শ্রীপুরে ছাত্রীকে কু-প্রস্তাব দিয়ে চিঠি কু-কীর্তি ঢাকতে শিক্ষকের সংবাদ সম্মেলন
মুজাহিদ শেখ,শ্রীপুর প্রতিনিধি
মাগুরা শ্রীপুরে এক প্রাইভেট ছাত্রীকে কু-প্রস্তাব দিয়ে চিঠি পাঠিয়েছে এক লম্পট শিক্ষক। এতে প্রতিবাদ করায় ছাত্রীর বাবা পরিমল মন্ডলকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করেছেন সেই লম্পট শিক্ষক প্রভাষ রঞ্জন দেবজ্যোতি। পরবর্তীতে ভিকটিমের পরিবার থানায় লিখিত অভিযোগ দিলেও প্রশাসনের কোন পদক্ষেপ না দেখে পরিবারটি আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন বলে জানা গেছে। ভিকটিমের পরিবারের দাবি বিভিন্ন মহলের সুপারেশে লম্পট প্রভাষের বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপও নেয়া হয়নি। এদিকে নিজের কু-কীর্তি ঢাকতে এক সপ্তাহ পরে শ্রীপুর প্রেসক্লাবে কর্মরত সাংবাদিকদের একাংশকে নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন লম্পট শিক্ষক প্রভাষ রঞ্জন দেবজ্যোতি।
অন্যদিকে শিক্ষক প্রভাষ রঞ্জন দেবজ্যোতির আঘাতে পরিমল মন্ডল গুরুতর আহত অবস্থায় ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আছেন।
সরেজমিনে ও অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গত ১৭ মে শ্রীপুর উপজেলার দারিয়াপুর ইউনিয়নের চৌগাছি গ্রামের সত্য রঞ্জনের ছেলে গোয়ালদাহ্ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এর প্রধান শিক্ষক প্রভাষ রঞ্জন দেবজ্যোতি শিক্ষাকতার পাশাপাশি নিজ বাড়িতে প্রাইভেট পড়ান। একই গ্রামের পরিমল মন্ডলের মেয়ে ঋতু তার কাছে প্রাইভেট পড়তেন। তার প্রাইভেট পড়া ভালোমতোই চলছিল। হঠাৎ ঋতু একদিন লক্ষ্য করেন তার প্রাইভেটের খাতার মধ্যে একটি চিঠি। তাকে উদ্দেশ্য করে তার প্রাইভেট শিক্ষক প্রভাষ রঞ্জন দেবজ্যোতি তাকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়েছেন। একাধিকবার এ ধনের চিঠি পাওয়ায় বিষয়টি ঋতু তার মাকে জানানোর পরে তার পরিবার থেকে প্রভাষ রঞ্জন এর কাছে প্রাইভেট পড়তে যেতে না করেন। ঋতু কিছুদিন তার কাছে প্রাইভেট পড়তে না গেলে প্রভাষ নিজেই তাদের বাড়িতে গিয়ে বিষয়টি নিয়ে তার মা বাবার কাছে ক্ষমা চান। এবং ওয়াদা করেন যে এর পুনরাবৃত্তি আর হবে না। পরিমলের মেয়ে ঋতু তার কাছে আবারও প্রাইভেট পরা শুরু করলে শিক্ষক সুভাষ রঞ্জন দেবজ্যোতি আবারও কু-প্রস্তাব দিয়ে চিঠি দেন। তার প্রস্তাবে রাজি না হলে তিনি ঋতুকে বিভিন্ন রকম হুমকি দেন এবং ভয়-ভীতি দেখান। এই ঘটনার সূত্র ধরে গত শুক্রবার তাদের বাড়ির পাশে একটি অনুষ্ঠানে পরিমল মন্ডল ও প্রভাষ রঞ্জন দেবজ্যোতির মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে প্রভাষ রঞ্জনের হাতে থাকা ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করলে পরিমলের চোঁখ ও নাকের উপর গুরুতর জখম হয়। তার চিৎকারে স্থানীয় লোকজন ও পরিবারের সদস্যরা তাকে সেখান থেকে উদ্ধার করে দ্রুত শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে চিকিৎসা শেষে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
সেখানে দু-দিন চিকিৎসা দেওয়ার পরে পরিমলের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে রেফার করা হয়।
এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক প্রভাষ রঞ্জন দেবজ্যোতি সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন মেয়েটির পরিবার আমার সাথে তার বিবাহ দেয়ার জন্য প্রস্তাব দিয়েছিলেন। তিনি পরিমলের শরীরে আঘাতের বিষয়টি এবং তার ছাত্রীকে চিঠির দেওয়ার বিষয়টিও স্বীকার করেন।