ওসমানীনগরে ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে কলেজ ছাত্রীর থানায় অভিযোগ
আতাউর রহমান কাওছার, ওসমানীনগর(সিলেট)প্রতিনিধি:
সিলেটের ওসমানীনগরে তাজপুর ডিগ্রী কলেজ ছাত্রলীগের যুগ্ম আহবায়ক নুরুল গজনভীসহ তার সঙ্গীদের বিরুদ্ধে শ্লীতাহানীর অভিযোগ করেছেন গোয়ালাবাজার সরকারি মহিলা কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী সাদিয়া বেগম মৌ। গত শুক্রবার বিকেলে তিনি ৬জনের নাম উল্লেখ করে ওসমানীনগর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
মৌ তার লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেন, অভিযুক্তরা কলেজের যাওয়া আসার পথে তাকে বিরক্ত করে আসছিল। একপর্যায়ে তার কাছে মোবাইল নম্বর চাইলে সে নাম্বার দিতে অস্বীকৃতি জানায়। গত ১৫ মে গোয়ালাবাজারস্থ একটি কৌচিং সেন্টার হতে কোচিং শেষে সিএনজি চালিত অটোরিকশাযোগেবাড়ি ফেরার পথে দক্ষিণ গোয়ালাবাজার এলাকায় তাদের বহনকারী অটোরিকশা থামিয়ে অভিযুক্ত সৈয়দ মামুন তার কাছে মোবাইল নাম্বার চায়। নাম্বার না দেয়ায় তার হিজাব টেনে এবং হাতে টানাটানি করে শ্লীতাহানী করে। এসময় নুরুল গজনভী বলে তার প্রেম প্রস্তাবে রাজি না হলে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে আসবে। ঘটনার সময় তার চিৎকার আশপাশের লোকজন ছুটে আসলে অভিযুক্তরা হুমকী দিয়ে চলে যায়। বিয়ষটি তার সঙ্গীয় বান্ধবির ভাই রবীন মিয়াকে জানালে সে অভিযুক্তদের এব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করলে অভিযুক্তরা তাকেও মারপিট করে। বিষয়টি প্রথমে স্থানীয় চেয়ারম্যান ও মেম্বারকে অবহিত করেছেন বলেও অভিযোগে উল্লেখ করেন তিনি।
এদিকে গত ১৮ মে রাতে হামলার শিকার হয়ে আহত হয়েছেন ছাত্রলীগ নেতা নুরুল গজনভী। এঘটনায় গত শুক্রবার ওসমানীনগর থানায় একটি মামলা দায়ের করলে পুলিশ এজাহারভুক্ত নাজমুল আহমদকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে প্রেরণ করেছে বলে জানা গেছে। নুরুল গজনভী জানান, ১৮ মে দিনে রবিনসহ কয়েকজন জুনিয়র ছেলেকে মারপিট করা হয়। জুনিয়ররা বিষয়টি তাকে জানালে ওই দিন রাতের বেলা জুনিয়রদের মারপিটের কারণ জানতে চায়। পরবর্তী সময়ে অস্ত্র নিয়ে তার ওপর হামলা চালিয়ে তাকে গুরুতর আহত করা হয়।
সাদিয়া বেগম মৌ সাংবাদিকদের বলেন, অভিযুক্তরা আমাকে কলেজে যাওয়া-আসার পথে প্রায়ই ডিস্ট্রাব করত। আমি কোচিং শেষে বাড়ি ফেরার পথে মামুনসহ নুরুলের সঙ্গীরা যাত্রীবেশে সিএনজিতে উঠে পড়ে। গোয়ালাবাজারের সাদিমহল সেন্টারের সামনে গিয়ে সিএনজি থামিয়ে আমার কাছে মোবাইল নাম্বার চায়। আমি নাম্বার না দিলে আমার সাথে খাপার আচরণ করে। এসময় মামুন নুরুলকে ফোন করে জানায় নাম্বার দিচ্ছিনা বলে। সে তখন ফোনে আমাকে বাড়ি থেকে তুলে আনার হুমকী দেয়। আমাকে ডিস্ট্রাব করার প্রতিবাদ করে আমার বান্ধবির ভাইসহ কয়েকজন এখন মামলার আসামী হয়েছে।
কলেজ ছাত্রলীগের যুগ্ম আহবায়ক নুরুল গজনবী বলেন, বিনা কারণে জুনিয়র কয়েকজনকে মারপিট করার কারণ জানতে চাইলে রবিনসহ বেশ কয়েকজন অস্ত্র নিয়ে আমার ওপর হামলা চালায়। এসময় ধারালো অস্ত্র দিয়ে আমার ঘাড়ে আঘাত করার চেষ্ঠা করলে আমি হাত দিয়ে প্রতিহত করতে গিয়ে আমার দুই হাতের অনেক অংশ কেটে যায়। শেষ পর্যন্ত আমি দৌড়ে অন্য জায়গায় আশ্রয় নিয়ে প্রাণে রক্ষা পাই। আমার দুই হাতে অনেক সেলাই রয়েছে। আমি ন্যায় বিচারের জন্য মামলা দায়েরের পর ও মামলা থেকে রেহাই পাইনি আমি, আমার বিরুদ্ধে মিথ্যে সাজানো অভিযোগ আনা হচ্ছে যা সত্যি নয়।
ওসমানীনগর থানার ওসি রাশেদুল হক বলেন, একজন কলেজ ছাত্রী লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগটি তদন্ত করে সত্যতা পাওয়া গেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।