নাটোরে চাঁদা দিতে না পারায় দাফন হলো না গৃহবধূর লাশ।
__________রাজশাহী ব্যুরো
নাটোরের বড়াইগ্রামে কবরস্থান কমিটির চাহিদামতো চাঁদা দিতে না পারায় কবরস্থানে জিয়াসমিন বেগম (৩২) নামে এক গৃহবধূর লাশ দাফন করতে দেওয়া হয়নি। পরে বাধ্য হয়ে বাড়ির ভিটার এক পাশে লাশটি দাফন করা হয়েছে।
গৃহবধূ জিয়াসমিন উপজেলার বড়াইগ্রাম ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর গ্রামের লোকমান হোসেন ফকিরের বড় মেয়ে এবং গোয়ালিফা গ্রামের মালয়েশিয়া প্রবাসী সমজান আলীর স্ত্রী।
স্থানীয়রা জানান, পারিবারিক কলহের জেরে বৃহস্পতিবার ২২ ফেব্রুয়ারি রাতে জিয়াসমিন বাবার বাড়িতে কীটনাশক খেয়ে আত্মহত্যা করেন। শুক্রবার ২৩ ফেব্রুয়ারি তার লাশ দাফনের জন্য সভাপতির অনুমতি নিয়ে স্বজনরা লক্ষ্মীপুর সামাজিক কবরস্থানে কবর খনন করেন। জুমার নামাজের পর জানাজার সময়ও নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু খনন শেষ হলে কবরস্থান কমিটির লোকজন ইতোপূর্বে সদস্য না হওয়ায় জিয়াসমিনের বাবার কাছে পাঁচ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন। কিন্তু আর্থিক অনটনের কারণে তিনি চাঁদা দিতে না পারায় তার মেয়েকে খনন করা কবরে দাফন করতে বাধা দেন তারা।
এ নিয়ে সারাদিন দেন দরবার করেও কাজ না হওয়ায় সন্ধ্যায় বাধ্য হয়ে বাড়ির ভিটার এক পাশে পুনরায় কবর খনন করে তার লাশটি দাফন করা হয়।
শনিবার ২৪ ফেব্রুয়ারি সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, লক্ষ্মীপুর সামাজিক কবরস্থানে খনন করা কবরটি এখনো রয়েছে। সেখানে লাশ দাফন করা হয়নি। এ সময় স্থানীয় লোকজন কবরস্থান কমিটির এমন কর্মকাণ্ডে সংবাদকর্মীদের কাছে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
জিয়াসমিনের চাচা আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আমার ভাই কবরস্থানের সদস্য না হলেও আমি সদস্য। তাই আমি নিজে চাহিদামত চাঁদা দেওয়ার জন্য কয়েকদিন সময় চেয়ে সভাপতিসহ অন্যদের কাছে লাশ দাফনের অনুমতি দিতে অনুরোধ করেছিলাম। কিন্তু তারা আমাদের কোনো কথাই শুনেননি।
কবরস্থান পরিচালনা কমিটির সভাপতি জালাল উদ্দিন গণমাধ্যমকে জানান, কবরস্থানে লাশ দাফন করতে হলে আগে সদস্য হয়ে চাঁদা দিতে হয়। তারা সেটা করেননি। তাছাড়া গ্রামে আরেকটি কবরস্থান থাকায় তাদের সেখানে লাশ দাফনের পরামর্শ দিয়েছি। তবে কবর খননের অনুমতি দিয়েও পরে দাফন করতে দেননি কেন জানতে চাইলে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি