রংপুরে দূর্গাপূজাকে ঘিরে মিস্টির দোকানে ভিড় জমাচ্ছেন ক্রেতারা।
এনামুল হক স্বাধীন, রংপুর ব্যুরো প্রধান:
সারাদেশের ন্যায় রংপুরেও উৎসব মূখর পরিবেশে উদযাপিত হচ্ছে হিন্দু ধর্ম্বালম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয় দূর্গাপূজা। এই উৎসবকে ঘিরে আনন্দ-উচ্ছাসে মাতোয়ারা হয়ে পড়েছে শিশু-কিশোর, যুবক ও বৃদ্ধরা।
গত শনিবার হয়েছে মহাসপ্তমী। রোববার হচ্ছে কুমারি পূজা। এদিকে এ শারদীয় পূজাকে ঘিরে মিস্টির দোকানগুলোতে ভিড় জমাচ্ছেন ক্রেতারা। তবে দাম কিছুটা বাড়ায় মিস্টি জাতীয় জিনিসপত্র কিনতে পারছেন না অনেকেই। সাধ্যের বাহিরে দাম বাড়ায় পরিমাণে কম কিনে অনেকেই চাহিদা মেটাচ্ছেন। এর ফলে অনেকেই বিপাকে পড়েছেন।
সরেজমিনে নগরীর পায়রা চত্বর, মাহিগঞ্জ, সাতমাথা, মর্ডাণ মোড়, লালবাগ, শাপলা চত্বরসহ জেলার মিঠাপুকুর, শঠিবাড়ি, ভেন্ডবাড়ি, বৈরাতি, পীরগাছা, চৌধুরানী, ইটাকুমারি, কাউনিয়া, তারাগঞ্জ, বদরগঞ্জ সহ বিভিন্ন এলাকায় শারদীয় দূর্গাপূজা জমে উঠেছে। মানুষজন উৎসব মূখব পরিবেশে এসব পূজা মন্ডপে যাচ্ছেন। এবার নগরীতে ১৫৭টি ও জেলার আট উপজেলায় ৮০৬টি মন্ডপে পূজা হচ্ছে।
শারদীয় দূর্গাপূজার অন্যতম অনুসঙ্গ হচ্ছে মিস্টি। মন্ডপে দুর্গোৎসব উৎসবের আমেজ চমচম। এছাড়াও রসমালাই সন্দেশ ও জিলাপিসহ নানা প্রকার মিষ্টি কিনতে ক্রেতারা ভিড় করছেন বিভিন্ন দোকানে। এতে করে দোকানী ও কারিগররাও ব্যস্ত সময় পার করছেন।
হিন্দু ধর্মালম্বীয় ভক্তরা জানান, তাদের কাছে পুজো মানেই নানা স্বাদের মিষ্টি। বাড়িতে জামাই, মেয়ে নাতি, পুতিসহ সকল অতিথি আপ্যায়ন হয় হরেক রকম মিষ্টি দিয়ে এছাড়াও থাকে নাড়ু, মুড়ি, মুড়কি। তবে দাম বেশির কারনে তারা অখুশি। তারা আরো জানান, দেবীর বোধন থেকে বিসর্জন সবখানেই মিস্টি প্রয়োজন। তবে এবার দাম বেড়ে যাওয়ায় অনেকেই বিপাকে পড়েছেন।
নগরীর জিএল রায় রোর্ডের পাবনা সুইটসের মালিক সুনিল চন্দ্র রায় জানিয়েছেন, পূজা উপলক্ষে আগের চেয়ে মিষ্টি বিক্রি বেড়েছে।
ক্রেতারা জানান, পূজায় প্রতিদিনই নানা প্রকারের মিষ্টির প্রয়োজন। পূজামন্ডপ আর বাসায় যেখানেই হোক এ আয়োজনের অন্যতম অনুষঙ্গ মিষ্টি। পূজার থালা থেকে শুরু করে অতিথি আপ্যায়নে- মিষ্টি ছাড়া পরিপূর্ণতা লাভ পায়না।
দোকানীরা জানান, পূজায় মিষ্টির চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় নানান স্বাদের মিস্টি তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন মিষ্টি কারিগররা। কারিগররা মালাই রসমলাই, ক্ষীর কদম্ব, সন্দেশ, কাঁচাগোলা তৈরিতে ব্যস্ত সময় করছেন। চিনি, ময়দা, ডালডা, ছানা, গুঁড়াদুধের দাম বৃদ্ধির কারনে মিস্টির দাম কিছুটা বেড়েছে।
নগরীর জাহাজ কোম্পানী এলাকার বেসরকারি চাকুরিজীবি অলক নাথ জানান, পূজার আনন্দ বাড়িয়ে দিতে মিষ্টির বিকল্প নেই। বাসায় অতিথি আসলে মিষ্টি দিয়ে অ্যাপায়ন করা হয় ।
রংপুর সদরের হরিদেবপুর ফকিরপাড়া এলাকার ভবেশ চন্দ্র রায়, মিঠাপুকুরের জয়রাম এলাকার সবুজ চন্দ্র রায় ও নগরীর মর্ডাণ মোড় এলাকার সুভাষ চন্দ্র বর্মন বলেন, এই উৎসবের অন্যতম গুর”ত্বপূর্ণ উপাদান হল মিষ্টি। মিষ্টিমুখ ছাড়া উৎসব বেমানান। প্রতি বছরই পূজায় মিষ্টির চাহিদা বাড়ে। রসগোলা, নারিকেলের নাড়ুসহ নানান রকমের মিষ্টি কোন কোন বাড়িতে তৈরি হয়। আবার দোকান থেকে কোনাও হয়।
এব্যাপারে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের রংপুর জেলা সভাপতি সুশান্ত ভৌমিক জানান, ষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে এ দুর্গোৎসব শুরু হয়েছে। প্রতিবারের মতো এবারও রংপুর মহানগরৗ ও জেলার আট উপজেলায় পালিত হচ্ছে শারদীয় দুর্গোৎসব। বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে ৫ দিনের এ মহোৎসব। এদিন সকাল থেকে সকল মন্ডব এলাকা মুখর থাকবে বলে তিনি জানান।