নেত্রকোণায় চোরাচালানের তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে চোরাকারবারিদের মটর সাইকেলের ধাক্কায় এক নারী সাংবাদিক নিহত অপর দুই জন আহত
চোরাচালানীর মাধ্যমে আনা ভারতীয় চিনির তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে চোরাকারবারিদের মোটর সাইকেলের ধাক্কায় মোছাঃ সাহারা (৩০) নামে এক নারী সাংবাদিক নিহত এবং অপর দুইজন আহত হয়েছে।
বুধবার ভোর রাতে সদর উপজেলার রাজুর বাজার এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
নিহত সাহারা ঢাকার ডেমরার পশ্চিম বক্স সারুলিয়া এলাকার তাহের আলীর মেয়ে এবং তিনি আলোর জগত পত্রিকার স্টাফ ফটো রিপোর্টার হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
আহতরা হচ্ছে- জেলার বারহাট্টা উপজেলার কাশতলা গ্রামের আব্দুল মতিনের স্ত্রী ফেরদৌসী আক্তার (৪২) এবং মটর সাইকেল চালক দশধার এলাকার আবু সেমার ছেলে জনি খান (২২)।
আহত ফেরদৌসী আলোর জগত পত্রিকায় রিপোর্টার হিসেবে কাজ করতো।
মোটর সাইকেল চালক ও হতাহতের স্বজনরা জানায়, নেত্রকোণার ভারতীয় সীমান্ত দিয়ে প্রতিদিন শত শত বস্তা চিনি চোরাচালান হয়ে আসছে, এ ধরণের সংবাদের ভিত্তিতে সাহারা ও ফেরদৌসী বুধবার ভোর রাত সাড়ে তিনটার দিকে দশধার ভাড়া বাসা থেকে ড্রাইভারকে নিয়ে তথ্য সংগ্রহ করতে বের হয়। পরে সদর উপজেলার ঠাকুরাকোনা এলাকায় ট্রাক থামিয়ে তথ্য সংগ্রহের সময় ট্রাক চালকসহ চোরাই চিনির মালিকদের সাথে তাদের বাকবিতণ্ডা হয়।
চোরাকারবারীরা ট্রাক চালককে তাদের উপর দিয়েই ট্রাক চালানোর নির্দেশ দিলে তারা ট্রাকের সামনে থেকে সরে দাড়ায়। এ সময় ট্রাকটি দ্রুত নেত্রকোণার দিকে চলে যাওয়ার পথে মোটর সাইকেল চালক তাদের পেছনে পেছনে ধাওয়া করে। রাজুর বাজার এলাকায় ট্রাকটি পৌছলে ট্রাকের পেছনে আসা চোরাকারবারীদের একটি মোটর সাইকেল সাংবাদিক পরিচয় দান কারী মোটর সাইকেলটিকে ধাক্কা দেয়। এতে তারা সড়কে ছিটকে পড়ে মারাত্মক আহত হয়।
স্থানীয়রা দ্রুত তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক সাহারাকে মৃত ঘোষনা করেন।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ডিএসবি মোঃ লুৎফর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, ঘটনার পর ট্রাকটি পালিয়ে যায়। ভাড়াটিয়া মোটর সাইকেল চালক আহত জনিকে থানা হেফাজতে রাখা হয়েছে এবং এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
উল্লেখ্য যে চলতি বছরের ২৮শে আগস্ট রাতে দশধার এলাকায় চোরাইপথে আনা ভারতীয় চিনিভর্তী ট্রাক আটক করে এলাকাবাসী। পরে সাংবাদিকরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছালে প্রত্যক্ষদর্শী ও চোরাচালানকৃত চিনির মালিক এবং চিনি ভর্তী ট্রাক ড্রাইভার জানায় দীর্ঘদিন ধরে প্রশাসন ও সাংবাদিকদের ম্যানেজ করেই তারা ভারতীয় চিনি সরবরাহ করছেন।
এঘটনার পর চোরাচালানের সাথে অসাধু সাংবাদিকদের জড়িত থাকার বিভিন্ন অডিও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে জেলায় ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়।
এছাড়া স্থানীয়রা জানায় বিজিবি ও স্হানীয় প্রশাসনের উদাসীনতায় নেত্রকোণার সীমান্ত এলাকায় প্রতিনিয়তই বেড়ে চলছে চোরাচালান আর চোরাচালানে জড়িয়ে নানা অপরাধ মুলক কর্মকান্ড ঘটাচ্ছে যুব সমাজ।