হাল ছেড়না রেজন
মোঃ আহসান কবির রিজওয়ান
আমি ২০২২ সালে সাহিত্য জগতে প্রবেশ করি কবিতা ‘সুখী মানুষ’ দেশচিত্র পত্রিকায় প্রকাশিত হওয়ার মাধ্যমে।আমার লেখক হওয়ার পিছনে অদৃশ্য অবদান রয়েছে বিনোদন-সামাজিক কার্টুন ভিডিও’র।যখন ফেসবুক সাহিত্য গ্রুপে লেখালেখি শুরু করলাম তখন আমার লেখা ‘এই পথে’ এটি নুরুল কবির কবিতা আকারে সাজিয়ে দেয়। ফেসবুকের মাধ্যমেই পরিচিতিটা অর্জন করতে লাগলাম।স্বদেশচিত্র পত্রিকায় আমার কবিতা ‘প্রেমের কথা’ প্রকাশের কিছুদিন পরে পরিচিত হই কুড়িগ্রামের রবিউল ইসলাম হৃদয়ের সাথে।অর্থাৎ রবিউল আমার মেসেঞ্জার আইডিতে নক দিয়ে বলে ‘আপনি কিভাবে কবিতা প্রকাশ করেন,আমায় একটু শিখাবেন!প্রকাশ করে দিবেন?’ তখন পত্রিকা-প্রকাশন বিষয়ে আমারই তেমন কিছু অভিজ্ঞতা ছিল না,তাকে বলছিলাম সাহিত্য গ্রুপে, পত্রিকায় কবিতা জমা দিতে হয় প্রকাশের জন্য।এভাবে গড়ে উঠেছিল রবিউলের সাথে আমার বন্ধুত্ব,তখন তার কবিতায় কোন ছন্দের গন্ধ পাওয়া যায়নি!উপরের লাইনের সাথে নিচের লাইনের মিল ছিলনা,সামনের অংশের সাথে পিছনের অংশের সামঞ্জস্য ছিলনা।তবে কিছু কিছু লাইন সুন্দর লেখেছিল।তখন আমার লেখারও গতি তেমন আর্কষণীয় ছিলনা,পাঠকের মন জয় করতে পারেনি।আমি অদৌ ফেসবুকের কোন সাহিত্য গ্রুপ থেকে বিজয়ী হতে পারিনি।সেসময় আমার লেখায় প্রতিবাদ কম ছিল তবে আমি ছোট থেকেই প্রতিবাদী। তখন ‘দৈনিক ভোরবেলা নিউজ ২৪’ নিয়মিত লেখক ছিলাম।সেই পত্রিকার প্রকাশক মেহেদী ভাইকে রবিউলের একটি ছড়াও প্রকাশ করতে দেই,তিনি প্রকাশও করেছে।তারপর থেকে রবিউল মেহেদী ভাইয়ের মেসেঞ্জার আইডিতে লেখা পাঠিয়েছে এবং প্রকাশও হয়েছে।তার কিছুদিন পরে ফেসবুক নোটিফিকেশনে নজরে পড়ে মোঃ সোহাগ মোল্লা (মঈনুল) ‘কবি আব্দুল গফুর সাহিত্য পরিষদ’ গ্রুপে যুক্ত হবার আমন্ত্রণ জানিয়েছে,তারপর থেকে সোহাগ ভাইয়ের সাথে আমার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গঠন হয় এবং আজও আছে।সেই গফুর গ্রুপে সোহাগ ভাই আমাকে প্রথমে মডারেটর বানাইছিল।তার কিছুদিন পরে সাভারে থাকা ওয়ালিফ আহমাদের সাথে আমার পরিচয় হয়,বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে উঠে। ওয়ালিফ আমায় বলেছিল ‘দেশটার অবস্থা খারাপ হয়ে গেছে,চলো দেশ গোছাতে আমরা নিজেরাই একটা রাজনৈতিক দল গঠন করি।’ আমি কিছুক্ষণ এই বিষয়ে ভাবার পরে রাজি হই দল গঠন করার।সেই দলের নাম দেওয়া হয়েছিল ‘গণন্যায্য ফোরাম’।এই ফোরামে আমি চার-পাঁচজনকে অ্যাড করেছিলাম,তারমধ্যে নুরুল কবির,সোহাগ ভাই,ছামির এরাও ছিল ফোরামে।ছামির সেসময় গায়ক সারোয়ার মাহিনের প্রতিষ্ঠা করা মাটির সুর সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক পরিষদের মডারেটর।অর্থাৎ যাঁরা যাঁরা সদস্য হতে রাজি ছিল তাঁদেরকে অ্যাড করেছিলাম।রবিউলকেও বলেছিলাম যুক্ত হতে কিন্তু সে রাজি হয়নি। সে বলেছিল “আমি রাজনীতি করিনা,করব না!আমি একজন স্বতন্ত্র লেখক”। তার কিছুদিন পরে জানতে পারলাম রবিউল ছাত্রলীগের কমিটি।রাজি না হওয়ার কারণ বুজি এটাই।সে মিথ্যা কথাটা না বলে যদি বলত ‘আমি ছাত্রলীগ করি’ তাহলে কি তার কোন ক্ষতি হত?তার বন্ধু রুবেলের সাথেও আমি এ বিষয়ে কথা বলেছি,রুবেলও বলেছে রবিউল রাজনীতি করে!কিন্তু আমি করিনা।’ তখন ত আ.লীগ সরকারের ক্ষমতার গদিতে ছিল আর ছাত্রলীগ- আ.লীগের অঙ্গসংগঠন।আমি যতটুকু রবিউলের কলাম পড়েছি তাতে কোন প্রতিবাদ দেখিনি।সেই স্বৈরাচার সরকারের অত্যাচারে মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে গেছিল। ২০২৩ সালের শেষের দিকে গেন্ডা, সাভার, ঢাকায় আমার সাথে ওয়ালিফ দল বিষয়ে আলোচনা করার জন্য দেখা করেছিল।তারপর থেকে ওয়ালিফ ঠিকমত দলকে সময় দিতে পারেনি,প্রায় সাত মাস গ্রুপটা অচল হয়ে থাকায় আমি ‘গণন্যায্য ফোরাম’কে বিলুপ্ত ঘোষণা করি। সেসময় বরিশালের লেখিকা সুমাইয়া ইসলাম নামের এক মেয়ের সাথে পরিচয় হয়েছিল,যার ফেসবুক আইডির নাম ছিল অখ্যাত লেখিকা। হাসান প্রকাশনীর ‘যে কথা হয়নি বলা’ যৌথ কাব্যগ্রন্থের মাধ্যমে আমার সাথে পরিচয় হয় তানিয়া অনন্যার সাথে।এরমধ্যে অনেক লেখকের সাথে আমার পরিচয় হয়েছিল,সবার নাম উল্লেখ করতে না পেরে আমি দুঃখিত। ‘তুমি রবে নীরবে’ যৌথ গ্রন্থে দুটো অপ্রকাশিত কবিতা প্রকাশ করতে হাসান ভাইয়ের কাছে পাঠাইছিলাম কিন্তু তিনি সেই দুটো পিডিএফে না তুলে আমার অন্য লেখা অর্থাৎ অতীতের প্রকাশিত লেখা পিডিএফে তুলে রাখছে, প্রকাশিত লেখা আবার প্রকাশিত করার কোন মানে হয়না,তাতে আমার লাভ কী!লেখা ত টাকা দিয়ে প্রকাশ করতে হয়।লেখক হওয়ায় বুজি অভিশাপ!কত মেধা খাটাতে হয়, পরিশ্রম করতে হয়,ভাবতে হয় এতে অনেক সময় ব্যয় এবং লেখাটি যে গ্রন্থে ছাপাব তাতে গ্রন্থ ছাপানোর জন্য লেখকের নিজেরই টাকা খরচ করা লাগে।তবে কোন কোন প্রকাশনী আছে যারা গ্রন্থ ছাপাতে অর্ধেক টাকা বহন করে,বাকি অর্ধেক লেখককে বহন করতে হয়!এগুলো প্রকাশনী বাজারে খুব কম।হাতে গণা কিছু প্রকাশনী আছে যারা মৌলিক লেখা গ্রন্থ ছাপানোর টাকা নিজেরাই বহন করে,তাঁদেরকে ত খুব কমই খুঁজে পাওয়া যায়।আজকাল পাঠক-পাঠিকার সংখ্যা কম কেন?অনেক গ্রন্থে রুচিশীল লেখা থাকে না, এটিও একটি কারণ। আমি পিডিএফ দেখে হাসান ভাইকে বলেছি ওগুলো প্রকাশিত লেখা আবার প্রকাশ করার কোন মানে হয়না,তাই আপনি অন্য লেখা অর্থাৎ অপ্রকাশিত কবিতা প্রকাশ করুন অন্য লেখা দিচ্ছি। তিনি বলেছেন সম্ভব না।’ এই জন্য আমি অভিমান ও রাগমিশ্রিত কণ্ঠে বলেছি আমার লেখা ছাপাতে হবে না, লআমার টাকা (সম্ভবত ৪৬০) আমায় ফেরত দিন।তিনি ফেরত দিতেও রাজি হয়েছে কিন্তু আজও ফেরত দেয়নি।আমাদের ত ‘উদীয়মান কবিদের জাগ্রত কলম’ যৌথগ্রন্থ দেখছেন,তার কিছু অভিজ্ঞতা শেয়ার করছি।যখন সোহাগ ভাই সহ আমি প্ল্যান করলাম একটা যৌথগ্রন্থ করার। আমরা চাইছিলাম সব কবিদের সহযোগিতায় গ্রন্থের কাজটা সম্পূর্ণ কাজটা সেরে ফেলতে,যেমন- সবে মিলে করি কাজ হারি জিতি নাহি লাজ! কিন্তু কোন কবি আমাদের সহযোগিতা করেনি।গ্রন্থের কাজ যখন অর্ধার্ধি তখন আমি সোহাগ ভাইকে বলেছিলাম, ভাই কেউ ত সহযোগিতা করছে না,তাহলে গ্রন্থ করার সিদ্ধান্তটা বদলে ফেলি!গ্রন্থ করতে ইচ্ছে করছে না।অনেকে এই গ্রন্থে লেখা দিয়ে অংশগ্রহণ করতে চাইছে কিন্তু এখনো কেউ অংশগ্রহণ করল না।’ জবাবে সোহাগ ভাই বলছে,”হাল ছেড়না রেজন,কেউ অংশগ্রহণ না করলেও আমরা দুজনেই বই করব!মানুষ চেনা কঠিন,তুমি মানুষ চেনার চেষ্টা কর।তুমি না তুফান?তুফানের গতিতে চলো।”