শহীদুল ইসলাম রুবেল,নেত্রকোনা জেলা প্রতিনিধি
নেত্রকোনা জেলার মদন উপজেলায় (২৯ মে ) বুধবার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ঘোড়া প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী মোঃ ইফতেখারুল আলম খান চৌধুরীকে জয়ী করতে নেতা কর্মীদের নির্দেশনা দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন সাধারণ মানুষ নেত্রকোনা-৪ (মোহনগঞ্জ,খালিয়াজুরী, মদন) আসনের সংসদ সদস্য সাজ্জাদুল হাসান (এমপি)। তিনি দলীয় নেতা কর্মীদের এমন নির্দেশনা দিয়েছেন বলে প্রচারণা চালাচ্ছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতা কর্মী, সাধারণ জনগণ এবং পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থীর কর্মীরা। ভোটারদের প্রভাবিত করতে এমপির নাম নিয়ে প্রকাশ্যেই এমন প্রচারণা চালানো হয়েছে নির্বাচনের দিন। নির্বাচনী প্রচারণায় এমপির প্রভাবের কারণে ভোট কেন্দ্রে যেতে অনীহা প্রকাশ করেছেন সাধারণ ভোটাররা। অন্যদিকে বিজিবি সহ আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর ব্যাপক উপস্থিতি জনমনে নানা সংশয় ও ভীতি সৃষ্টি করে বলে অনেকেই জানান ।তবে কোনো প্রার্থীকে জয়ী করতে নির্দেশনা দেয়ার কথা অস্বীকার করছেন এমপির প্রতিনিধিরা।বুধবার (২৯ মে) তৃতীয় ধাপে অনুষ্ঠিত হয় মদন উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। এই নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন ৬ জন প্রার্থী। তাদের মধ্যে রয়েছেন বর্তমান উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ হাবিবুর রহমান (কাপ পিরিচ) তিনি পেয়েছেন ৩৯৩৪ ভোট, উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মোঃ আব্দুল কুদ্দুস (আনারস) প্রতীকে পেয়েছেন ১০২৬৯ ভোট,বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের শিল্প ও বানিজ্য বিষয়ক উপ কমিটির সদস্য মমতাজ হোসেন চৌধুরী ( হেলিকপ্টার) প্রতীকে পেয়েছেন ৯১৬১ ভোট, মোঃ মিজাজুল হক চৌধুরী ( দোয়াত কলম) প্রতীকে পেয়েছেন ৯১২১ ভোট, মোঃ হেলাল উদ্দিন তালুকদার( মোটরসাইকেল) প্রতীকে পেয়েছেন ৬৬২৪ ভোট, মোঃ ইফতেখারুল আলম খান চৌধুরী( ঘোড়া) প্রতীকে পেয়েছেন ১৮৬৭৭ ভোট। উপজেলা নির্বাচনে দলীয় এমপি-মন্ত্রীরা কোনো প্রার্থীর পক্ষে প্রভাব বিস্তার করতে পারবেনা বলে আওয়ামী দলীয়ভাবে নিষেধাজ্ঞা থাকার পরও তিনি তা অমান্য করেছেন। কিন্তু দলের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মদন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মোঃ ইফতেখারুল আলম খান চৌধুরীর (ঘোড়া)কে নির্বাচিত করতে নির্দেশনা দিয়েছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য সাজ্জাদুল হাসান এমপি। সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে,এমপি সাজ্জাদুল হাসানের নেতৃত্বে ঘোড়া মার্কার জন্য কাজ করেছেন মদন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদকের নেতৃত্বে নেতা কর্মী সহ, বিভিন্ন ইউপি চেয়ারম্যান ও অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।ঝাওলা গ্রামের সবুজ বলেন, জননেতা সাজ্জাদুল হাসান এমপির নেতৃত্বে ঘোড়া মার্কার জন্য আমরা কাজ করেছি। এমপি মহোদয়ের নির্দেশ পেয়ে সকলের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করে কথা বলেছি। এসময় আরো বিভিন্ন কথা বলে তিনি ঘোড়া মার্কার জন্য। অপরদিকে বালালী বাগমারা গ্রামের বাবুল বলেন, দলীয় এমপি যাকে সমর্থন করেছেন আমরা মনে করে নেবো প্রধানমন্ত্রী তাকে সমর্থন করেছেন। আমাদের এমপি সাহেব যাকে সাপোর্ট করেছেন (ঘোড়া) আমরা এই অল্প সময়ের মধ্যে কাজ করে ঘোড়া প্রতীককে নির্বাচিত করেছি।এছাড়াও ঘোড়া প্রতীকের কর্মী সমর্থকরা কেউ কেউ তাদের ফেইসবুকে ঘোড়া মার্কাকে জেতাতে এমপির চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত লিখেও পোষ্ট করছেন। এক প্রার্থীর পক্ষে এমপির সমর্থনের বিষয়ে জানতে চাইলে মদন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হান্নান শামীম ফোন রিসিভ করেননি। এদিকে ঘোড়া প্রতীক ছাড়া অন্য প্রতীকের প্রার্থীরা এমপির বিভিন্ন সময়ের কথা তুলে ধরে দুঃখ প্রকাশ করে কিছু বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন। এদিকে এমপির নির্দেশনা ও চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত ইত্যাদি বলে এক প্রার্থীর পক্ষে প্রচার চালানোর কারণে নির্বাচনে এমপির প্রভাব পড়ছে বলে অনেক ভোটার ভোট দিতে পারা না পারা নিয়েও সংশয় প্রকাশ করেছেন। বিভিন্ন এলাকার অনেক ভোটার ভোট কেন্দ্রে যেতেও অনীহা প্রকাশ করেছেন ভোটের দিন। আবার অনেকেই বলছেন ঘোড়া প্রতীকের প্রার্থী মূলতঃ ফেইল করেছেন, কিন্তু এমপির কৌশলগত কারণে তিনি পাস করেছেন।