রাজবাড়ী সদর উপজেলা মূলঘর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ওহিদুজ্জামান সাময়িক বরখাস্ত
রাজবাড়ী জেলা প্রতিনিধিঃ ছাব্বির হোসেন বাপ্পি,
এক নারীর ব্যক্তিগত চরিত্রে আঘাত করে ওই নারীকে হত্যা চেষ্টা মামলার দুই জন আসামির পক্ষে প্রত্যয়নপত্র দেয়ার অভিযোগে রাজবাড়ী সদর উপজেলার মুলঘর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ওহিদুজ্জামানকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার বিকালে বরখাস্তাদেশ হাতে পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন ওহিদুজ্জামান।
ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে রাজবাড়ীর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের স্থানীয় সরকার শাখার উপ-পরিচালক আসাদুজ্জামান রিপন জানিয়েছেন, স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে ইউপি চেয়ারম্যান ওহিদুজ্জামানকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবারই ওহিদুজ্জামানের হাতে বরখাস্তাদেশ তুলে দেয়া হয়েছে। তিনি আরো বলেন, এক নারীর ব্যক্তিগত চরিত্রে আঘাত করে ওই নারীকে হত্যা চেষ্টা মামলার দুই জন আসামির পক্ষে প্রত্যয়নপত্র দেবার অভিযোগ রয়েছে ইউপি চেয়ারম্যান ওহিদুজ্জামানের বিরুদ্ধে। যে কারণে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।জানাগেছে, রাজবাড়ী সদর উপজেলার পূর্ব মূলঘর গ্রামের মোঃ মওদুদ মিয়ার স্ত্রী মোঃ বিউটি আক্তার বৃষ্টি ইউপি চেয়ারম্যান ওহিদুজ্জামানের বিরুদ্ধে স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব বরাবর এই অভিযোগ করেছিলেন। ওই অভিযোগে বিউটি জানিয়েছিলেন, ২০২২ সালের ২ মার্চ রাতে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে একই গ্রামের মৃত করিম মিয়ার ছেলে এহতেশামুল হক ফারুক (৫৫) ও আমিনুল ইসলাম সরদারের ছেলে ফরিদ সরদার (৪৭) তার ঘরে প্রবেশ করে হত্যার উদ্দেশ্যে গলাকেটে মারাতকভাবে আহত করে। ওই ঘটনায় একই বছরের ৮ মার্চ বিউটির শাশুরি মোসলেমা পারভীন বাদী হয়ে ফারুক ও ফরিদকে আসামি করে রাজবাড়ী থানায় একটি হত্যা চেষ্টা মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় একই বছরের ২৫ এপ্রিল আসামিরা রাজবাড়ীর আদালতে হাজির হলে আদালত তাদের জামিন আবেদন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠান। পরবর্তীতে আসামিরা জামিন পাবার লক্ষে ইউপি চেয়ারম্যান ওহিদুজ্জামানের স্বাক্ষর যুক্ত একটি প্রত্যয়নপত্র আদালতে প্রদান করে। যে প্রত্যয়নপত্রে বিউটির ব্যক্তিগত চরিত্রে আঘাত করার পাশাপাশি একটি তদন্তধীন মামলা দিয়ে আসামিদের পক্ষে নিঃশর্ত মুক্তি কামনা করা হয়েছে। এছাড়া তিনি ওই ঘটনার পর তাকে নিয়ে সাংবাদিকদের কাছেও কুরুচীপূর্ণ এবং অসামাজিক ভিডিও বক্তব্য প্রদান করে। যা কিনা ইউনিয়ন পরিষদ আইন ২০০৯-এর ধারা ৩৪ উপধারা ৪ এর (ঘ) অনুযায়ী একজন চেয়ারম্যান শপথ ভঙ্গ করার সামিল। যে কারণে তিনি স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব বরাবব একটি অভিযোগপত্র প্রদান করেন। ইউপি চেয়ারম্যান ওহিদুজ্জামান জানিয়েছেন, ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোগতা ভুল বশত ওই প্রত্যয়নপত্রে কিছু শব্দ লিখে ফেলে। বিষয়টি লিখিত ভাবে উদ্যোগতা স্থানীয় সরকার বিভাগে অবহিতও করেছে। তিনি আরো বলেন, তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্তের পাশাপাশি দশ দিনের মধ্যে কারণ দর্শনোর জবাব প্রদানের জন্যও নির্দেশ দেয়া হয়েছে।