স্টাফ রিপোর্টার, মোঃ রাজিবুল ইসলাম।
মানবতার আইকন জনাব অধ্যাপক নুরুল ইসলাম দেশে স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচীতে প্রথম ব্যক্তি হিসেবে রক্তদান করেন। তারপর ১৯৭৮ সাল থেকে স্বেচ্ছায় রক্তদান কার্যক্রমে মানুষকে উৎসাহিত করতে প্রতি বছর ২রা নভেম্বর স্বেচ্ছায় রক্তদান দিবস পালিত হয়।
১৯৯৬ সালে দিবসটি প্রথম জাতীয় দিবস হিসেবে পালন করা হয়।
আজ জাতীয় রক্তদান ও মরণোত্তর চক্ষুদান দিবস।
হিমোগ্লোবিনের অভাব অথবা থ্যালাসেমিয়া রোগের কারণে অনেক মানুষ রক্ত শুন্যতায় ভোগে। তখন তাদের বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বন হয় অন্যের রক্ত। এই রক্ত যেহেতু তৈরি করা যায়না, সেহেতু আপনার আমার রক্তদানের উপরই নির্ভর করে তাদের বেঁচে থাকতে হয়। এছাড়া বিভিন্ন হাসপাতালে বা ক্লিনিকে বিভিন্ন ধরণের চিকিৎসায় প্রচুর রক্তের প্রয়োজন হয়। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে এখনও বাংলাদেশে রক্তের অভাবে অনেক রোগী মারা যায়। তবে আশার কথা এখন সেচ্ছাসেবী প্লাটফর্মে হাজারো সেচ্ছাসেবক রক্তযোদ্ধা, রক্তদাতা, মানবদরদী ভাই বোনদের মানব সেবামূলক কার্যক্রম, ফ্রি রক্তের গ্রুপ নির্নয় কর্মসূচি ও বিভিন্ন প্রচার প্রচারনার কারনেই অনেকেই রক্তদান করতে এগিয়ে আসছে।
রক্তদানের বেশ কিছু উপকারিতা রয়েছে।
১৮ থেকে ৬৫ বছর বয়সী যেকোন সুস্থ মানুষ যাদের ওজন ৪৫ কেজির বেশি তারা প্রতি চার মাস পর পর রক্তদান করতে পারেন। রক্তদান না করলেও তিন মাস পর পর মানবদেহে নতুন রক্ত তৈরি হয় এবং আগের রক্ত কনিকাগুলো এমনিতেই মারা যায়। রক্তদান করলে শরীরের মধ্যে অবস্থিত ‘বোন ম্যারো’ নতুন কনিকা তৈরির জন্য শক্তি পায়। রক্তদানে শরীরে লোহিত কনিকা গুলোর কর্মচাঞ্চল্য বেড়ে যায়।
নিয়মিত রক্তদানে রক্তের কোলেষ্টেরলের উপস্থিতি কমাতেও সাহায্য করে। স্বেচ্ছায় রক্তদানের মাধ্যমে মানুষ বিনামূল্যে জানতে পারে নিজের শরীরে হেপাটাইটিসি-বি, হেপাটাইটিস-সি, সিফিলিস, ম্যালেরিয়া এবং এইচআইভি (এইডস) এর মতো জটিল কোনো রোগ রয়েছে কিনা। সবচেয়ে বড় কথা হলো, রক্তদানের মাধ্যমে একজন মুমূর্ষু মানুষকে বাঁচানোর মতো কাজে শরিক হতে পেরে নিজের মানসিক তৃপ্তি মেলে। বর্তমানে প্রচার প্রচারণা ও সচেতনতা বৃদ্ধির ফলে আমাদের রক্ত দাতার সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। সাভার রানা প্লাজা ট্রাজেডি থেকে শুরু করে এই পর্যন্ত বাংলাদেশের বিভিন্ন দুর্ঘটনা ও ট্রাজেডিতে আমরা দেখেছি মানুষ লাইন ধরে রক্তদান করছে। এতে রক্ষা পেয়েছে অসংখ্য মানুষের প্রাণ।
বর্তমান পেক্ষাপটে দেশের সকল হাসপাতালে প্রতিদিন বিভিন্ন রোগীর রক্ত শূন্যতা ও অপারেশনের ক্ষেত্রে অসংখ্য রোগীর জন্য রক্তের প্রয়োজন হয়। সেই রক্তের প্রয়োজন মিটিয়ে দিচ্ছে সেচ্ছাসেবী রক্তদাতারা।
দৈনিক নয়া কন্ঠ ও ম্যান ফর ম্যান ফোর্স এর পক্ষ থেকে দেশ বিদেশে থাকা সকল সেচ্ছাসেবক, রক্তযোদ্ধা, রক্তদাতা, মানবদরদী ভাই বোনদের কৃতজ্ঞতার সাথে জানাই মানবতার শুভেচ্ছা।