আদিযুগ থেকেই রাজনীতি ও মতাদর্শের ব্যবধান বা দুরত্ব সর্বত্রই কমবেশী বিদ্যমান ছিল । মানব সভ্যতা বিকাশের পুর্বে বিভিন্ন অন্চলের জনগোষ্ঠী গোত্রে গোত্রে বিভাজন হয়ে সমাজে শক্তি প্রতিষ্ঠা বা আধিপত্য বিরাজ করত । এমনকি বনে ভাদরে শক্তিশালী পশুরা রাজত্ব করত , ছোট ও দুর্বল পশুরা ওদের আহারের উপকরন হত অবশ্য এ রীতি পশু সমাজে অদ্যবধি অব্যাহত বৈকি ।
রেনেসাঁর যুগে মানুষের উন্নততর জীবন যাপন ( better living ) বোধ থেকে পারস্পরিক নির্ভরশীলতা ও শ্রদ্বা , সামাজিক বন্ধন সহ নানা আচার প্রতিষ্ঠা যা পরবর্তীতে মুল্যবোধ, প্রথা আকারে সমাদৃত হয় ।মুসলিম সভ্যতার ইতিহাস ও অনেক প্রাচীন । তাছারা বৌদ্ধ , হিন্দু , খ্রীষ্টান ও অন্যান্য বিলিভারদের মুলমন্ত্র ছিল সমাজে সহাবস্থান , সম্মানবোধ , ভাল কাজের আদেশ ও মন্দ কাজের নিষেধ ও সর্বোপরি সৎ বা আদর্শিক জীবন যাপন । আমরা জানি আদিকাল থেকে শয়তান বা ইবলিশ এই আদর্শিক অবস্থান থেকে মানবকুলকে হঠানোর কাজে চ্যালেন্জ হিসেবে কাজ করছে । ফলশ্রুতিতে আদি মানব হযরত আদম আ: ও বিবি হাওয়াকে শয়তানের ধোকার ফলে নিষিদ্ধ ফল খাওয়াতে বেহেস্ত থেকে মর্ত্যের পৃথিবীতে আসতে হলো । এদিকে আর কথা বলতে চাইনা । তবে আধুনিক যুগে এনালগ থেকে ডিজিটাল , স্মার্ট যুগ , চতুর্থ শিল্প বিপ্লব , নারীর ক্ষমতায়ন এসব নিয়ে ও হৈচৈ কম নয় , যা আমাদের প্রজন্মের স্বার্থে এগিয়ে নিতে হবে, এব্যাপারে বাংলাদেশের সফল রাষ্ট্রনায়ক জননেত্রী শেখ হাসিনা এক ধাপ এগিয়ে আছেন বলে বিজ্ঞজনের মতামত ।
মুলকথায় এসে বলতে চাঁই , রাষ্টবিজ্ঞান বা রাজনীতি বিজ্ঞান তার ব্যাখ্যায় রাষ্ট্র গঠন , সমাজ গঠন , বিবর্তন সহ নানা জ্ঞানগর্ভ আলোচনা করেছে যা আমাদের শিক্ষার প্রধান উপাদান । সমাজবিজ্ঞানীরা মানুষের আচার আচরন , শিক্ষা , মুল্যবোধ , সভ্যতা ও পরিপুর্ন জীবনবোধ সম্পর্কে আলোচনা করছেন যা আমাদের জানার বাইরে নয় । সভ্যতার এত সময় পার হয়ে আমরা আজ আধুনিক মানব বিধ্বংসী অস্র নির্মান প্রতিযোগিতা , পরম শক্তিশালী হিসেবে প্রতিষ্ঠা ইত্যাদি অসম দৌড় ঝাপ সমাজ জীবনের কাল হিসেবে দাঁড়িয়েছে । আমরা সবাই আজ শিখছি ও অনুকরন করছি অসম প্রতিযোগিতা ও অর্থ উপার্জন যা করতে গিয়ে নীতি বর্হিভুত কর্মকান্ড হয়ে উঠছে সহজ অবলম্বন । কি সমাজ , কি পরিবার , কি প্রতিষ্ঠান , কি ব্যক্তি , লক্ষ একটি উপরের তলা উঠা , সে কি ষ্টেপ বাই ষ্টেপ নাকি লাফ দিয়ে তা কখনও ভাবতে চাইনি । আমরা সব বলয়ে থাকতে চাই শক্তিধর , সমাজপতি, বাহাদুর , সাধারন মানুষের কাতার ছেরে অনেক লম্বা/উঁচু হাতের অধিকারী । কিন্তু সভ্য রাষ্ট্র এসব উঁচু নীচু সৃষ্টির পক্ষে নয় । এসব সৃষ্টি করেছে ব্যবসায়ী সুলভ মনোভাব যেমন মুক্ত অর্থনীতি , কালো অর্থ উপার্জন , দুর্নীতি আর শেষ সংযোজন অপরাজনীতি । পুজি বিহীন ব্যবসা করার সুযোগ নিতে হলে প্রক্রিয়ার মধ্যে সংযুক্ত হতে হবে । আমরা ঢাকা বিশ্বিবিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের রাজনীতি করেছি , আমি একটি বিভাগের ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলাম তাও কেমন সময় , বঙ্গবন্ধু হত্যার পরবর্তী দু:সময়গুলোতে , অর্থ উপার্জন চিন্তা ও করা যায়নি । এসব আত্মপ্রচারে না গিয়ে যা বলতে চাই , ছাত্র রাজনীতি ছিল পডাশুনার পাশাপাশি কিছু আদর্শিক শিক্ষার সুতিকাগার। অন্যায়ের প্রতিবাদ শিখা , আন্দোলন বুঝা , বক্তব্য বুঝা ও বাচনভঙ্গী শিখা , ছাত্রদের উদ্ভুত সমস্যা নিয়ে কথা বলা , সাংগঠনিক আচরন শিখা ও আদর্শিক নেতাদের অনুকরন করা ইত্যাদি ছাত্র রাজনীতির মাধ্যমে রপ্ত করা সহজ ব্যবস্তা বৈকি । কিন্তু না , ৭৫ পরবর্তী প্রেক্ষাপট ও সামরিক শাসকদের রাজনীতি শুরু ছাত্র রাজনীতির কফিনে শেষ পেরেগ পুতে দিল । এই অমানিশার গ্যারাটোপে আজ ও ধুকছে ছাত্র রাজনীতি এমনকি জাতীয় রাজনীতি ।মরহুম প্রেসিড্ন্ট জিয়া বলে গিয়েছিলেন – I will make politics difficult for the politicians and money is no problem , এই দুই বাক্যের বিশ্লেষন ও মর্মবানীর জের ও খেসারত আর কত কাল বইতে হবে জানিনা ।
সহজে রাজনীতিতে ইন /আউট এসব উক্তির ফসল । আমি কোন রাজনীতি বন্ধের পক্ষে নই যদি তা কল্যানমুলক হয় , বরং সুষ্ঠ রাজনীতি চর্চার পরিবেশ বিকাশ চাই ও অবশ্যই অপরাজনীতি রুখে দিতে হবে শুধু আগত প্রজন্মের কথা ভেবে । যেখানে আপনার আমার , আমাদের সকলের সন্তান সন্ততি থাকবে একটি নিরাপদ সমাজ বেষ্টনীর মধ্যে । নিজ স্বার্থেই এহেন কাম্য হওয়া উচিত । কবির ভাষার সমস্বরে বলব , ইতিহাসের পাতা থেকে কলঙ্কীত পৃষ্ঠাগুলো রেখে, চলে আসি কানাডার মিছিলে শ্লোগান শুনাতে , মানুষের জয় হউক , অসত্যের পরাজয়ে খুশী হউক বিশ্বের বিবেক , পলাতক শান্তি যেন ফিরে আসে বাংলার প্রতি ঘরে ঘরে । জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু।
লেখক বাংলাদেশ স্বাধীনতা যুদ্ধে একজন সম্মখ যোদ্ধা