রোজা হল ধনী গরিবের পার্থক্য নির্ণয়ের মাপকাঠি
মু.আমিনুল ইসলাম তারেক লেখক ও কলামিস্ট:
আল্লাহ রাব্বুল আলামিন রোজার মাস দিয়েছেন রহমত,বরকত মাগফেরাত,বান্দার জন্য নাজাত কে উছিলা করে এই মাসটি দিয়েছেন।এই রোজা হল সত্যি ধনী-গরীবের পার্থক্য নির্ণয়ের মাপকাঠি, কেননা একজন ধনাঢ্য ব্যক্তি কখনো বুঝতে পারবে না গরিবের দুঃখ কষ্ট ক্ষুধার যন্ত্রনা! তাই'তো আল্লাহ রাব্বুল আলামীন যিনি পরম করুনাময় অতি দয়ালু যিনি আমাদের কে অতি মায়া আদর ভালোবাসা দিয়ে সৃষ্টি করেছেন সেই স্রষ্টা আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আমাদেরকে বছরে একটি রমজান দিয়েছেন। মাসটি হলো মাহে রামাদান!যে মাসে আমরা সারাদিন অভুক্ত থেকে সন্ধ্যায় পানাহার করি! এতে করে পরিষ্কার বুঝা যায়, আমরা যে সারাদিন সমস্ত ধরনের সংযম করলাম,আমরা এখান থেকে কি শিখতে পেরেছি, আমরা সারাদিন অভুক্ত থাকার ফলে এটাই শিখতে পেরেছি, একজন অভুক্ত দরিদ্র অসহায় ব্যক্তি সারাদিন না খেয়ে থাকলে কেমন বোধ করে, সেই জন্য মাহে রমাদান রাব্বুল আলামীন দিয়েছেন, দরিদ্রদের কষ্ট বুঝার জন্য উপলব্ধি করার জন্য ধনাঢ্য ব্যক্তিদের কে! তাই'তো আল্লাহ রাব্বুল আলামীন কুরআনুল কারীমে বলেন আল্লাহ তায়ালা সুরা বাকারার (১৮৩ নম্বর) আয়াতে বলেছেন, হে মুমিনগণ! তোমাদের উপর রোজার ফরজ করা হয়েছে, যেমন ভাবে তোমাদের পূর্ববর্তী গনের উপর রোজা ফরজ করা হয়েছিল, যাতে করে তোমরা তাকওয়া বা আল্লাহ ভীরুতা অবলম্বন করতে পারো।
সুরা বাকারার( ১৮৪ নম্বর) আয়াতে আল্লাহতায়ালা বলেছেন, আর যারা রোজা রাখার সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও রোজা রাখতে চায় না (যারা রোজা রাখতে অক্ষম), তারা এর পরিবর্তে একজন মিসকিনকে খাদ্য দান করবে। পরন্তু যে ব্যক্তি খুশির সঙ্গে সৎকর্ম করে, তা তার জন্য কল্যাণকর হয়। আর যদি তোমরা রোজা রাখ, তাহলে তা তোমাদের জন্য বিশেষ কল্যাণের; যদি তোমরা উপলব্ধি করতে পারো।
কোরআনুল কারিমে সুরা বাকারার (১৮৫) নম্বর আয়াতে আল্লাহতায়ালা বলেছেন, রমজান মাস। এ মাস পেলেই মুমিন মুসলমানের জন্য রোজা রাখা আল্লাহর নির্ধারিত বিধান। সুতরাং তোমাদের মধ্যে যারা এ মাস পাবে তারা যেন এ মাসে সিয়াম পালন করে এবং কেউ অসুস্থ থাকলে কিংবা সফরে থাকলে অন্য সময় এ সংখ্যা পূরণ করে। এ মাসটি শুধু এজন্যই আসেনি, বান্দার জন্য রহমত মাগফেরাত নাজাদের উসিলা করে এসেছে, ধনী গরিবের পার্থক্য দূর করার জন্য এসেছে, ইনসাফ প্রতিষ্ঠার জন্য এসেছে, ইহকালীন কল্যাণ পরকালীন মুক্তির জন্য এসেছে! সমস্ত ধরনের পানাহার সংযম থেকে নিজেকে নিরাপত্তা রাখার জন্য রামাদান এসেছে, আমার দ্বারা যেন দর্শন ছিনতাই খুন রাহাজানি বর্বরতা লুট অন্যের হক নষ্ট না করা, মাজলুম দেরকে অত্যাচার না করা হয় সে শিক্ষাটাই দিয়ে যায় পবিত্র মাহে রামাদান! সহমর্মিতা মানুষকে অসহায় ও গরিবদের পাশে দাঁড়িয়ে সহমর্মিতা জ্ঞাপন করে পারস্পরিক সৌহার্দ্য ও সম্পর্ক সুদৃঢ় করার শিক্ষা দেয়। এগুলো ছাড়াও রামাদান বান্দার জন্য পরনিন্দা পরিহার, পাপমুক্ত জীবনযাপন, দোয়া কবুলের ক্ষেত্র, অহেতুক কাজ বর্জন, নিষ্ঠাপূর্ণ ইবাদ গোপন ইবাদত, গোপনে নিভৃতে অসহায় মাজদুম ব্যক্তিদের পাশে দাঁড়ানো, সর্ব অবস্থায় চলাফেরায় ফিকিরের সাথে বা মনে মনে আল্লার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা। পাপমুক্ত জীবন ইফতারের পূর্ব মুহূর্তে এবং শেষ রাতে ইস্তেগফারের মাধ্যমে পেছনের গোনাহ থেকে ক্ষমা চাওয়া, আর সামনের এগারো মাস পাপমুক্ত থাকার অনুশীলন এবং আল্লাহর কাছে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হওয়া। হাদিসে এসেছে, হজরত জাবের (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, আল্লাহ তায়ালা প্রত্যহ ইফতারের সময় অসংখ্য ব্যক্তিকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দিয়ে থাকেন। (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ১৬৪৩) সর্বোপরি মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন ইজ্জতের কাছে এটাই চাওয়া মহান রবের রহমতে বেষ্টিত করে ইহকালীন কল্যাণ এবং পরকালীন মুক্তির পাথেয় করে দেওয়া ।