আরজত আতরজান স্কুলে দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় চাকরী হারালেন সহকারী শিক্ষক
কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি
কথায় আছে শিক্ষক হলো মানুষ গড়ার কারীগর ,আর সেই শিক্ষককে যদি দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার কারনে চাকরী হারায় তা শুনতে একটু হবাক হওয়া কথা৷এমনটিই ঘটেছে কিশোরগঞ্জ শহরের অবস্থিত পুরাতন বিদ্যাপীঠ আরজত আতরজান উচ্চ বিদ্যালয়ে৷জানা যায় স্কুলের সিনিয়র অস্থায়ী শিক্ষক মোঃজোনায়েদ হোসেন জুয়েল যিনি ২০০৫ সাল থেকে উক্ত স্কুলে নাম মাত্র বেতনে পাঠদান করে আসছে ৷জানা যায় নিয়োগ পরীক্ষার মাধ্যমে তাকে স্কুল কতৃপক্ষ নিয়োগ দেন ৷২০২৪ সালে ৫ই আগষ্ট ছাত্র আন্দোলন শুরু হয় সারা বাংলাদেশে ৷ঠিক সেই সময়ে কিশোরগঞ্জ আরজত আতরজান স্কুলের সকল ছাত্র ছাত্রীরা প্রধান শিক্ষকের দর্নীতি বিরুদ্ধে একদফা পদত্যাগ আন্দোলন শুরু করেন ৷আন্দোলনের পরিপেক্ষিতে কিশোরগঞ্জ ডিসি মহোদয় প্রধান শিক্ষককে দুর্নীতি দায়ে ও আরেকজন সহকারী শিক্ষককে আচরণের কারনে সাময়িক ভাবে বরখাস্ত করা হয় ৷পরবর্তীতে শর্তসাপেক্ষে পুনরাই তাদের নিয়োগ দেওয়া হয় ৷আন্দোলনের সময় ছাত্র ছাত্রীরা যেন স্কুল ক্যাম্পাসের কোন ক্ষতি না করতে পারে তখন সহকারী শিক্ষক জোনায়েদ হোসেন জুয়েল এর ভূমিকা ছিল প্রশংশানীয়৷ছাত্র ছাত্রীরা স্যারের কথা শুনত বলেই তখনকার পরিবেশে একাত্বতা ঘোষনা করেন তিনি৷অনুন্ধানে জানা যায় আরজত আতরজান স্কুলের বর্তমান প্রধান শিক্ষক তার পূর্ববতী স্কুল বিন্নাটি উচ্চ বিদ্যালয়ে দুর্নীতি বিষয়টি এলাকাবাসী ও সাবেক ছাত্রছাত্রীদের সাথে কথা বললে সত্যতা পাওয়া যায়৷এছাড়াও বর্তমান স্কুলের প্রধান শিক্ষক ২০১৭সাল থেকে যোগদান করার পর থেকেই তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন যেমন সাদা ভাউচারে দিয়ে বিল করা,নাম সংশোধনের নামে ৫০০০হাজার থেকে ৮০০০ টাকা নেওয়া,বহিঃভূত পাঠ্য বই স্কুল সিলিবাসে অন্তরভুক্ত করে প্রকাশনীর কাছ থেকে টাকা নেওয়া,নামে বেনামে ভূয়া ভাউচার দিয়ে টাকা তুলে নেওয়া,নিজের স্কুলে থাকার জন্য কমিটির অনুমোধন ছাড়াই লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ দেখিয়ে জেনারেল ফান্ড শুন্য করার গুরুতর অভিযোগ পাওয়া যায়৷এই কারনে ভুক্তভোগী সহকারী শিক্ষক দীর্ঘ দুই বছর কোন বেতন পাচ্ছে বলে জানা যায় ৷বকেয়া বেতন না দিয়েই কিভাবে এমন সিন্ধান্ত নেন প্রধান শিক্ষক তা ভুক্তভোগী শিক্ষকের জানা নেই ৷এই বিষয়ে স্কুলের সভাপতি এডিসি রেভিনিউ নাহিদ হাসানের যোগাযোগ করতে গেলে অফিসে পাওয়া যায়নি ৷এছাড়াও প্রধান শিক্ষককে ম্যানেস করে স্কুলের অনেক শিক্ষক স্কুলের ছাত্র প্রাইভেট পড়াচ্ছেন যা সরকারী নিয়মের বহিঃভূত যা কোন ভাবেই কাম্য না৷এমনকি অনুসন্ধানে জানা যায় স্কুলের লাইব্রেরীয়ান শিক্ষক কামররুজ্জামান স্কুলের পাশে একটি কিন্ডার গার্ডেন (বিদ্যাময়ী )ভাড়া নিয়ে কোচিং ব্যবসা খুলেছেন নিজের স্কুলের ছাত্রছাত্রী নিয়ে ৷এই বিষয়ে অনেক শিক্ষক চাকরী ভয়ে কথা বলতে সাহস পাচ্ছে না ৷নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন সিনিয়র শিক্ষককের সাথে কথা বললে তিনি একটি কথাই বলেন বর্তমান প্রধান শিক্ষক যোগদান করার পর আমরা দীর্ঘ ১৮ মাস ধরে স্কুল বেতন পাচ্ছি না৷যদি বিভাগীয় সঠিক তদন্ত করা হয় তবে কোথায় স্কুলের লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে তা বের করা সম্ভব হবে৷এই বিষয়ে সাবেক ম্যানেজিং কমিটিরক্ষ সদস্যদের সাথে কথা বললে তারাও স্কুল ২০১৭ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত একটি সচ্চ বিভাগীয় আর্থিক তদন্ত দাবি করছেন ৷এছাড়াও জানা যায় স্কুলের পাঠদান থেকে বিরত থাকতে সহকারী শিক্ষক জোনায়েদ হোসেন জুয়েলকে বলেন প্রধান শিক্ষক আবুবকর ছিদ্দিক৷এই বিষয়ে ভুক্তভোগী সিনিয়র শিক্ষক জোনায়েদ হোসেন জুয়েল বলেন অন্যায় ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলার কারনেই প্রধান শিক্ষক আমাকে নিয়মনীতি অমান্য করে স্কুলে পাঠদান থেকে আমাকে বিরত রেখেছেন ৷তিনি আরও বলেন আমি মানসিক ভাবে অনেক ভেঙ্গে পড়েছি কেননা একজন শিক্ষককের মূল সম্পদ হলো সম্মান আর সেই সম্মান হানি করেছেন প্রধানশিক্ষক সহ তার সাথে থাকা কিছু সিনিয়র শিক্ষক যারা প্রধান শিক্ষককের দুর্নীতি বিষয়ে কখনও প্রতিবাদ করেনি৷ভুক্তভোগী শিক্ষককের দাবি একটাই যেন তাকে তার শিক্ষকতা পেশা ফিরিয়ে দিয়ে পাঠদান করার ব্যবস্থার পাশাপাশি প্রধান শিক্ষককের দুর্নীতির বিষয়ে যেন বিভাগীয় তদন্ত করার ব্যবস্থা করা হয় ৷তিনি বলেন কেননা অন্যায় যে করে আর অন্যায় করার ক্ষেত্রে যারা সহায়তা করে দুইজনই সমান অপরাধী।