রাজশাহীতে ভয়াবহ ট্রেন দূর্ঘটনা আহত ৫।
রাজশাহী ব্যুরো ঃরাজশাহীতে ট্রেনের ধাক্কায় পিকআপের ড্রাইভার হেলপারসহ ৫ জন গুরুতর আহত হয়েছে। এই দুর্ঘটনার জন্য ট্রেনে হুইসেল না দেয়াকে দায়ী করে স্থানীয়রা বলছেন, এখন থেকে হুইসেল না দিলেই চালককে পাথর নিক্ষেপ করবে তারা।
০৩ নভেম্বর রবিবার দুপুর দেড়টার দিকে মহানগরীর কাদিরগঞ্জ গ্রেটাররোড সংলগ্ন রেলক্রসিং এ এই দুর্ঘটনা ঘটে। আহতরা হলেন নওগাঁ জেলার বদলগাছী এলাকার সহিদুর রহমানের ছেলে বাবর আলী, মশিউরের ছেলে সহিদুর, চাঁপাই নবাবগঞ্জের মুন্সিপাড়ার নূর নবীর ছেলে শামীম এবং সৈয়দ আলী ও নূর।
স্থানীয়রা জানান, হুইসেল না দিয়ে নিরবে, রাজশাহী রেলস্টেশন থেকে ছেড়ে যাওয়া চাঁপাইনবাবগঞ্জগামী দ্রুত গতির ট্রেন কাদিরগঞ্জ গ্রেটাররোড মসজিদ এলাকা দিয়ে পার হচ্ছিলো। এই সময় রেল ক্রসিং দিয়ে উপশহরের দিকে সবুজ রংয়ের একটি পিকআপ গাড়ী যাচ্ছিলো। ট্রেনটি অত্যান্ত দ্রুত গতিতে যাচ্ছিলো এবং এই জায়গায় পার হওয়ার সময় কোন ধরনের হুইসেলও দেয়নি। ফলে রেল ক্রসিং পার হতে যাওয়া পিকআপ গাড়ীটি দ্রুত সরে যেতে না পারায় জোরে ধাক্কা দিয়ে একটি হার্ডওয়্যারের দোকানে ঢুকিয়ে দেয়। এই সময় পিকআপ গাড়ীটি দুমড়ে মুচড়ে যায় এবং দোকানের অনেক মালামাল ক্ষয়ক্ষতি হয়। এত পিকআপের ড্রাইভার , হেলপারসহ আরো তিন জন গুরুতর আহত হয়। তাৎক্ষণিক ভাবে স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে রাজশাহী মেডেকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করে।
স্থানীয়রা জানান, এই গেটে রেলওয়ের পক্ষ থেকে কোন গেটম্যান নিয়োগ নেই। নিজ উদ্যোগে আমরা বাঁশ দিয়ে গেট ফেলার চেষ্টা করি। ট্রেন আসার বিষয়টি জানতে পারলে তাৎক্ষণিক গেট ফেলা হয় নইলে গেটটি অরক্ষিত থাকে। আজ ট্রেনটি পার হওয়ার আগে কোন হুইসেল দেননি। যার কারণে এই দুর্ঘটনাটি ঘটে গেছে।
নগরীরিতে রেলওয়ের কর্মরত গেইটম্যান ও স্থানীয়রা বলেন,জনবহুল ব্যাস্ততম নগরীর মধ্যদিয়ে দ্রুততম গতীর ট্রেন চলাচল করে।ট্রেন গুলো চলার সময় কোন হুইসেল দেয়া হয়না। নিরব ঘাতক যেন শিকার ধরার জন্য দ্রুত গতীতে ছুটছে। নগরীতে ট্রেন দূর্ঘটনার জন্য ট্রেনের হুইসেল না দেয়াকে দায়ী করছেন নগরবাসি।
স্থানীয়রা জানান,তারা নগরীতে ট্রেন চলাচলের সময় ট্রেনের হুইসেল ঘনঘন বাজানোর জন্য সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষকে বার বার জানালে কোন পদক্ষেপ নেননি।
এখন থেকে ট্রেনে হুইসেল না দিলে চালককে পাথর নিক্ষেপ করবেন বলে ক্ষিপ হয়ে অনেককে বলতে শুনা গেছে।
এছাড়া নগরীতে দূর্ঘটনা রোধে এলাকাবাসী দ্রুত এই দুর্ঘটনা রোধে গেটম্যান নিয়োগের দাবি জানান।
স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল মালেক জানান, রেল কর্তৃপক্ষ নিয়ম মেনে আশেপাশের রেলের জায়গা লীজ দেয় না। নিয়ম অনুযায়ী রেল লাইনের দুইপাশে ২৫ ফিট জায়গা ফাঁকা রেখে কোন স্থাপনা তেরী করতে হবে। তবে রেল কর্তৃপক্ষ এসব নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে লীজ দেয়। ফলে রেললাইনের দুইধারে অসংখ্য দোকানপাট ও বাড়ী ঘর তৈরী করা হচ্ছে। এছাড়া পশ্চিম রেলের কানুনগো এবং সার্ভেয়ার অর্থের বিনিময়ে অবৈধ দোকানপাট নির্মানে সহযোগীতা করে থাকে। ফলে এইসব দুর্ঘটনা ঘটছে।
দূর্ঘটনা এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা আরিফুল ইসলাম বলেন, রেল কর্তৃপক্ষের কোন কাজ করতে দেখা যায় না । বড় অফিসার রেললাইন পরিদর্শন করে না। বসে থেকে বেতন খায়। তারা মাঠের বেস্তত চিত্র দেখে তাদের জমি লীজ দিলে অবৈধ স্থাপনা গড়ে উঠতো না। ফলে এমন দুর্ঘটনাও ঘটতো না।
তিনি আরো বলেন, আমরা স্থানীয়রা কেউ নিরাপদ নই। গেটম্যান না থাকায় ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পারাপার হই। শুধুমাত্র ফজরের সময় শান্তিতে মসজিদে নামাজ পড়তে যেতে পারি । বাকি সময় রাস্তা পারাপারে ঝুঁকি থাকে। তিনি অভিযোগ করেন, রেলওয়ে কর্মকর্তাদের পকেটে শুধু টাকা গেলেই হলো তারা ভালোমন্দ না দেখে রেলের জায়গা গুলো অরক্ষিত রেখে লীজ প্রদান করছে। এলাকাবাসী দ্রুত এই স্থানে গেটম্যান নিয়োগ ও আশেপাশের অবৈধ স্থাপনা অপসারনের দাবি জানিয়েছেন।