রাবি রেলস্টেশন অবরোধ করেছেন শিক্ষার্থীরা : কোটা সংস্কার আন্দোলন ।
রাজশাহী ব্যুরো ঃ সরকারি চাকরিতে সব গ্রেডে অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল করে কোটাপদ্ধতি সংস্কারের এক দাবিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) রেল স্টেশন অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন শিক্ষার্থীরা। শুক্রবার (১২ জুলাই) বিকেল ৪টা ৫০ মিনিটের দিকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টেশনবাজারসংলগ্ন ঢাকা- রাজশাহী রেললাইন অবরোধ করেন তারা।
এর আগে বিকেল ৪ টা ১০মিনিটের দিকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন আন্দোলনকারীরা। মিছিলটি ক্যাম্পাসের প্যারিস রোড হয়ে বিভিন্ন আবাসিক হল ঘুরে ক্যাম্পাস সংলগ্ন স্টেশন বাজার এলাকায় যাওয়ার পর শিক্ষার্থীরা রেললাইন অবরোধ করেন। বিক্ষোভে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং রাজশাহী মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা অংশ নিয়েছেন। বিকাল সাড়ে ৫ টার দিকে এই প্রতিবেদন লেখার সময় শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ অব্যাহত আছে। এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার ১১ জুলাই সন্ধ্যা ৬টা থেকে সাড়ে ৯টা পর্যন্ত একই জায়গায় রেললাইন অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন। বৃষ্টি উপেক্ষা করেও তাঁরা আন্দোলন চালিয়ে যান।
বিক্ষোভ চলাকালে শিক্ষার্থীরা ‘আমার ভাইয়ের রক্ত, বৃথা যেতে দেব না’, ‘কোটা প্রথার বিরুদ্ধে, লড়াই হবে এক সাথে’, ‘সারা বাংলায় খবর দে, কোটাপ্রথার কবর দে’, ‘বঙ্গবন্ধুর বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই’, ‘লেগেছে রে লেগেছে, রক্তে আগুন লেগেছে’, ‘কোটা না মেধা, মেধা মেধা’, ‘কুমিল্লায় হামলা কেন, প্রশাসন জবাব চাই’, ‘রক্তের বন্যায়, ভেসে যাবে অন্যায়’, ‘আমার ভাই আহত কেন, প্রশাসন জবাব চাই’’জ্বোহা স্যারের স্মরণে, ভয় করিনা মরণে’, ‘দালালি না রাজপথ, রাজপথ রাজপথ’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
গত সোমবার থেকে সারাদেশের আন্দোলন কারীরা এক দফা দাবি জানিয়ে আসছেন। দাবিটি হলো, ‘সরকারি চাকরিতে সব গ্রেডে অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল করে সংবিধানে উল্লিখিত অনগ্রসর গোষ্ঠী ও বিশেষ চাহিদাসম্পন্নদের জন্য কোটাকে ন্যায্যতার ভিত্তিতে ন্যূনতম পর্যায়ে এনে সংসদে আইন পাস করে কোটাপদ্ধতি সংস্কার করতে হবে।’বিক্ষোভে অর্থনীতি বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘গতকাল সারাদেশের বিভিন্ন জায়গায় পুলিশ শিক্ষার্থীদের ওপর যে ন্যাক্কারজনক হামলা চালিয়েছেন, আমরা অবিলম্বে সেটার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার চাই।’
ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী সালাউদ্দিন আম্মার বলেন, মিডিয়ায় যতোই প্রচার করা হোক না কেন, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম হামলা হয়েছে কিন্তু সেটি সঠিক নয়। তিনি কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক কমিটির দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, গত মঙ্গলবার প্রথম রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী ছাত্রলীগের হামলার শিকার হন। সেই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে বিচার এবং ওই শিক্ষার্থীকে স্বসম্মানে হলে ফেরানোর জন্য প্রশাসনকে ব্যবস্থা নিতে বলেন। সারাদেশের সঙ্গে সমন্বয় করে তাঁরা একদফা দাবিতে আন্দোলন করছেন। তাঁরা সরকারি চাকরিতে সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ কোটা রেখে কোটা ব্যবস্থার যৌক্তিক সংস্কার চান।