রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন বলেছেন, সরকার দেশের কারাগারগুলোকে সংশোধনাগারে রূপান্তর করেছে। বন্দিদের সুযোগ-সুবিধা যেটা প্রাপ্য তা যাতে তারা পায় সেজন্য রাজশাহী কারা প্রশিক্ষণ কেন্দ্র দৃষ্টিনন্দনভাবে নির্মাণ করা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার (১৯ সেপ্টেম্বর) বেলা পৌনে এগারোটায় নগরীর কারা প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ এস এম আনিসুল হকের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মোঃ শাহ্রিয়ার আলম, এমপি ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব মোঃ আবদুল্লাহ আল মাসুদ চৌধুরী।
দর্শনার্থীরাযেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও জাতীয় চার নেতার আত্মত্যাগ সম্পর্কে জানতে পারে সেজন্য ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারকে পূর্ণাঙ্গ জাদুঘরে পরিণত করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার এমনটা জানিয়ে রাসিক মেয়র বলেন, অতীতে জেলখানায় খাবারের মান, আবাসন ও চিকিৎসাব্যবস্থা খুবই নিম্নমানের ছিল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে বন্দিদের খাবার, আবাসন ও চিকিৎসাব্যবস্থা অনেক উন্নত হয়েছে।
দেশের উন্নয়নচিত্র তুলে ধরে খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদূরপ্রসারী দৃষ্টিভঙ্গি বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশকে উন্নত দেশে পরিণত করা আজ কোনো স্বপ্ন নয়। দেশের সর্বক্ষেত্রে উন্নয়ন আজ দৃশ্যমান।
এসময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রশংসা করে তিনি বলেন, অনেক ক্ষেত্রে অপরাধ সংগঠিত হওয়ার আগেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের আটক করে। দেশের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো দক্ষতার প্রমাণ দিয়ে জাতিকে অনেক বড় ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করছে বলে তিনি বক্তৃতায় উল্লেখ করেন
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মোঃ শাহ্রিয়ার আলম বলেন, প্রধানমন্ত্রীর উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার অংশ হিসেবে বাংলাদেশ কারা সদস্যদেরকে আধুনিক, দক্ষ ও প্রশিক্ষিত করে গড়ে তোলার জন্য প্রশিক্ষণকেন্দ্রগুলো প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। দেশের কারাগারসমূহে আগত বিপথগামী লোকদের সংশোধন এবং পুনর্বাসনের লক্ষ্যে দক্ষ জনশক্তি হিসেবে গড়ে তোলা হবে।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, যথাযথ প্রশিক্ষণের কোনো বিকল্প নেই। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে দক্ষ জনবল দরকার। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে কারা প্রশিক্ষণ অধিদপ্তর এগিয়ে যাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
উল্লেখ্য, পদ্মা নদীর উত্তর তীরে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগার এলাকায় ১৯৯৫ সালে কারা প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের কার্যক্রম আরম্ভ হয়। ২০১৫ সালের ৯ জুন রাজশাহী কারা প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের নির্মাণ প্রকল্প একনেক সভায় অনুমোদিত হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৬ সালের ২৪ নভেম্বর রাজশাহী কারা প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের নির্মাণকাজ শুরু হয়। মোট ৯৪ কোটি ১২ লাখ ৯৮ হাজার টাকা ব্যয়ে ৩৬ দশমিক ৬৯ একর জমির উপর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও কারা অধিদপ্তরের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে ২০২৩ সালের ৩০ জুন কারা প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটিরনির্মাণকাজ শেষ করে গণপূর্ত অধিদপ্তর।
নবনির্মিত রাজশাহী কারা প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে রয়েছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল, প্রশাসন ও একাডেমিক ভবন, এমআই ইউনিট ভবন, পুরুষ স্টাফ ও প্রশিক্ষণার্থী ব্যারাক, মহিলা স্টাফ ও প্রশিক্ষণার্থী ব্যারাক, অফিসার্স মেস, কমান্ড্যান্ট ও ডেপুটি কমান্ড্যান্টের বাসভবন, অফিসার্স কোয়ার্টার, গার্ড ভবন, মসজিদ, পাওয়ার হাউস, পাম্প হাউস, ট্রেনিং সেড, ক্যাফেটেরিয়া, পোডিয়াম, প্যারেড গ্রাউন্ড ও সুইমিং পুল।
এর আগে কারা প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের চত্বরে রাসিক মেয়র একটি নিমগাছ চারা এবং পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মোঃ শাহ্রিয়ার আলম একটি আমলকির চারা রোপণ করেন