উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) মোবাইল নম্বর ক্লোন করে টাকা আদায়ের অপরাধে এক যুবককে তিন বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে দুই লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরো ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন আদালত। পৃথক দুইটি ধারায় অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় রোববার (১৩ আগস্ট) দুপুরে রাজশাহীর সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক মো. জিয়াউর রহমান এই রায় ঘোষণা করেন। এছাড়া একই মামলায় অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় আরো দুইজনকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়। দণ্ডপ্রাপ্ত যুবকের নাম রাকিবুল ইসলাম (২২)। তিনি রংপুরের লালমনিরহাট জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার মহিষামুড়ি গ্রামের বাসিন্দা। রাজশাহীর সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইসমত আরা বেগম এসব তথ্য নিশ্চিত করে গণমাধ্যমকে বলেন, ২০২২ সালের জুলাইয়ে মামলার বাদী সামছুল ইসলামকে একজন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) মোবাইল নম্বর ক্লোন করে ফোন করেন রাকিবুল ইসলাম। তিনি এলাকায় বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি প্রকল্প পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে ইউএনও সেজে তার কাছ থেকে ২৮ হাজার টাকা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে হাতিয়ে নেন। সামছুল ইসলামকে এর কিছু দিন পর আবারো ফোন করেন রাকিবুল ইসলাম। তিনি এবার জানান, তার সঙ্গে আরো একজন সাবেক কাউন্সিলরকে উল্লেখিত এ প্রকল্পটি বাস্তবায়নের কাজ করতে দিতে চান। এতে সামছুলের সন্দেহ হয় যে, তিনি ফাঁদে পড়েছেন। এরপর সরাসরি তিনি ইউএনওর কাছে যান। সেখানে গিয়ে প্রতারিত হওয়ার বিষয়টি বুঝতে পারেন। পরে তিনি বাদী হয়ে অজ্ঞাত পরিচয় ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে রাজশাহীর দুর্গাপুর থানায় সাইবার সিকিউরিটি আইনে মামলা করেন। পরে দুর্গাপুর থানা পুলিশ এ মামলা তদন্ত করে তিনজনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দেয়। তবে মামলা বিচার চলাকালে সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় আদালত অপর দুই আসামিকে খালাস দেন এবং অভিযুক্ত রাকিবুল ইসলামকে কারাদণ্ড দেন। অ্যাডভোকেট ইসমত আরা জানান, পৃথক দুইটি ধারায় রাকিবুলকে তিন বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে একটি ধারায় দুই বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ১ লাখ টাকা জরিমানা এবং আরেকটি ধারায় এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। অনাদায়ে আরো ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়। দুইটি ধারায় সাজা দেওয়া এ কারাদণ্ড একটির মেয়াদ শেষের পর অন্যটি কার্যকর হবে বলেও রায়ে উল্লেখ করা হয়।