ঝিনাইদহের কালিগঞ্জে আবাসিক এলাকায় চলছে রমরমা ন্যাপকিন ও কেমিক্যাল ব্যবসা।
সুমন হোসেনঃঝিনাইদহ
ঝিনাইদহ কালীগঞ্জ উপজেলার পৌর এলাকার ৩ নং ওয়ার্ড ফয়লা গ্রামের মল্লিকপুর সড়ক টু কোলা বাজার সড়কের মধ্যকার সংযোগ সড়কের পাশে আবাসিক এলাকায় একতলা ভবনে প্রধান ফটক আটকে গড়ে তোলা হয়েছে স্যানিটারি ন্যাপকিন তৈরির কারখানা। ঐ বাড়ির ফ্রীজে রেখে বিক্রি করা হচ্ছে বিভিন্ন কেমিক্যাল পণ্য। আর এভাবেই নিম্নমানের মেটেরিয়াল ব্যবহার করে নিয়ম নীতি না মেনে সার্জিক্যাল পণ্য এবং কেমিক্যাল নানা পণ্য নিয়ম বহির্ভূতভাবে স্থানীয় ও আশপাশের জেলার বাজারগুলোতে বিক্রি করছেন জামির হোসেন নামের এক ব্যাবসায়ী ।দীর্ঘদিন ধরে তিনি আবাসিক এলাকায় অত্যন্ত সুকৌশলে এই ব্যবসাটি পরিচালনা করে যাচ্ছেন। বাসাবাড়ির এক ঘরে রেটিনা সার্জিক্যাল নামে অত্যন্ত নিম্নমানের ও অস্বাস্থ্যকর তুলা ব্যবহার করে তিনি স্যানিটারি ন্যাপকিন তৈরি করছেন। আশপাশের বেশ কিছু মহিলারা দৈনিক মজুরিতে তার কারখানাতে ন্যাপকিন তৈরির কাজ করে থাকেন। প্রতিটি ১০ পিস প্যাডের প্যাকেট তিনি পাইকারি ২২ টাকা থেকে ২৬ টাকা দরে কোটচাঁদপুর, মহেশপুর, খালিশপুর জীবননগর, যশোর, খাজুরা, চৌগাছাসহ বিভিন্ন গ্রামগঞ্জের বাজারে বিক্রি করে থাকেন। একই সাথে বিভিন্ন ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার এবং ফার্মেসিতে কেমিক্যাল ও ইনজেকশন আইটেম বিক্রি করে থাকেন। আর এগুলো তিনি নিজ বাড়িতে থাকা ফ্রীজে সংরক্ষণ করেন।এসবের মধ্যে হাইড্রোজেন মেন্থল, কেলামিন, ইউজল,ফরমালিন,প্যাথেডিন,পটাশ, বরিক এসিড,ইনো,ব্ল্যাড ব্যাগ, ক্যাথিটার,ইউরিন ব্যাগ এবং গ্লাফস বিক্রি করে থাকেন। স্যানিটারি ন্যাপকিন উৎপাদন, কেমিক্যাল ও ইনজেকশন আইটেমের বিভিন্ন প্রকার পণ্য বিপণন এর জন্য যেসব নিয়ম-নীতি মানা এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র থাকার দরকার তার অনেক কিছুই নেই জামির হোসেনের।
সরজমিনে জামির হোসেনের বাড়ি যেয়ে দেখা যায়, বেশ কয়েকজন নারী স্যানেটারি ন্যাপকিন তৈরির কাজ করছেন। কেউ তুলা কাটছেন,কেউ প্যাড বানাচ্ছেন, আবার কেউ প্যাকেট তৈরির কাজ করছেন।এ সময় প্যাড তৈরির কাজে অত্যন্ত নিম্নমানের তুলা ব্যাবহার করতে দেখা যায়।এ ধরনের ব্যাবসা পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় ক্যামিক্যাল লাইসেন্স, ড্রাগ লাইসেন্স, পরিবেশ অধিদপ্তরের সনদ,ফার্মাসিস্ট সনদ, বিএসটিআই সনদ কোন কিছুই তিনি দেখাতে পারেননি এই প্রতিবেদককে।
রেটিনা সার্জিক্যাল এর স্বত্বাধিকারী জামির হোসেন বলেন,আমি ক্ষুদ্র একজন ব্যাবসায়ী।ব্যবসা পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় সবকিছুই আমার রয়েছে।
কালিগঞ্জ পৌরসভার সেক্রেটারি ইন্সপেক্টর আলমগীর কবির বলেন, আমি শুনেছি উনি বাসাবাড়িতে মেয়েদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি সার্জিক্যাল পণ্য সেনেটারী ন্যাপকিন উৎপাদন ও বিপণন করছেন। একই সাথে কেমিক্যাল পণ্য বিক্রি করছেন। অতিসত্তর তার কারখানা পরিদর্শন করা হবে। আর নিয়মের ব্যত্যয় ঘটলে নেওয়া হবে ব্যবস্থা।
এ ব্যাপারে কালীগঞ্জ উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) হাবিবুল্লাহ হাবিব জানান, নিয়ম নীতি মেনে উৎপাদন ও বিপণন কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে। অন্যথায় ওই ব্যবসায়ীর প্রতিষ্ঠানে অভিযান পরিচালিত হবে।