রাজবাড়ীর ধাওয়া পাড়া ফেরীঘাটে চলছে দফাঁয় দফাঁয় চাঁদাবাজি !
মোঃ সুজন খন্দকার,স্টাফ রিপোর্টার ঃ রাজবাড়ীর ধাওয়া পাড়া টু নাজিরগঞ্জ ফেরীঘাটে চলছে দফায় চাঁদাবাজির দৃশ্য । এযেন হরী-লুটের কারখানা। যে যেমন পারছে আদায় করছে চাঁদা। এ ঘাটের স্পিরিট বোর্ডের মাধ্যমে যাত্রী পারাপারে জন্য বিআইডব্লিউটিএ নির্ধারিত কোন ভাড়া না থাকায়, যাত্রীদের জিম্মি করে ইচ্ছে মত ভাড়া আদায় করছেন স্পিড বোট মালিক কর্তৃপক্ষ।
বিআইডব্লিউটিএ সুত্রে জানা যায়,এই নৌপথের ধাওয়া পাড়া হইতে নাজিরগঞ্জ ফেরীঘাট পর্যন্ত দুরত্ব সর্বোচ্চ ৭ থেকে ৮ কিলোমিটার। সেই তুলনায় প্রতি কিলোমিটার ভাড়া ১০ টাকা হারে সর্বোচ্চ নিম্ন ৭০ থেকে সর্বোচ্চ ৮০ টাকা হওয়ার কথা। অথচ স্পিড বোট মালিক সমিতি নামধারী একটি প্রভাবশালী চক্র, তাতে ৪০ থেকে ৫০ টাকা বাড়িয়ে প্রতিটি যাত্রীর কাছ থেকে এক প্রকার জোরজবরদস্তি মাধ্যমে আদায় করছেন ১২০ টাকা করে। এতে যাত্রীরা অসহায় হয়ে বাড়তি টাকা দিতে বাধ্য হচ্ছেন । আর প্রতিটি ট্রাকগাড়ি হতে সরকার নির্ধারিত টিকেটের মুল্য নেওয়ার থাকলে, নানা অযুহাত দেখিয়ে ট্টাক প্রতি সর্বনিম্ন ২০০ থেকে সর্বোচ্চ ৪০০ টাকা অতিরিক্ত আদায় করেছেন বিআইডব্লিউটিসির ধাওয়া পাড়া ও নাজিরগঞ্জ ঘাট কর্মচারীরা। এছাড়াও পল্টন চার্জের ইজারা অনুসারে প্রতিটি ছোট/বড় ট্রাক,বাস,লরি হতে প্রতি ৭৫ টাকা চার্জ আদায় করার কথা থাকলেও,তা ২৫ টাকা বাড়িয়ে ১০০ টাকা আদায় করছে পল্টন চার্জ ইজারাদার। যা রীতিমতো প্রকাঁশ্য চাঁদা নয় বরং ডাকাতি।
বুধবার ২৭শে ডিসেম্বর দুপুরে সরজমিনে গিয়ে প্রতিবেদকের ক্যামেরায় ধরা পড়ে এমন দৃশ্য। এ সময় সাংবাদিক উপস্থিতি টের পেয়ে দূরত্ব ঘটনা স্থল থেকে ছুটকে পড়েন তারা।
এ নৌরুটে চলাচলকারী প্রতিটি চালক ও যাত্রীরা অভিযোগ করে বলেন,তারা শুধু চাঁদাবাজির’ই স্বীকারই নয়,বরং কোন কোন সময় বাড়তি টাকা দিতে গড়িমসি করলে গাঁয়ে হাত পর্যন্ত তুলে এরা।
এবিষয়ে ধাওয়া পাড়া বিআইডব্লিউটিসির ঘাট ব্যবস্থাপক মোমেন এর সাথে কথা হলে তিনি জানান, সরকার নির্ধারীত টিকেট মুল্যের বাহিরে অতিরিক্ত টাকা নিচ্ছেন না তারা। তবে স্পিডবোর্ডে মালিক পরিচয় দানকারী মিরাজ, ভাড়া আদায়ের মুরি বই দেখিয়ে অতিরিক্ত ভারা আদায় করার কথা স্বীকার করেছে। পরে তিনি বলেন,বিআইডব্লিউটিএ ধাওয়া পাড়া ও নাজিরগঞ্জ ঘাটের ইনচার্জ ওখলি মৌখিকভাবে ১০০ টাকা ভাড়া আদায় করার কথা বলে দিয়েছেন। কিন্তু খরচ বেশি হওয়া তা ২০ টাকা বাড়িয়ে ১২০ টাকা করে আদায় করছি।
যেখানে বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ এখান পর্যন্ত স্পিড বোটের ভাড়াই নির্ধারণ করেনি, সেখানে বিআইডব্লিউটিএ এর ধাওয়াপাড়া ও নাজিরগঞ্জ ঘাটের ইনচার্জ ওখিল কিভাবে স্পিডবোর্ড মালিকদের যাত্রী প্রতি ১০০ টাকা ভাড়া নিতে বলেন, এমন প্রশ্নের কোন সঠিক উত্তর দিতে পারেন’নি বিআইডব্লিউটিএ এর এই ঘাট কর্মকর্তা ওখিল। পরে তিনি সমস্ত কথা স্বীকার করে বলেন,আমি স্পিড বোট মালিকদের মৌখিক ভাবে যাত্রী প্রতি ১০০ টাকা করে ভাড়া নিতে বলেছিলাম। কিন্তু তারা তার থেকেও অতিরিক্ত ২০ টাকা ভাড়া বেশি ভাড়া আদায় করছে। যা বেআইনি। স্পিডবোর্ড চালক দের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় ও নিয়ম শৃঙ্খলা ভঙ্গ করার জন্য আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ যেন শুধু চাদাবাজির ঘটনা নয়। স্পিডবোটে যাত্রী পারে পারে মানা হচ্ছে না কোন নিয়মকানুন। প্রতিটি স্পিডবোর্ডে চালক সহ মোট ১১জন যাত্রী ও লাইফ জ্যাকেট পরিধান করে পারাপারের কথা থাকলেও। বাস্তবে দেখা গিয়েছে উল্টো চিত্র ১৮ জন যাত্রী নিয়ে ছেড়ে যাচ্ছে প্রতিটি স্পিড বোট। কারোই নেই কোন লাইফ জ্যাকেট। এতে এক প্রকার মৃত্যু ফাঁদে পরিণত হয়েছে ধাওয়া পাড়া টু নাজিরগঞ্জ ঘাটে স্পিডবোটের যাত্রী পারাপারের ব্যবস্থা।