের বিনিময়ে(১) এবং তারা ছিল তার ব্যাপারে অনাগ্রহী(২)।

(১) আরবী ভাষায় شَراء শব্দ ক্রয় করা ও বিক্রয় করা উভয় অর্থে ব্যবহৃত হয়। এ স্থলেও উভয় অর্থের সম্ভাবনা রয়েছে। যদি সর্বনামকে ইউসুফ ভ্রাতাদের দিকে ফেরানো হয়, তবে বিক্রয় করার অর্থ হবে এবং কাফেলার লোকদের দিকে ফেরানো হলে ক্রয় করার অর্থ হবে। [ইবন কাসীর] উদ্দেশ্য এই যে, ইউসুফ ভ্রাতারা বিক্রয় করে দিল কিংবা কাফেলার লোকেরা ইউসুফকে খুব সস্তা মূল্যে অর্থাৎ নামে মাত্র কয়েকটি দিরহামের বিনিময়ে ক্রয় করল। আয়াতে বর্ণিত بَخْسٍ এর দুটি অর্থ হতে পারেঃ (এক) খুব কম মূল্যে; [তাবারী] কারণ তারা বাস্তবিকই তাকে খুব কম মূল্যে বিক্রয় করেছিল। (দুই) অন্যায় বা নিকৃষ্ট বিক্রয় সম্পন্ন করল; কারণ তারা স্বাধীন মানুষকে বিক্রয় করেছিল। স্বাধীন মানুষকে বিক্রয় করা হারাম। [কুরতুবী] ইমাম কুরতুবী আরও বলেনঃ আরব বণিকদের অভ্যাস ছিল, তারা মোটা অঙ্কের লেন-দেন পরিমাপের মাধ্যমে করত এবং চল্লিশের উর্ধ্বে নয়, এমন লেন-দেন গণনার মাধ্যমে করত। তাই دَرَاهِمَ শব্দের সাথে مَعْدُودَةٍ (গুণাগুনতি) শব্দের প্রয়োগ থেকে বোঝা যায় যে, দিরহামের পরিমাণ চল্লিশের কম ছিল। আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদের বর্ণনায় এসেছে, বিশ দিরহামের বিনিময়ে ক্রয়-বিক্রয় হয়েছিল এবং দশ ভাই দুই দিরহাম করে নিজেদের মধ্যে তা বন্টন করে নিয়েছিল। [কুরতুবী]

শেয়ারঃ

এই জাতীয় অন্যান্য সংবাদ
২০২৫ © সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed By UNIK BD