২৪ ঘন্টার মধ্যে ক্লুলেস হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন, মোটরসাইকেল উদ্ধার, মূল আসামি গ্রেফতার
শহীদুল ইসলাম রুবেল ,
নেত্রকোণা প্রতিনিধি :
ডিজিটাল তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে নেত্রকোণার মোহনগঞ্জ উপজেলায় ২৪ ঘন্টার মধ্যে ক্লুলেস হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন, মোটরসাইকেল উদ্ধার ও মূল আসামি অন্তর আহমেদ শান্তকে (২১) গ্রেফতার করেছে মোহনগঞ্জ থানা পুলিশ। বৃহস্পতিবার (১৪মার্চ) গভীররাতে অন্তর আহমেদ শান্তকে খালিয়াজুরী থানার চাকুয়া ইউনিয়নের হারারকান্দি সুলতানপুর গ্রাম থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সে একই গ্রামের ছালেক মিয়ার পুত্র। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) মোঃ লুৎফুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, বৃহস্পতিবার সকালে স্থানীয় লোকজন মোহনগঞ্জ উপজেলার তেতুলিয়া গ্রামের পূর্ব পাশে দেওয়াজান বালু চরের পাশ দিয়ে হাওরে যাচ্ছিল। এ সময় চরের মধ্যে একটি মানুষ পড়ে থাকতে দেখে। দেখে মনে হয়, লোকটিকে দুর্বৃত্তরা জবাই করে তার পরনের জামা-কাপড় খুলে তাতে আগুন ধরিয়ে মুখটি পুড়িয়ে দিয়েছে। পরে স্থানীয়রা মোহনগঞ্জ থানা পুলিশে খবর দিলে পুলিশ এসে বিবস্ত্র অবস্থায় লাশটিকে উদ্ধার করে। অজ্ঞাত যুবকের গলা কাটা, মুখমণ্ডল পোড়ানো ও বিবস্ত্র অবস্থায় মরদেহটি উদ্ধার করে সুরতহাল রিপোর্ট শেষে ময়নাতদন্তের জন্য আধুনিক সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করে। পরে নেত্রকোণা পুলিশ সুপার ফয়েজ আহমেদ মহোদয়ের সার্বিক তত্বাবধানে ও থানা পুলিশের তৎপরতায় এবং তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় হত্যা হওয়া অজ্ঞাত যুবকের পরিচয় ও ঘটনার সাথে জড়িতদের ধরতে অভিযানে নামে (পিবিআই) ও মোহনগঞ্জ থানা পুলিশ। পরে লাশের পরিচয় শনাক্ত করে পুলিশ ব্যুরো ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) নিহত যুবকের নাম সাইফুল ইসলাম (৩৫)। সে ঝিনাইদহ জেলার কোটচাঁদপুর উপজেলার আব্দুস সামাদের ছেলে। সে পেশায় ভাড়ায় বাইক রাইডার ছিলো। পরিচয় পাওয়ার পরপরই হত্যার ২৪ ঘন্টার মধ্যে ক্লুলেস হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন, মোটরসাইকেল উদ্ধার ও মূল আসামি অন্তর আহমেদ শান্তকে (২১) খালিয়াজুড়ি থেকে গ্রেফতার ও মোটরসাইকেল উদ্ধার করে মোহনগঞ্জ থানা পুলিশ।
তিনি আরও জানান, ভিকটিম সাইফুল ঢাকার মিরপুরে বসবাসের পাশাপাশি ভাড়ায় মোটিরসাইকেল রাইড শেয়ারিং করে জীবিকা নির্বাহ করতো। চলতি বছরের (১৩ মার্চ) ভিকটিম সাইফুল ঢাকা থেকে তার নিজের মোটরসাইকেল ভাড়ার চুক্তিতে মাসুক ও ফয়সাল নামে দুই জন ব্যক্তিকে নেত্রকোণা নিয়ে আসে এবং (১৪ মার্চ) নেত্রকোণা জেলার মোহনগঞ্জ থানাধীন ৩ নং তেতুলিয়া ইউনিয়নের হানবীর গ্রামের তেল্লা বালুচরে ভিকটিম সাইফুল এর গলাকাটা ও মুখমণ্ডল আগুনে পোড়া লাশ পাওয়া যায়।পরবর্তীতে অন্তর আহমেদ শান্তকে জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ডের ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে এবং ঘটনার সাথে জড়িত অন্যান্য আসামীদের নাম প্রকাশ করে। অন্তরকে জিজ্ঞাসাবাদে আরও জানা যে, সে এবং ঘটনার সাথে জড়িত অন্যান্য আসামীরা গত ১০ দিন যাবত একটি মোটরসাইকেল হস্তগত করার জন্য পরিকল্পনা করতে থাকে। পরবর্তীতে গ্রেফতারকৃত অন্তর ও অন্যান্য আসামীরা পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী ঢাকা থেকে ভিকটিমের মোটরসাইকেল ভাড়া নিয়ে এসে একে অপরের যোগসাজশে ভিকটিমকে হত্যা করে লাশ ফেলে রেখে মোটরসাইকেল নিয়ে পালিয়ে যায়। ঘটনার সাথে জড়িত অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতার এর চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।