দুর্গাপুর উপজেলার যুগিশো গ্রামের বয়েন উদ্দিন খামারুকে অ-মুক্তিযোদ্ধা দাবি করে তার সনদ বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী।
(১৩ সেপ্টেম্বর) বুধবার বিকেলে উপজেলার যুগিশো তোতারপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে প্রায় ঘণ্টাব্যাপী এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন যুগিশো গ্রামের শতাধিক লোক।
মানববন্ধনে নওপাড়া ইউনিয়নের ১ নম্বর যুগিশো ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুস সাত্তার মন্ডল বলেন, আমি ২৯ বছর ধরে এই ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছি। ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা বয়েন খামারু আমার সমবয়সী ছিল। তিনি কখনো মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেননি। বয়েন প্রতারণার মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধার জাল সনদ তৈরি করেছেন। তার দুই সন্তানকেও প্রতারণা করে চাকুরি দিয়েছেন। আমরা তার মুক্তিযোদ্ধার সনদ বাতিলের দাবি জানাচ্ছি। এছাড়া কোনো ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা যাতে সনদ তৈরি করে মুক্তিযোদ্ধা হতে না পারে সে ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
উপজেলা যুবলীগের ক্রীড়া সম্পাদক আলামিন বলেন, বয়েন মুক্তিযোদ্ধা না হয়েও তিনি এখন মুক্তিযোদ্ধা। এটা প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য লজ্জার ও অপমানজনক। কারণ বয়েন উদ্দিন রাজাকার পরিবারের সন্তান। বয়েনের বড় ভাই তালিকাভুক্ত রাজাকার ও বাবা মহসিন খামারু শান্তি কমিটির সদস্য ছিলেন। একজন অ-মুক্তিযোদ্ধা কীভাবে সরকারি ভাতা নেন ও সন্তানদের চাকরি দেন। সেটা তদন্ত সাপেক্ষে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানান তিনি।
এতে আরো বক্তব্য রাখেন নওপাড়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সিরাজুল ইসলাম, ১ নম্বর যুগিশো ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মকলেছুর রহমান, আবু কালাম, রবিউল ইসলাম প্রমুখ।
অভিযুক্ত বয়েন উদ্দিন খামারু সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, প্রতিপক্ষের লোকজন আমাকে সমাজে হেয়প্রতিপন্ন ও আমার সুনাম নষ্ট করতে এ ধরণের অভিযোগ করছেন। তাদের অভিযোগ সত্য নয় বলে দাবি করেন তিনি। এ বিষয়ে
জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আব্দুল করিম গণমাধ্যমকে বলেন, এ বিষয়ে একটি অভিযোগ এসেছে অফিসে। অভিযুক্ত এবং অভিযোগকারী উভয়ের তথ্য পর্যবেক্ষণ করা হবে। তারপর এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়ে সুপারিশ করা হবে।
এর আগে গত ৫ সেপ্টেম্বর মুক্তিযুদ্ধে অংশ না নিয়েও হঠাৎ মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় নাম আসায় বয়েন উদ্দিন খামারুর মুক্তিযোদ্ধার তালিকা থেকে নাম বাতিলের দাবিতে উপজেলা যুবলীগের ক্রীড়া সম্পাদক আলামিন রাজশাহী জেলা প্রশাসক, দুর্গাপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন ।